বিশেষ প্রতিনিধিঃ ঢাকার আশুলিয়া থানাধীন ইয়ারপুর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের নরসিংহপুর এলাকায় সরকারি রেকর্ডভুক্ত রাস্তার উপর অবৈধভাবে বাউন্ডারী ওয়াল নির্মাণ কাজ করার সময় স্থানীয়রা বাঁধা দেওয়ায় এলাকাবাসীর উপর হামলা করে কাজী বাড়ীর সন্ত্রাসীরা, এ সময় কমপক্ষে ১২ জন ব্যক্তি আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে মোঃ আসাদুল মীর (৪০), কালাম মাদবর (৫০) গুরুতর আহত হলে লোকজন তাদেরকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য সাভার এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। এ ব্যাপারে আহত ভুক্তভোগী আসাদুল মীরের স্ত্রী বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
উক্ত মামলার বাদী মোছাঃ লাবনী আক্তার (৩৭) বলেন, আমার স্বামী মোঃ আসাদুল মীরসহ ১২জনকে পিটিয়ে আহত করেছে সন্ত্রাসীরা, আমার স্বামী আসাদুল মীরকে দেশি অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা করেছে, তার অবস্থা গুরুতর। আমি এ ব্যাপারে আশুলিয়া থানায় মামলা করেছি। বিবাদী ১। ইয়াহিয়া কাজী (৪৫), ২। ইলিয়াছ কাজী (৩৮), ৩। আশরাফ (৫৫), ৪। হাবিবুল্লাহ (৩৩), সর্ব পিতা কারী মোহাম্মদ আলী কাজী, ৫। রফিকুল ইসলাম মুসা (৪৫), ৬। ইউসুফ কাজী (২২), ৭। জুবায়ের কাজী (২০), ৮। শাকিল (৩৫), সহ আরো ৮—১০ জন সন্ত্রাসী উল্লেখিত ১ হইতে ৪নং বিবাদী আসামীগণ গত ১৪ জানুয়ারি ২০২৪ইং তারিখ সকাল সাড়ে ৮টার দিকে লেবার ও মিস্ত্রি নিয়া নরসিংহপুর আমাদের বসত বাড়ীর সামনে সরকারী রেকর্ডভুক্ত রাস্তার উপর অবৈধভাবে বাউন্ডারী ওয়াল নির্মাণ কাজ শুরু করে। একই তারিখ বিকেল ০৪.১৫ ঘটিকার সময় আমার স্বামীসহ স্থানীয় লোকজন জনৈক কালাম মাদবর (৫০) ও এলাকার অন্যান্য গন্যমান্য ব্যক্তিদের ডাকিয়া আনে এবং এলাকার জনপ্রতিনিধিসহ গন্যমান্য ব্যক্তিদের মধ্যস্থতায় বিবাদীদের জমির সীমানা নির্ধারণ করিয়া বাউন্ডারী ওয়াল নির্মাণ করার জন্য অনুরোধ করেন। যে কারণে বিবাদীগণ ক্ষিপ্ত হইয়া আমার স্বামীসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সাথে খারাপ আচরণ সহ বিভিন্ন ভাবে ভয়—ভীতি প্রদর্শন করে। একপর্যায়ে একই দিন বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে উল্লেখিত বিবাদীগণসহ তাহাদের সহযোগী আরো ৮—১০জন সন্ত্রাসী লাঠি—সোটা, লোহার রড, জিআইপাইপ, ছ্যান, রামদা, চাইনিজ কুড়াল ও পিস্তল ইত্যাদি অস্ত্র সস্ত্র নিয়া বে—আইনী জনতাবদ্ধ হয়ে এলোপাথারি ভাবে লোকজনকে মারপিট করে এবং কুপিয়ে জখম করে।
তিনি আরো বলেন, এই সন্ত্রাসীদের হামলায় মারপিটে লোকজনের শরীরের বিভিন্ন স্থানে নীলা ফুলা ও রক্তাক্ত জখম করেছে। একপর্যায়ে ১নং বিবাদী ইয়াহিয়া কাজী তাহার হাতে থাকা চাইনিজ কুঠার দিয়া আমার স্বামী আসাদুল মীরকে হত্যার উদ্দেশ্যে ডান পাজরে কোপ মারিয়া গুরুতর কাটা রক্তাক্ত জখম করে। ওই সময় স্থানীয় কালাম মাদবর এগিয়ে আসলে তাকেও মারপিট করে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। এ সময় আরো আহত হয়েছেন সাইদুর খান (৩০), আমানুল্লাহ (৩০), ফজলুল হক (৬৫), অহিদুল ইসলাম (৩২), পথচারী হাসান (২২) রনি (২৫) সহ মোট ১২জন এই ঘটনায় আহত হয়। তিনি আরো বলেন, আমরা থানায় মামলা করায় আমাদেরকে আবারও বিভিন্ন ভাবে হুমকি দিচ্ছে আসামী পক্ষের লোকজন।
গতকাল শুক্রবার ১৯ জানুয়ারি বিকেলে ঘটনাস্থল নরসিংহপুর সংবাদ সম্মেলনে আহত কালাম মাদবর ও আসাদুল মীর গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল তাই আইন নিজে হাতে তুলে নিতে পারিনা তাই আশুলিয়া থানায় মামলা করেছি,এ ব্যাপারে পুলিশ ও র্যাবের হস্তক্ষেপ কামনা করছি আমরা এলাকাবাসীরা। দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে আমরা সংবাদ সম্মেলন করছি,লোকজন বিক্ষোভ করেছে, এরপরও যদি আসামীরা গ্রেফতার না হয় আমরা মানববন্ধন করবো বলে তারা জানান।
আশুলিয়ার ইয়ারপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৬নং ওয়ার্ড মেম্বার মোঃ জলিল উদ্দিন ভুঁইয়া (রাজন) বলেন, আমি একজন জনপ্রতিনিধি, আমি এলাকার মানুষের শান্তি চাই, সরকারি রেকর্ডভুক্ত রাস্তা দখলকারী বা সন্ত্রাসী সে যেইহোক না কেন তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, বিষয়টি তদন্ত করে এই মামলার আসামীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি। তিনি আরো বলেন, সরকারি রাস্তা দখল করার অধিকার কারো নেই, পুলিশ প্রশাসন বিষয়টি দেখবে বলে আমি আশাবাদী। অনেকেই জানান, আশুলিয়ায় সরকারি নয়নজুলি খাল ও বিভিন্ন রাস্তার ফুটপাত দখল করে বিভিন্ন স্থাপনা তৈরি করা হয়েছে। আশুলিয়া থানা পুলিশ ও র্যাব জানায়, সরকারি রেকর্ডভুক্ত রাস্তা দখলকারী, সন্ত্রাসী যেইহোক না কেন তাদেরকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে। উক্ত বিবাদীদের বক্তব্য নিতে তাদের কাউকে পাওয়া যায়নি। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত উক্ত মামলার কোনো আসামী গ্রেফতার হয়নি বলে পুলিশ জানায়।