
নিজস্ব প্রতিবেদক, আনোয়ার হোসেন
দীর্ঘ ৭৩ বছর পর বেনাপোলের সাদিপুর চেকপোস্ট থেকে নারায়নপুর পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার হাকর বেতনা নদী পুনঃখনন ও ড্রেজিংয়ের কাজ শুরু হলেও, অবৈধ দখলদারদের হস্তক্ষেপে আদালতের নিষেধাজ্ঞার কারণে কাজ বন্ধ হয়ে গেছে।
সীমান্তবর্তী বেনাপোল জনপদের জলাবদ্ধতা নিরসনে ভারতের ইসামতি নদীর সাথে সংযুক্ত বেতনা নদীটি পুনরুদ্ধারের দাবিতে সচেতন মহল দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছিল। তাদের দাবির প্রেক্ষিতে ২০২৪ সালের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে খনন কাজ শুরু হয়। পাঁচ কিলোমিটার খননের জন্য নির্ধারিত প্রকল্প ব্যয় ছিল ৪ কোটি ৪৮ লাখ ১০ হাজার ৯৪ টাকা এবং কাজের দায়িত্ব পায় চট্টগ্রামের ইউনুস এন্ড ব্রাদার্স ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
তবে খনন কাজ শুরু হতেই স্থানীয় কিছু অবৈধ দখলদার বাধা সৃষ্টি করে। পরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের হস্তক্ষেপে আইনি লড়াই শেষে আংশিকভাবে ১.৫ কিলোমিটার নদী খনন সম্পন্ন হলেও, অবশেষে অবৈধ দখলদারদের রিটের কারণে আদালতের নিষেধাজ্ঞায় পুরো প্রকল্পের কাজ থমকে যায়।
পানি উন্নয়ন বোর্ড যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ কুমার ব্যানার্জী জানান, “প্রকল্পের মেয়াদ শেষ ও বাতিল হওয়ায় বেতনা নদীর খনন কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞার কারণে ঠিকাদার নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে পারেনি। তবে স্থানীয়দের দাবির প্রেক্ষিতে নতুন প্রকল্প গ্রহণের মাধ্যমে ভবিষ্যতে খনন কাজ শুরু করা সম্ভব।”
এদিকে, শার্শা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ডাঃ কাজী নাজিব হাসান বলেন, “বিষয়টি ইতিমধ্যে আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। জেলা পরিষদের মিটিংয়ে নদী রক্ষা কমিটিতে এটি উপস্থাপন করা হবে এবং পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।”
স্থানীয়রা জানান, ভারী বর্ষণে বেনাপোল পৌর এলাকার নিচু গ্রামগুলো পানিতে তলিয়ে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয় এবং বেনাপোল স্থলবন্দরের গুদামে থাকা কোটি কোটি টাকার পণ্য নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি থাকে। তাই জনস্বার্থে বেতনা নদীর খনন কাজ পুনরায় শুরু এবং অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদের জন্য জেলা প্রশাসকের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা।
আপনার মতামত লিখুন :