স্টাফ রিপোর্টারঃ
কুড়িগ্রামের উলিপুরে ইউনিয়ন পরিষদের কক্ষের তালা ভেঙ্গে চেয়ারম্যানের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে। নৌকা প্রতীক নিয়ে বিজয়ী ওই চেয়ারম্যানকে পুনরায় গ্রেপ্তার ও প্রাণনাশের ভয় দেখিয়ে পরিষদ ছাড়া করা হয়।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) দুপুরে নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলনে করে এমন অভিযোগ তোলেন উপজেলার তবকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমান।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযোগ করে বলেন, কয়েক মাস পূর্বে ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনের সময় স্থানীয় বিএনপির কিছু নেতাকর্মী আমাকে পুলিশের কাছে ধরিয়ে দেন। এ সময় ইউনিয়ন বিএনপি নেতাদের সহযোগিতায় পরিষদের ৭নং ওয়ার্ডের সদস্য ও বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম প্যানেল চেয়ারম্যান হন। পরে আমি কারাভোগ করে জামিনে বেড়িয়ে আসি। এরপর থেকে পরিষদে গেলে আমাকে পুনরায় পুলিশ দিয়ে হেনস্থার ভয় দেখানোসহ প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়া হয়। বিএনপি নেতাদের ভয়ে আমি বাড়িতে থেকে পরিষদের যাবতীয় কাজ সুষ্ঠভাবে পরিচালনা করলেও তারা আমাকে অনুপস্থিত দেখায়। পরিষদে গেলে গ্রেপ্তারের ভয় এবং বাড়িতে থাকলে অনুপস্থিত, এই হলো আমার পরিস্থিতি। গত ১৬ জুন বিকালে রফিকুল ইসলামসহ ইউনিয়ন বিএনপি-যুবদলের নেতারা পরিষদের ঢুকে আমার কক্ষের তালা ভেঙ্গে টিআর-কাবিখার ফাইলনসহ সরকারি প্রয়োজনীয় কাগজপত্রাদি লুট করে নিয়ে যায় এবং কক্ষে আলাদা একটি তালা লাগিয়ে দেয়। তারা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে গিয়ে আমাকে বিপদে ফেলতে পারেন। বিষয়টি আমি জানতে পেয়ে ইউএনও মহোদয়কে অবগত করি। ওই দিন সকালে আমাকে উপজেলা পরিষদ থেকে গ্রেপ্তার করার জন্য চাপ সৃষ্টি করেন তারা।
তিনি আরও বলেন, ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়ক রেজাউল করিম রাজা, সদস্য সচিব এনামুল হক মানিক, যুবদল নেতা সাজুসহ তাদের লোকজন আমাকে পরিষদে গেলে যে কোনো সময় হত্যা করার প্রকাশ্যে হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছে। আমি একজন জনপ্রতিনিধি, যে সরকার আসবে আমি তার লোক। আমি আ’লীগ, বিএনপি, জামাত কিছু বুঝিনা। এ সময় তিনি তার মেয়াদকাল পর্যন্ত সুষ্ঠভাবে দায়িত্বপালন করতে পারেন এজন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়সহ ডিসি-ইউএনও-থানা পুলিশের সহযোগিতা কামনা করেন এবং পরিষদের তালা ভাঙ্গার বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সংবাদ সম্মেলনে তবকপুর ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোক্তা জাকির হোসেনসহ সংবাদকর্মীগণ উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে তবকপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম বলেন, চেয়ারম্যানের কক্ষের তালা ভাঙ্গা বা কাগজপত্র নেয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি। চেয়ারম্যানকে বিভিন্ন হুমকি ধামকির বিষয়ে তিনি বলেন, যে অভিযোগ গুলো করেছেন এগুলো সত্য নয়।
উলিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) জিল্লুর রহমান জানান, নিরপরাধ কোন ব্যক্তিকে পুলিশ কখনো আটক করেনা। সুনিদিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতেই অপরাধীদের গ্রেফতার করা হয়। তবকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে পূর্বে মামলা থাকায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। হয়রানির বিষয়টি সঠিক নয়।