হেলাল শেখঃ ঢাকার প্রধান শিল্পা ল আশুলিয়ায় সামান্য বৃষ্টিতে পানির নিচে রাস্তা—হাজার হাজার পোশাক শ্রমিকসহ জনগণের চরম দুভোর্গ। ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকার কারণে রাস্তার এই বেহাল অবস্থা বলে সংশ্লিষ্টদের দাবী।
শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ইং) সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শিল্পা ল আশুলিয়ার জামগড়াসহ বিভিন্ন এলাকার রাস্তার বেহাল অবস্থা, সামান্য বৃষ্টি হলে পানির নিচে রাস্তা থাকে আর প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে মানুষ আহত হয়ে থাকেন। দেখা যায়, হাজার হাজার পোশাক শ্রমিক ও পথচারীরা থেমে থেমে রাস্তা দিয়ে অনেক কষ্টে চলাচল করেন। শ্রমিক সাধারণের কাছে জানতে চাইলে তারা গণমাধ্যমকে বলেন, বৃষ্টি নেই তবুও বাসা বাড়ির নোংরা পানি রাস্তায় ফেলা হয়, এতে পুরো রাস্তা ভেঙে গেছে, এখন সামান্য বৃষ্টিতে পানির নিচে রাস্তা দেখা যায় না।
বিশেষ করে ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় রাস্তার এই বেহাল অবস্থা হয়েছে। শ্রমিকরা অনেকেই বলেন, আমাদের অফিসে যাওয়ার সময় লাইন ধরে রাস্তা পারাপাড় হতে হয়। অনেকেই দাবী করেন, আশুলিয়ায় তিতাস গ্যাস কোম্পানি লাইন কেটে দেওয়ায় বাসায় গ্যাস নেই, আজ দুইদিন খেয়ে না খেয়ে বাসা থেকে অফিসে যাচ্ছি, আমাদের ভোগান্তির শেষ নেই। তারা আরও বলেন, মেম্বার, চেয়ারম্যান, এমপি, মন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি, তারা যেন আশুলিয়ার জামগড়াসহ বিভিন্ন রাস্তার কাজ দ্রুত করেন, এতে পোশাক শ্রমিকসহ সকল শ্রেণি পেশার মানুষের উপকার হবে।
আশুলিয়া থানার ইয়ারপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি নুরুল আমিন সরকার বলেন, এলাকায় যারা জনপ্রতিনিধি তাদেরই দায়িত্ব রাস্তা নির্মাণ করা এবং জনসেবায় কাজ করা কিন্তু কেউ কারো খবর রাখে না। তিনি আরো বলেন, ঢাকার প্রধান শিল্পা ল আশুলিয়ায় ৫টি ইউনিয়নের মধ্যে ইয়ারপুর ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি পোশাক কারখানা। শিল্পের উন্নয়ন হলেও রাস্তার উন্নয়ন হয়নি ইয়ারপুরে। তিনি আরও বলেন, ইয়ারপুর ইউপির ১নং ওয়ার্ড জামগড়ার বাগবাড়ি রোডের কাজ একাধিকবার করা হলেও এই রাস্তার মাথায় কাজ আটকে আছে উন্নয়ন, পুরো রাস্তার কাজ দুইবার করলেও যা তাই বেহাল অবস্থা। সেই সাথে ‘দি রোজ পোশাক কারখানার’ রোডের সামনে থেকে জামগড়া চৌরাস্তায় প্রায় প্রতিদিন সকালে হাজার হাজার শ্রমিকদের চলাচলের সময় ভোগান্তির শেষ নেই। এসব দেখার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট পোশাক কারখানার মালিক ও জনপ্রতিনিধির।
ইয়ারপুর ইউনিয়ন পরিষদের ১নং ওয়ার্ডের মেম্বার হালিম মৃধা’ জানান, নয়নজুলি খালটি উদ্ধার করা হলে এই সমস্যার সমাধান হবে, এই কাজে সকলের সহযোগিতা দরকার বলে তিনি অভিমত প্রকাশ করেছেন।
আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাংগঠনিক সম্পাদক ও ইয়ারপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শামীম আহমেদ সুমন ভুঁইয়া বলেন, জামগড়া তেঁতলতলা রোড ও হেয়ন গার্মেন্টস রোড থেকে মোল্লাবাড়ি মসজিদ রোডের কাজসহ বিভিন্ন রোডের কাজ করা হয়েছে, বাকী রাস্তার কাজ দ্রুত করা হবে।
আশুলিয়ার ধামসোনা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান—আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সফল সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমানে ঢাকা—১৯ আসনের এমপি জনাব মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, সামান্য বৃষ্টি হলে পানিতে রাস্তা ডুবে যায়, এর কারণ হলো, অপরিকল্পিত বাড়ি ঘর নির্মাণ ও ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকা। তিনি গত ২১ ফেব্রুয়ারি একটি অনুষ্ঠানে ঘোষণা দিয়েছেন যে, সেবামূলক কাজে আমি আপনাদের সাথে আছি, থাকবো, রাস্তা—ঘাট নির্মাণ পর্যায়ক্রমে কাজ করা হবে। বিশেষ করে এলাকায় মাদক সন্ত্রাস ও কিশোর গ্যাং দমন করতে হবে, এর জন্য সকলের সহযোগিতা দরকার বলে তিনি জানান।
অনেকেই বলেন, সাবেক এমপি, প্রতিমন্ত্রী ডাঃ এনামুর রহমান এলাকার উন্নয়ন করবেন বলে মসজিদে নামাজের সময় বক্তব্যে কথা দিয়ে গেলেও তার কোনো কথা ও দায়িত্ব সঠিক ভাবে পালন করেননি, এর কারণে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি বিপুল ভোটে হেরেছেন ধামসোনা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মুহাম্মদ সাইফুল ইসলামের ট্রাকের কাছে। ডাঃ এনামুর রহমান বড় বড় কথা বলেছিলেন কিন্তু কাজের বেলায় তিনি একজন ফাঁকিবাজ বলে অনেকেই অভিমত প্রকাশ করেন। তিনি দলীয় নৌকা মার্কা নিয়েও একজন চেয়ারম্যানের কাছে হেরেছেন। উক্ত এলাকায় তেমন কোনো উন্নয়নমূলক কাজ না করায় এলাকাবাসী চরম ভোগান্তিতে জীবনযাপন করছেন। অনেকেই নিজেদের ছবি দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারণা চালাচ্ছেন কিন্তু রাস্তার বেহাল অবস্থা তা নিয়ে কারো কোনো মাথা ব্যথা নেই, কেউ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন না বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।