নাজমুল হোসেন, নিজস্ব প্রতিবেদক :
চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর উপজেলায় ৪৪ বছর ইমামতি করার পর রাজকীয় বিদায় দিযলেন এলাকাবাসী। এই ঘটনায় কেঁদেছেন গ্রামের প্রত্যেক লোক ও বিদায়ী ইমাম সাহেব।
মতলব উত্তর উপজেলার শিকারীকান্দি বায়তুল আমান জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা আব্দুল খালেককে নানা আয়োজন ও সংবর্ধনার মধ্য দিয়ে শনিবার বিকেলে রাজকীয় বিদায় জানান এলাকাবাসী।
মাওলানা আব্দুল খালেক ৪৪ বছর ইমামতি করার পর মুসল্লিদের এমন ভালোবাসায় খুশিতে কেঁদে ফেলেন। চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তরের ইতিহাসে ইমামের এমন রাজকীয় বিদায় এই প্রথম বলেও জানান স্থানীয় বাসিন্দারা।
মতলব উত্তর উপজেলার দূর্গাপুর ইউনিয়নের শিকারীকন্দি গ্রামে সকাল থেকেই ইমামকে বিদায় দেওয়ার নানা আয়োজনে ব্যস্ত ছিলেন এলাকাবাসী। সাজানো হয় ঘোড়ার গাড়ি। আয়োজন করা হয় মুসল্লিদের খাবার। সকালে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের পরে জামে মসজিদের ৭৪ বছর বয়সী ইমামকে হাত ধরে ঘোড়ার গাড়িতে তোলেন এলাকাবাসী।
ঘোড়ার গাড়িতে ওঠার আগে শেষবারের মতো উপস্থিত মুসল্লি ও এলাকাবাসীর কাছে নিজের ভুল ত্রুটির জন্য ক্ষমা চান মাওলানা আব্দুল খালেক।
পরবর্তীতে মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা দিয়ে ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে পার্শ্ববর্তী চাঁদপুর জেলার কচুয়া উপজেলায় তার নিজ বাড়িতে নিয়ে যান এলাকাবাসী।
এর পূর্বে সকালে মসজিদের বিদায়ী ইমাম মাওলানা আব্দুল খালেকের হাতে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে নগদ টাকা তুলে দেন মুসল্লিরা।
এ ছাড়াও শত শত মুসল্লির উপস্থিতে ঘোড়ার গাড়িতে ওঠানো হয় ইমামকে। সামনে-পেছনে মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে বিভিন্ন স্লোগানে ইমামের নিজ বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে আসেন চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর উপজেলার মুসুল্লিরা।
মাওলানা আব্দুল খালেক বলেন, ১৯৮০ সাল থেকে এই মসজিদে ইমামতি করে আসছি। ৪৪ বছরের বিদায় বেলায় এত ভালোবাসা ও সম্মান দেওয়ায় আমি সত্যিই মুগ্ধ।
মসজিদ কমিটির কোষাধক্ষ্য মো. সেলিম বলেন, চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তরে ইমামের এমন রাজকীয় বিদায় সংবর্ধনা এই প্রথম। এর আগে কখনো উপজেলায় এমনভাবে কোনো ইমামকে বিদায় দেওয়া হয়নি।
মসজিদ কমিটির সভাপতি আলহাজ শেখ নজরুল ইসলাম বলেন, আজকের দিনটি আমাদের জন্য বেদনার। কেননা আত্মার আত্মীয়কে বিদায় দিচ্ছি, যিনি দীর্ঘ ৪৪ বছর দ্বিনি শিক্ষায় আমাদের আলোকিত করেছেন এই চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তরের।