হেলাল শেখঃ ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার হাবিবুর রহমান বিপিএম-বার, পিপিএম-বার বলেছেন, আসন্ন পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় সব কুরবানির পশুর হাটের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। এজন্য ব্যাপক কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে।
আজ শুক্রবার (৭ জুন ২০২৪) সকালে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আসন্ন পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে কুরবানির পশুর হাটে ডিএমপির গৃহীত নিরাপত্তা নিয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় ১৯টি গরুর হাট বসবে। যার মধ্যে দুটি স্থায়ী ও ১৭ টি অস্থায়ী। আমরা গরুর হাটের সকল ইজারাদারকে বলেছি, তাদের হাটে যে সমস্ত খামার থেকে বা বিভিন্ন অঞ্চল থেকে গরু আসবে, গরুর ট্রাকে যেন সেই হাটের নাম, ইজারাদারের নাম ও মোবাইল ফোন নম্বর লিখে ব্যানার টানিয়ে দেয়। যাতে এক হাটের গরু অন্য হাটে যেতে না পারে। জোরপূর্বক এক হাটের গরু অন্য হাটে নেওয়ার চেষ্টা করা হলে বা নিলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। হাটে যেন নিরাপদে গরু বেচাকেনা ও লেনদেন করতে পারে সেজন্য পোশাক পরা পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা পুলিশও মোতায়েন থাকবে।
তিনি আরো বলেন, গরুর হাটে ড্রোন পেট্রোলিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সকল হাটে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। অতিরিক্ত হাসিল যেন না নেওয়া হয় সেজন্য হাসিলের হার নির্ধারণ করে ব্যানার টানিয়ে দিতে বলা হয়েছে। কেউ যেন জাল টাকার লেনদেন করতে না পারে সেজন্য জাল টাকা শনাক্তকরণ মেশিন বসানোর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে অনুরোধ করা হয়েছে। লেনদেন সহজ করার জন্য প্রত্যেক হাটে নিকটস্থ ব্যাংকের শাখা খোলা থাকবে, পুলিশ নিরাপত্তা দেবে। প্রত্যেক হাটে পুলিশের একটি করে ক্যাম্প থাকবে। সকল হাটে যেন নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ থাকে সে জন্য বিদ্যুৎ বিভাগকে অনুরোধ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, গরুর হাটে নিরাপত্তার নিয়ে সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সঙ্গে আমরা একটি সমন্বয় সভা করেছি। সমন্বয় সভা থেকে প্রতি হাটে একটি করে কো-অর্ডিনেশন কমিটি গঠন করা হয়েছে। যারা হাটের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। তারা একটা হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ খোলে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করবে যাতে কোন ধরনের কোন সমস্যা তৈরি হতে না পারে।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, যে সব নদীপথে গরু আসবে সেখানে নৌ পুলিশ টহলরত থাকবে এবং স্থল পথে ডিএমপির সদস্যরা থাকবে। যাতে কেউ ট্রলারে আসা এক হাটের গরু অন্য হাটে নেওয়ার অপতৎপরতা চালাতে সক্ষম না হয়।
তিনি আরো বলেন, রাজধানীর অস্থায়ী পশুর হাটগুলোতে আগামী ১৩ জুন থেকে গরু আসা শুরু হবে। ঈদের দিন পর্যন্ত পশুর হাট চলবে। সে দিন পর্যন্ত পুলিশ তৎপর থাকবে। কোনো ধরনের অভিযোগ আসলে পুলিশ তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
তিনি বলেন, হাট সংলগ্ন রাস্তায় কোন অবস্থাতেই যেন গরু না বসে সে বিষয়ে লক্ষ্য রাখতে ইজারাদারদের বলা হয়েছে। রাস্তায় ট্রাক থেকে পশু নামানো যাবে না। অননুমোদিতভাবে ফাঁকা জায়গায় কোন হাট বসানোর চেষ্টা করলে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, যারা অনলাইনে গরু কিনবেন তারা সচেতন থাকবেন। অনলাইনে প্রতারণা ঠেকাতে ডিএমপির সাইবার মনিটরিং টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তারা প্রতিনিয়ত সাইবার পেট্রোলিং করবে। অজ্ঞান ও মলমপার্টি প্রতিরোধেও ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তাছাড়া সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালানো হবে হাটে।
এ সময় ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) ড. খঃ মহিদ উদ্দিন বিপিএম-বার (অতিরিক্ত আইজিপি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত); অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মোঃ মুনিবুর রহমান বিপিএম-সেবা; অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (সিটিটিসি) মোঃ আসাদুজ্জামান বিপিএম (বার); যুগ্ম পুলিশ কমিশনারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।