বিশেষ প্রতিনিধিঃ রাজধানী ঢাকার প্রধান শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ার জামগড়া রূপায়ন ১নং গেইট, রবিউল সরদারের বাড়ির ভাড়াটিয়া, পাবনার সাঁথিয়ার মোঃ আবু হানিফ ওরফে নাজমুল এর মেয়ে মাহফুজা আক্তার নাজমা (১৬), গণধর্ষণ
করিয়া হত্যা। ধর্ষণ ও হত্যার কারণ কি? এবং কি অপরাধ ছিলো এই নাবালিকা মেয়ে নাজমা’র অকালে মৃত্যু হলো। অসহায় গরীব ঘরের মেয়েটির ধর্ষণকারীদের সঠিক বিচার হবেতো?।
গণধর্ষণ করিয়া হত্যা ও সহায়তা করার অপরাধে আশুলিয়া থানায় মামলা করার পর মোঃ আব্দুর রহিম (২৬), ১নং আসামীকে জনতা কর্তৃক আটক করে থানা পুলিশে সোপর্দ করা হয়। পাবনা জেলার সাঁথিয়া থানার পিপুলিয়া গ্রামের আব্দুস সাত্তার এর ছেলে রহিম। নিহত নাজমার সম্পর্কে রহিম চাচা হইতো। এরপর এ মামলার ২নং আসামী
ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ থানার বিপিনগর গ্রামের আব্দুল লতিফ এর ছেলে মোঃ রিপন (৩৫), সাভারের বিরুলিয়া এলাকার একটি বাগান থেকে তার রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করে সাভার মডেল থানা পুলিশ। মামলার ৩নং আসামীকে আটক করতে
র্যাব-১ এর একটি বিশেষ দল অভিযান চালায়ঃ র্যাব-১ এর বিশেষ একটি দল ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে মোবাইল টেকিংয়ের মাধ্যমে ফেনী জেলার সোনাগাজী আকিলপুরের মোঃ ইব্রাহিম খলিল শিপন (৩০), কে আটক করে আশুলিয়া
থানায় সোপর্দ করেন। উক্ত ব্যাপারে ৫জানুয়ারি ২০১৯ইং ভুক্তভোগী মাহফুজা আক্তার নাজমা (১৬), ধর্ষণের শিকার হওয়ার পর (৬ জানুয়ারি
২০১৮ইং) নিজে বাদী হয়ে প্রথমে আশুলিয়া থানায় মামলা করার জন্য একটি অভিযোগ দায়ের করেন। বিবরণঃ নাজমা জানায়, জামগড়া রূপায়ন ১নং গেইট, রবিউল সরদারের বাড়ীতে মা বাবাসহ পরিবারের সবাইকে নিয়ে ভাড়া থেকে
জামগড়া ইয়ার্গী বাংলাদেশ লিঃ ফ্যাক্টরীতে সুইং অপরেটার হিসাবে চাকুরি করতেন। নাজমার সম্পর্কে চাচা রহিম, রিপন ও শিপনসহ তারা বিভিন্ন পদে এক সাথে কাজ করতেন একই পোশাক কারখানায়। নাজমা জানায়, প্রতিদিনের ন্যায় গত ০৫/০১/২০১৯ইং তারিখ সন্ধ্যা ৭টায় অফিস ছুটির পর তার চাচা আব্দুর রহিম (২৬), সহ আমি পায়ে হাটিয়া বাসায় যাওয়ার পথে আমাদের ফ্যাক্টরী প্রায় ২০০গজ দুরে গলির রাস্তায় পৌছার পর অপরিচিত
আরও ২জন বিবাদীর সহায়তায় ১নং বিবাদী রিপন ও শিপন আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে আমার পরিহিত কাপড় খুলিয়া আমাকে ধর্ষণ করে। নাজমা জানায়, এ ঘটনার সাথে ৫জন জড়িত। এক পর্যায়ে রাত ১২ টার দিকে উক্ত বিবাদী রিপন, শিপনসহ ৫ জন ব্যক্তি নাজমাকে ধর্ষণের পর তাকে বাসায় পৌছাইয়া দিয়ে পালিয়ে যায়। এরপর সকালে থানায় গিয়ে মামলা করার জন্য অভিযোগ করলে পুলিশ মামলা না নেওয়ায় আর বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় লোকলজ্জায় নাজমা ফাঁসি
নিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে অনেকেই বলছিলেন। এদিকে ভুক্তভোগী পরিবারের দাবী-নাজমাকে নির্যাতন ও ধর্ষণ করার পর অসুস্থ্য হয়ে স্থানীয় নারী ও শিশু স্বাস্থ্য কেন্দ্র হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়েছে। এ ব্যাপারে আশুলিয়া থানায়
মামলা হয়, মামলা নং ১০/তারিখ, ০৭/০১/২০১৯ইং। ধারা: ৯(৩)/৩০, ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধনী ২০০৩: ধর্ষণ করিয়া হত্যা ও সহায়তা করার অপরাধ। এ ব্যাপারে নাজমার বাবা আবু হানিফ জানান, উক্ত মামলার আসামী রহিম ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী আছে, কিছুদিন আগে আদালত থেকে জামিনে আসছে এ মামলার ৩নং আসামী ইব্রাহিম খলিল শিপন (৩০)। মামলার ৩জন আসামীর তথ্য পাওয়া গেলেও অন্য আরও দুইজন ব্যক্তি জড়িত রয়েছে, তাদেরকে পুলিশ গ্রেফতার করতে পারেনি। তারা হয়ত প্রভাবশালী মহলের কেউ তাই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদেরকে আটক করতে পারছেন না বলে ভুক্তভোগী পরিবারের দাবী। এদিকে নাজমা’র বয়স (১৬), ২ বছর সুইং অপরেটার হিসেবে চাকুরি করেন, কাজ শিখে সুইং অপারেটার হতে আরও এক বছর লাগছে। শিশুশ্রম আইনে পোশাক কারখানায় ১৮ বছরের কম কেউ চাকুরি করতে পারবেন না। এবং রিপনের লাশ সাভারের বিরুলিয়া থেকে উদ্ধার করেছে সাভার মডেল থানা পুলিশ, এ বিষয়টিও রহস্যজনক বলে মনে করেন অনেকেই। তাকে হত্যা করা হয়েছে, না কি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন? উক্ত ঘটনার বিষয়ে গোয়েন্দা সংস্থা আবার তদন্ত করলে হয়ত কেচু খুঁজতে সাপের সন্ধান পাওয়া যেতে পারে। সচেতন মহলের দাবি-
কোনো দোষী ব্যক্তি যেন ছাড় না পায়, আর দোষ না করে কেউ যেন হয়রানির শিকার না হয়। অপরাধী সে যেইহোক তাকে গ্রেফতার করে কঠিনতম সাজা দেওয়ার দাবী জানান সচেতন মহল। উক্ত ব্যাপারে অনেকেই জানান, এ মামলার ৩নং আসামী প্রভাবশালী শিপনকে র্যাব আটক করার পর আশুলিয়া থানা পুলিশে সোপর্দ করা হয়, আশুলিয়া থানা পুলিশ আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠায়, দুই বছর পর শিপনকে আদালত জামিন দিয়েছে, এখন উক্ত মামলার আসামীরা বিভিন্ন কৌশলে মিমাংসার চেষ্টা করছে বলে ভুক্তভোগী পরিবারের দাবী।
