মারুফ সরকার, স্টাফ রিপোর্টার : সকল মানুষের কোনো না কোনো স্বপ্ন থাকে। কেউ ডাক্তার হতে চায় কেউ ইঞ্জিনিয়ার হতে চায় আবার কেউ হতে চায় অভিনেতা-অভিনেত্রী। এমন এক অভিনেত্রীর কথা হয়। তিনি হলেন আনিকা তাবাসুম। তার অভিনয়ের মাধ্যমে দর্শক রাখতে চান তিনি।
আনিকা তাবাসসুম বলেন, আমার ছোটবেলাই আমি ব্যক্তিগতভাবে কনফিউষ্ট ও হতাশা এবং কিছু না করার মতো বৈশিষ্ট ছিলাম। আমার সাথে কেউ মিশতো না, সবাই ইগনোর করতো, আমি বার বার ভেঙে পড়তাম। পড়াশুনায় পড়লেও পারতাম না। একমাত্র ভালবাসার জায়গা মা ও বাবার বিশ্বাস। স্কুলে হঠাৎ একদিন খেলাধুলার কমপিটিশন হল। মা আমাকে অনুপ্রেরণা করালো। কাকতালিওভাবে আমি অর্থাৎ স্কুলের ঔ প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়ে গেলাম। কেউ খুশি হল না, কিন্তু মাকে অনেক খুশি হতে দেখলাম। আমার অনুপ্রেরণাটি মূলত সেখান থেকেই আসল, যে আমার দ্বারাও কিছু করা সম্ভব। নিজেকে পরিবর্তন করা নতুন করে শিখা। অধ্যবসায় বিষয়টা তখন থেকেই আসলো।
আমার মার আমাকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন ছিল যাই আমার নিজেকে প্রমান করার জেদে পরিনত হয় বরাবর, বারবার এখন অবদি। আমি আমার পরিবার মা, বাবা ও তিনটি বোন নিয়ে আমিসহ আমরা ৪ বোন মিলে আমার পরিবার। সাথে আমার ছোট মামা আমার পার্সোনাল বডিগার্ড ছিলো কিন্তু মামা এখন বেঁচে নাই. এটাতো আমার প্রথম দুনিয়া যেখানে ভালবাসা ও স্নেহ ছাড়া কিছুই না। আমি সাধারণভাবে বেড়ে উঠেছি। ছোট বেলায় আমি পড়াশুনা করেছি উত্তরায় মাইলস্টোন কলেজে। তখন ইডেন মহিলা কলেজে ২য় বর্ষে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয় নিয়ে অধ্যয়নরত। আমি আমার কলেজে খেলাধুলা করি, বাস্কেটবল আমার পছন্দের খেলা। বাংলাদেশ বাসকেটবল এসোসিয়েশন এর সাথে যুক্ত আছি।আমি প্রথমে অভিনয় নিয়ে পড়াশুনা করেছি। আমি অনেক স্বপ্নবাজ, আমি যখন স্বপ্ন দেখেছি আমার মধ্যে অভিনয় শিখার ইচ্ছা আছে। আমি নিজেকে সেভাবে প্রস্তুত করে চলছি। আমি নাচ-নাটক করতাম। স্কুলেকলেজে প্রোগ্রামগুলিতে এখনও আমার সেগুলির ছবি আছে। আমি প্রকৃতপক্ষে একজন সিনেমা প্রেমিকা। আমার গ্রাজুয়েশন শেষ হলে আমার ফ্লিম পারফরমেন্স এন্ড স্টাডিস নিয়ে পড়াশুনা করারও ইচ্ছা আছে। আমি আশিষ খন্দকারের , গাজী রাকায়েত সাথে মঞ্চে কাজ করেছি একটা সময়। মঞ্চ একজন অভিনেতার প্রস্তুতের জায়গা। আমার মঞ্চে কাজ করতে সবচেয়ে বেশি ভাল লাগে। বর্তমান যুগ মর্ডান যুগ। আল্ট্রা মর্ডান এ যুগে আমরা খুবই ব্যস্ত নিজেদের ভভিষ্যৎ নিয়ে। আবার এ করোনা মহামারি গোটা বিশ্ব পড়াশুনার একটি ব্যহত হয়েছে। আমার মনে হল অনেক দেরি হয়ে গেছে। আর নয় দেশের জন্য কিছু করতে হবে। তখন আমি ক মাস শুরু বিভিন্ন দুস্থ্য এলাকা জায়গাগুলোকে নিয়ে রিসার্চ করি। পর্যায়ক্রমে আমি আমার প্রথম ব্রাঞ্চ প্রজেক্ট উত্তরার বাউনিয়ায় স্থাপন করি ৫৫ জন ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে। মূল উদ্দেশ্য মানসম্মত ও গুনগত শিক্ষা প্রদান l তদেরকে মানুষের বানানোর প্রতিশ্রতি। তখন আমরা দুটি আরো ব্রাঞ্চ করার পরিকল্পনা করছি। একটি ময়মনসিংহ ও আরেকটি খুলনায়।
আমাদের ভাসমান অবস্থায় ঢাকা শহরের কয়েকটি জায়গায় কাজ করছে বিদ্যাসভাকে নিয়ে আমার অনেক পরিকল্পনা। আমার ইচ্ছা তদেরকে শিক্ষার আলো দিয়ে সঠিক পথ দেখানো। পথশিশু ও সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের ধর্মীয় নৈতিকতা, প্রাথমিক শিক্ষার পাশাপাশি সংস্কৃতি চর্চা করে থাকি। অভিনয়ের শুরুটা অনেক ভয়ানক এবং কঠিন, পথটা অনেক দূরের। ধৈর্য ও সাধনা করে যেতে হয় একজন অভিনেতার। আমিও সে পথে হেঁটেছি এমনকি হেঁটে চলছি। ভাল কিছু কাজ করার ক্ষুধা আমাকে বার বার তারা করে, মানুষকে নতুন কাজে উপহার দেয়ার তারা মনে। অডিশন দিতে হয়েছে আমাকে অনেক অডিশন দিয়ে পরিচালকের কাছে নিজেকে প্রমাণ করেছি। আমরা মনে করি অভিনয় সহজ না আমাদের মনকে দৃঢ় ও ধৈর্যের মধ্যে রাখতে হয়। অনেক অপেক্ষা মেডিটেশন করতে হয়, অন্যরকম জীবন যাপন, খাবারের পরিবর্তন সর্বোপরি একজন ব্যক্তিগত একজন শান্ত বিবেকের মানুষ হতে হয়। বর্তমানদের জীবনকে ফলো করতে হয়। আমিও তার ব্যাতিক্রম নয় অনেক ঐ রকম করে কঠোর পরিশ্রম করেছি ও করছি যতদিন বেঁচে আছি। আমি শিক্ষার্থী ইডেন মহিলা কলেজে ২য় বর্ষে অধ্যায়নরত,আমি একজন অভিনয় আর্টিস্ট, আমি সমাজকর্মী , মডেল ও অভিনেত্রী . আমার এই সকল কাজ করে যে ইনকাম করি তা দিয়ে অলাভজনক প্রতিষ্ঠান (ডাব্লিও বি এস) এ ব্যয় করি যা দিয়ে বিদ্যাসভা নামে তদের স্কুল চালানো হচ্ছে পথশিশু ও সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য শুধু কাজ করে যাচ্ছে।টেলিভিশন মিডিয়াতে কাজ করে আমি কিছু অভিজ্ঞ নির্মাতার সাথে কাজ করার সৌভাগ্য হয়। আমি আমার সৃজনশীল কাজের মাধ্যমে মানুষের মনে জায়গা করে নিতে চাই শিক্ষামূলক বিষয় উপস্থাপনের মাধ্যমে। আমি একজন শিল্পের মানুষ হতে চাই। মানুষের জন্য কাজ করতে চাই। এর জন্য আমি বিদ্যাসভা নামক অলাভজনক প্রতিষ্ঠান চালাচ্ছি। বিদ্যাসভার মাধ্যমে প্রাথমিক ও হাতে কলমে শিক্ষা প্রদানের উদ্দেশ্যে কাজ করি। এ বাচ্চাদের উন্নত বিশ্বেও গুণগত মানসম্মত শিক্ষার আওতায় নিয়ে আসতে চাই, যাতে এরা নিজেদের সুশিক্ষিত করে গড়ে তুলতে পারে l আমি বেশ কিছু ব্রান্ডের সাথে মডেলিংয়ের কাজ করেছিলাম। আমি কোন চরিত্রকে ছোট মনে করি না। আমি প্রথম কাজ করেছি এখনকার বিখ্যাত পরিচালক রায়হান রাফির সাথে । একের পর এক কাজ করার পর আমার কাজ করার নেশা চলে আসে, এমন নেশা যা আমার নিজেকে একজন আদর্শ অভিনেত্রী করার লক্ষকে অটুট এ আগ্রহী হয়ে আছি। আমি ১২টা টেলিভিশন ধারাবাহিকে কাজ করেছি এর মধ্যে কাজলরেখা, গরম মশল্লা, রুবি হত্যা, টুইন ভিলেজ, ফ্যামিলি প্রবলেম ইত্যাদি। নাটক করেছি ৪০টার মত। যেমন: গরম ভাতে গল্প, রাতের কথা, স্বামী আব্দুল রহিম, জারনৌকোবিরা , অমানুষ, অবশেষন, অক্সিজেন, কেউ কথা রাখেনি ইত্যাদি। ওয়েব সিরিজ করেছি ৩টি।