1. admin@sokalerbangla.com : সকালের বাংলা :
শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:১৩ পূর্বাহ্ন
শিরবাম:
রাণীশংকৈলে পুষ্টি বিষয়ক সচেতনামূলক ক্যাম্পেইনিং পুষ্টি মেলার সমাপনী ও পুরুষ্কার বিতরন ৫ অক্টোবর বিশ্ব শিক্ষক দিবসে জেলা শিক্ষক সমাবেশ সিরাজগঞ্জ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত।  অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ খাদ্যে নিষিদ্ধ রংয়ের ব্যবহার পাইকগাছায় আয়েশা বেকারির ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানা  জামায়াতের তত্বাবধানে বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বাসায় গিয়ে কথা হবে, বলে আর কথা হলো না স্বামীর সঙ্গে অবৈধ ক্যাফেইন যুক্ত রেড ব্লু এনার্জি ড্রিংক দেশের খোলা বাজারে বিক্রি যেন দেখার কেহ নাই পাবনার সাঁথিয়ায় ধানক্ষেত থেকে একজনের গলাকাটা লাশ উদ্ধার! সাবেক এমপি পিংকুসহ ৫’শ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা প্রবীণ রোকন শামসুন্নাহার পেয়ারার মৃত্যুতে জেলা জামায়াতের শোক লক্ষ্মীপুর জেলায় পৌর আওয়ামী লীগ নেতা সৈয়দ আহম্মদ গ্রেপ্তার

আশুলিয়ায় গ্যাসের অবৈধ সংযোগদাতা জলিলসহ বিভিন্ন দালাল চক্র-অভিযান লোক দেখানো

Reporter Name
  • Update Time : মঙ্গলবার, ২৯ আগস্ট, ২০২৩
  • ১৬৮ Time View

হেলাল শেখঃ ঢাকার সাভার আশুলিয়ায় তিতাস গ্যাসের পাইপলাইন থেকে অবৈধ সংযোগদাতা আব্দুল জলিলসহ বিভিন্ন দালাল চক্র আর অবৈধ সংযোগ দেওয়ার কারণে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। অভিযোগ রয়েছে লোক দেখানো প্রতিটি অভিযানে সরকারের লক্ষাধিক টাকা খরচ হয়। বৈধ গ্রাহকদের চুলায় গ্যাস থাকেনা, অবৈধ সংযোগের গ্যাসের চাপ বেশি হওয়ার কারণ কি?।
মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট ২০২৩ইং) জানা গেছে, প্রতি মাসে ৪-৫টি অভিযানে তিতাস গ্যাসের অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন কর্তৃপক্ষ কিন্তু বিকেলে অভিযান শেষে রাতে আবারও অবৈধ সংযোগ দেয়া হয়, এ যেন চোর পুলিশের খেলা। সরকারের তহবিল থেকে প্রতিটি অভিযানে খরচ হয় প্রায় লক্ষাধিক টাকা, একই স্থানে ৭-৮ বার অভিযান চালানোর নজির রয়েছে, তাহলে সরকারের কত টাকা খরচ ও কত টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে তার কোনো হিসাব নাই। তিতাস গ্যাসের অবৈধ সংযোগ দিয়ে প্রতিটি বাসা বাড়ির সংযোগ থেকে ৩০-৫০ হাজার টাকা নিয়ে থাকে দালালরা, হোটেল বা শিল্প-কারখানার সংযোগ হলে লক্ষাধিক টাকা নেয়া হয়, সরকারি সম্পদ নষ্ট করে গ্যাসের এ যেন চলছে জমজমাট বাণিজ্য।
সূত্র জানায়, গত বছর (৩ আগস্ট ২০২২ইং) ঢাকার আশুলিয়ার কাঠগড়া মোল্লা পাড়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করছেন সাভার তিতাস কর্তৃপক্ষ। তিতাস গ্যাসের কর্মকর্তাদের দাবি পাইপলাইনের মাধ্যমে প্রাকৃতিক গ্যাসের সংযোগ দেওয়ার পরিস্থিতি বা সক্ষমতা আপাতত নেই, তাই গ্রাহকদের আশায় ঝুলিয়ে না রেখে গ্যাস সংযোগ স্থায়ীভাবে বন্ধ রাখার জন্য সরকারি সিদ্ধান্তটি স্পষ্ট করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে-কথাগুলো বলেছেন, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব আনিছুর রহমান। সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, ঢাকার আশুলিয়ার কাঠগড়া, ইউসুফ মার্কেট, তাজপুর, এদিকে ইয়ারপুর ইউনিয়নের জামগড়া গফুর মন্ডল স্কুল এলাকা, মীর বাড়ি, চিত্রশাইল এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় তিতাস গ্যাসের অবৈধ সংযোগের ছড়াছড়ি। তথ্যমতে, এসব অবৈধ সংযোগ দাতারা হচ্ছে জামগড়া এরাকার নাজিমউদ্দিন, সোহেল মীর, সাঈদ মীর, শামীম, শরীফ, মোস্তফাসহ ১৫-২০ জনের দালাল চক্র।
অন্যদিকে ইয়ারপুর ইউনিয়নের তৈয়বপুর, তাজপুর, ইয়ারপুর এলাকার সিরাজ, হানিফ, জলিল, ফারুকসহ আরও অনেকেই তিতাস গ্যাসের অবৈধ সংযোগ দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে। গ্যাসের অবৈধ সংযোগ থেকে অগ্নিকান্ডে নারী ও শিশুসহ গত দুই বছরে সাভার ও আশুলিয়া এবং নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ৪৫-৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এসব দুর্ঘটনায় শতাধিক মানুষ দগ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন। এদিকে সিলিন্ডার গ্যাসের বোতলের দাম বেড়েই চলেছে, ওষুধের দোকান, মুদি দোকানসহ বিভিন্ন দোকানে বিক্রি হচ্ছে সিলিন্ডার গ্যাসের বোতল। অভিযোগ রয়েছে, বৈধ গ্রাহকদের চুলার গ্যাস টিপটিপ করে জ্বলে কিন্তু অবৈধ সংযোগের চুলায় সবসময় গ্যাস থাকে এর রহস্য কি?। তাদের দাবি-বৈধ গ্রাহকদের কাছ থেকে বিল ঠিকই নেয়া হয় কিন্তু গ্যাস না থাকার কারণ কি?।
বিশেষ করে সরকারের উক্ত সিদ্ধান্তে দুই শ্রেণীর গ্রাহক সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন, এদের মধ্যে এক শ্রেণি হলো রাজধানী ঢাকাসহ সাভার আশুলিয়ায় ও বিভিন্ন জেলা, উপজেলা, থানা, ইউনিয়ন পর্যায়ে ও শহরের বাসা বাড়ি ফ্ল্যাটের মালিকেরা। আরেকটি হলো বিভিন্ন আবাসন কোম্পানিগুলো। তাদের মধ্যে অনেকেই গ্রাহকদের গ্যাসের পাইপলাইনের প্রতিশ্রæতি দিয়েছেন। আবাসন কোম্পানির অনেকেই বলেন, এখন গ্যাসের সংযোগ না পেলে তাদের প্লট, জমি ও ফ্ল্যাট বিক্রি হচ্ছে না। তারা অনেকেই দাবি করেন যে, গ্যাস সংযোগ নতুন করে আর কেউ পাচ্ছেন না, এতে গ্রাহকরা বেশি বিপাকে পড়েছেন কিন্তু অবৈধভাবে চলছে গ্যাসের হাজার হাজার সংযোগ। জানা গেছে, ২০১৮ইং সালে এলএনজি আমদানি শুরুর পর দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা গ্যাসের সংযোগ নতুন করে শুরু হওয়ার কথা নীতিনির্ধারণী মহলেও শুনা যাচ্ছিল। তখন ঢাকা ও সাভার, আশুলিয়া এবং নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, গাজীপুরসহ বিভিন্ন জেলা উপজেলায় অবৈধ সংযোগের সংখ্যা আরো বাড়িয়ে দেয় দালাল চক্র সিন্ডিকেটগুলো। গ্রাহকদের তারা আশ্বাস দেয়, কিছুদিন পরে গ্যাসের নতুন বৈধ সংযোগ দেওয়া শুরু করলে তারা এগুলোকে বৈধ করে দেবেন কিন্তু এখন এসব অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার পালায় এই গ্রাহকদের সংযোগও কাটা পড়েছে।
জানা গেছে, সরকারি ভাবে এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে বেশ জোরেসোরেই মাঠে নেমেছে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ, একটি অভিযানে সরকারের লক্ষাধিক টাকা খরচ হচ্ছে, অভিযানের দুইদিন পর আবার সেখানে অবৈধ সংযোগ দেয়া হয়, আবারও অভিযান চালানো হয়, এতে সরকার বেশি ক্ষতি হচ্ছে, এটা কারো মাথায় ঢুকছে না। গ্যাস বিতরণ কোম্পানিগুলোকে কিছুদিন আগে জ্বালানি বিভাগ উক্ত বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়ে তা বাস্তবায়নের আদেশ দিয়েছিলো। সূত্র জানায়, ডিমান্ড নোট ইস্যু হওয়া এবং টাকা জমা দেওয়া গ্রাহকদের আবেদনও বাতিল করা হবে। তাদের অর্থ ফেরত দেবে সংশ্লিষ্ট বিতরণ কোম্পানিগুলো। বিতরণ সংস্থাগুলোর তথ্যমতে, নতুন সংযোগের জন্য ডিমান্ড নোট ইস্যু হওয়া এবং প্রয়োজনীয় ফি জমা দেওয়া গ্রাহকের সংখ্যা প্রায় আড়াই লাখের মতো। গ্যাস ও খনিজ সম্পদ খাতের নেতৃত্ব প্রদানকারী সংস্থা পেট্রোবাংলার এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে জানান, বৈধ অবৈধ নানা উপায়ে এই শ্রেণির গ্রাহক সংখ্যা প্রায় ৮লাখ হবে। দেশে সবচেয়ে বড় গ্যাস বিতরণকারী প্রতিষ্ঠান তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী আলী ইকবাল মোঃ নুরুল্লাহ বলেন, এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের চিঠি পেয়েছি। গৃহস্থালিতে আর গ্যাস সংযোগ দেওয়া হবে না। যেসব গ্রাহক সংযোগের জন্য আবেদন করেছেন এবং টাকা জমা দিয়েছেন, তাদের নাম আমাদের তথ্যভান্ডারে রয়েছে। আগামীতে এ বিষয়ে আমরা একটি সভা করে সরকারি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের রোডম্যাপ তৈরি করবো। বিঃ বা সংবাদ প্রকাশের মাধ্যমে বা অন্য কোনো উপায়ে গ্রাহকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে টাকা ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। দেশে গ্যাস বিতরণে নিয়োজিত অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে রয়েছে বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি, জালালাবাদ গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি, পশ্চিমা ল গ্যাস কোম্পানি ও সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানি। এই সংস্থাগুলোর কর্মকর্তারাও জানিয়েছেন, আগামীতে সভা করে তারা সরকারি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের রূপরেখা ঠিক করবেন। উক্ত ব্যাপারে জ্বালানি বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, গ্যাসের অবৈধ সংযোগ কোনোভাবেই বন্ধ করা যাচ্ছে না। নানা প্রলোভন দেখিয়ে জনগণকে গ্যাসের অবৈধ সংযোগ নিতে বাধ্য করে কিছু দালাল চক্র।
সাভার ও আশুলিয়ার তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিঃ ব্যবস্থাপক (জোবিঅ) প্রকৌশলী আবু সাদাৎ মোহাম্মাদ সায়েম বলেন, সাভার ও আশুলিয়ায় তিতাস গ্যাসের বৈধ গ্রাহক সংখ্যা ৫২ হাজারের বেশি হবে। শিল্প গ্রাহক সংখ্যা ১৫০০। গ্যাসের অবৈধ সংযোগ ব্যবহারকারী দালালদের বিরুদ্ধে সাভার থানায় ৬টি ও আশুলিয়ায় ৪৮টি মামলা করা হয়েছে। গ্যাসের অবৈধ সংযোগ ব্যবহারকারী দালালদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে বলেও তিনি জানান। এক স্থানে ৬-৮ বার অভিযান করা হলেও আবার অবৈধ সংযোগ দেয়া হয়, তাহলে সরকার প্রতি বছরে কত কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে জানতে চায় সচেতন মহল। প্রতিটি এলাকায় কিছু মেম্বার ও চেয়ারম্যানসহ অনেক নেতার নাম জড়িত রয়েছে তিতাস গ্যাসের অবৈধ সংযোগের সাথে। পর্ব-২।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved , sokalerbangla.com
Theme Customized BY LatestNews