হেলাল শেখঃ সারাদেশে সরকারি খাস জমি ও ফসলি জমি থেকে মাটি কেটে নিচ্ছে ইটভাটার মালিকসহ প্রভাবশালীরা-এর কারণে দেশের ফসলি জমি কমে যাচ্ছে, আগামীতে খাদ্য সংকট হওয়ার আশঙ্কা করছেন সচেতন মহলসহ জনসাধারণ। একদিকে কয়লার পরিবর্তে গাছের কাঠ ব্যবহার করায় ইটভাটার কালো ধোঁয়ায় পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। অনেকেই জানান, ফলের গাছসহ ফসলি জমি নষ্ট করছেন যারা-তারা দেশ ও জাতির শক্র, তাই এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন ভুক্তভোগীরা।
বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি ২০২৪ইং) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আশুলিয়ার শিমুলিয়া ইউনিয়নের ভেকু নামক ইঞ্জিন চালিত মেশিন দিয়ে ফসলি জমি থেকে মাটি কেটে নিচ্ছে অবৈধ ইটভাটার মালিকের লোকজন ও স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় গাজী খালসহ বিভিন্ন ফসলি জমির মাটি নিচ্ছে তারা। শুধু শিমুলিয়া নয়, ঢাকা জেলার আশপাশে সাভার, ধামরাই, মানিকগঞ্জ, টাঙ্গাইল, গাজীপুর ও আশুলিয়ায় কোনো ইটভাটার মালিক সরকারি আইনের তোয়াক্কা করছে না, তারা অবৈধভাবে ইটভাটা চালিয়ে যাচ্ছে। সূত্র জানায়, শুধু ধামরাইয়ে শতাধিক ইটভাটা রয়েছে, আশুলিয়া ও সাভারে অর্ধশতাধিক ইটভাটাসহ উল্লেখ্য এলাকায় প্রায় চার শতাধিক ইটভাটায় অবৈধভাবে চলছে।
এ বিষয়ে শিমুলিয়া ইউপি সদস্য-২ মোঃ খলিলুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, ফসলি জমিতে ফসল করতে প্রতি ১ বিঘায় ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা লাগে, সেখানে মাটি বিক্রি করলে ৪০-৫০ হাজার টাকা পেয়ে থাকে জমির মালিকরা, তাই ফসল না করে মাটি বিক্রি করছে। তিনি আরও বলেন, শিমুলিয়ায় ৭টি ইটভাটা আছে, এই ইটভাটার মাটি কেটে নিচ্ছে তারা।
আশুলিয়ার শিমুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবিএম আজাহারুল আসলাম সুরুজ বলেন, তার এলাকায় মোট ৯টি ইটভাটা আছে, সবাই পরিবেশের ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করেছেন। তিনি আরও বলেন, ফসলি জমির মালিকরা মাটি বিক্রি করতে পারে কেউ যেন খাল থেকে মাটি কেটে না নিতে পারে সেজন্য ইউপি সদস্যদের বলে দেয়া হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের সাথে রাস্তার পাশে ইটভাটা স্থাপন করা কি সরকারি নিয়মের মধ্যে পড়ছে কি না জানতে চাইলে চেয়ারম্যান এ বিষয়ে এড়িয়ে যান।
এর আগে পরিবেশ অধিদপ্তরের মনিটরিং এন্ড এনফোর্সমেন্ট শাখা ও পরিবেশ অধিদপ্তর, ঢাকা জেলা কার্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে ধামরাইয়ে এক দিনেই ১১টি ইটভাটাকে ৫২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। পরিবেশ অধিদপ্ত, সদর দপ্তরের মনিটরিং এন্ড এনফোর্সমেন্ট উইংয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কাজী তামজীদ আহমেদের নেতৃত্বে গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার আড়াল বাজার ও ধানদিয়া এলাকায় ভ্রাম্যমান আদালতে ২০টি ইটভাটাকে সর্বমোট ৩৮ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে বলে নির্বাহী কর্মকর্তা জানান।সারাদেশে এ অভিযান অব্যাহত আছে বলে পরিবেশ অধিদপ্তর কর্মকর্তাগণ জানিয়েছেন। আমাদের প্রতিনিধিদের মাধ্যমে খবর নিয়ে জানা গেছে, দেশের প্রায় এলাকায় ফসলি জমি ও সরকারি খাস জমি থেকে মাটি কেটে নিচ্ছে ইটভাটার মালিকসহ প্রভাবশালী মহল, এর কারণে ফসলি জমি কমে যাচ্ছে আর ফসল না হলে আগামীতে খাদ্য সংকটের আশঙ্কা করছেন সচেতন মহল।