গোলাম মোস্তাফিজার রহমান মিলন, হিলি প্রতিনিধিঃ
চাহিদার তুলনায় বন্দর দিয়ে পেঁয়াজের আমদানি কমের অজুহাতে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরে আবারো একদিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে ৫ টাকা। হঠাৎ করে পেঁয়াজের দাম ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন বন্দরে পেঁয়াজ কিনতে আসা পাইকাররা। অনেকে পেঁয়াজ না কিনে বাজার পর্যবেক্ষণ করছেন। ভারতের বাজারে দাম বাড়ার কারণে দেশের বাজারে দাম বাড়ছে বলে দাবি করছেন এই বন্দরের পেঁয়াজ ব্যবসায়ীদের।
হিলি স্থলবন্দর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বন্দর দিয়ে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি অব্যাহত রয়েছে। পূর্বে বন্দর দিয়ে ইন্দোর ও নাসিক জাতের পেঁয়াজ আমদানি হলেও বর্তমানে শুধুমাত্র ইন্দোর জাতের পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে। বর্তমানে বন্দরে ইন্দোর জাতের পেঁয়াজ ৫৪ থেকে ৫৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। যা একদিন পূর্বেও ৪৯ টাকা থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছিল।
হিলি স্থলবন্দরে পেঁয়াজ কিনতে আসা পাইকাড় ইসমাইল হোসেন বলেন, আমদানি কমের অজুহাতে গত বৃহস্পতিবার থেকেই হিলি স্থলবন্দরে পেঁয়াজের দাম ঊর্ধ্বমুখী। কয়েকদিনের ব্যবধানে দাম বাড়তে বাড়তে ৪৩ থেকে ৪৪ টাকার পেঁয়াজ বর্তমানে ৫৪ থেকে ৫৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। একদিনের ব্যবধানে কেজিতে আবারো ৫ টাকা করে দাম বেড়েছে। দাম বাড়ার কারণে আমরা বন্দর থেকে পেঁয়াজ ক্রয় করে যেসব মোকামে সরবরাহ করি সেখানকার ক্রেতারা পেঁয়াজ ক্রয় করা বন্ধ করে দিয়েছেন। তারা বর্তমানে বাজার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন দাম কি অবস্থা হয়। যার কারণে রোববার কোনো ক্রয় আদেশ না থাকায় বন্দর থেকে কোনো পেঁয়াজ কিনতে পারিনি। সোমবার দেখি পরিস্থিতি কি হয় যদি ক্রয় আদেশ পায় তাহলে হয়তো কিনে মোকামে পাঠাবো।
হিলি স্থলবন্দরের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী সেলিম হোসেন বলেন, দেশের বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে বন্দর দিয়ে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি অব্যাহত রেখেছেন বন্দরের আমদানিকারকরা। তবে গত তিন-চার দিন ধরেই বৈরি আবহাওয়া বিরাজ করছে কখনো ঝড় কখনো বৃষ্টি ঝরছে। যার কারণে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে বিশেষ করে যেসব অঞ্চলে পেঁয়াজ আবাদ হয় সেখানকার কৃষকরা ক্ষেত থেকে পেঁয়াজ তুলতে পারছেন না। এতে ভারতের মোকামগুলোতেই পেঁয়াজের সরবরাহ কমায় দাম খানিকটা বৃদ্ধি পেয়েছে। এর সঙ্গে বৈরি আবহাওয়ার কারণে গাড়ি ভাড়াও কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। বাড়তি দামে পেঁয়াজ আমদানির কারণে দেশের বাজারেও পেঁয়াজের দাম বাড়ছে। সেই সঙ্গে বন্দর দিয়ে পেঁয়াজের আমদানি কমে গেছে। এতে দেশের বাজারে চাহিদার তুলনায় পণ্যটির সরবরাহ কমায় দাম কিছুটা বাড়তি হয়েছে। আবহাওয়া স্বাভাবিক হলে ও বন্দর দিয়ে পেঁয়াজের আমদানি বাড়লে দাম কমে আসবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
হিলি স্থলবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন, বন্দর দিয়ে পেঁয়াজের আমদানি অব্যাহত রয়েছে। তবে পেঁয়াজ আমদানির পরিমাণ আগের তুলনায় অনেকটা কমে এসেছে। পূর্বে বন্দর দিয়ে ৪০ থেকে ৫০ট্রাক পেঁয়াজ আমদানি হলেও বর্তমানে তা কমে ১০ থেকে ১৫ ট্রাক করে পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে। চলতি সপ্তাহের প্রথম দিন শনিবার বন্দর দিয়ে ১২টি ট্রাকে ৩৫৭টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। এছাড়া রোববার বন্দর দিয়ে ১৫টি ট্রাকে ৪৪৮ টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। আজো বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি অব্যাহত রয়েছে। পেঁয়াজ যেহেতু কাঁচামাল গরম ও বৃষ্টিতে দ্রুত পচে নষ্ট হয়ে যায় তাই কাস্টমসের প্রক্রিয়া শেষে দ্রুত যেন ব্যবসায়ীরা বন্দর থেকে পেঁয়াজ খালাস করে নিতে পারেন এজন্য বন্দর কর্তৃপক্ষ সবধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করে রেখেছেন।