আজিজুর রহমান মুন্না, সিরাজগঞ্জঃ
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা মোঃ রফিকুল ইসলাম খান বলেছেন, জামায়াত ইসলামী নেতাদের বিচারের জন্য হাইকোর্ট সুপ্রিম কোর্টে লাঠিয়াল বাহিনীকে নিয়োগ করা হয়েছিলো। এক বিচারপতি টকশোতে এসে আস্ফালন করে বলত, আজকে নিজামীর ফাঁসি দিলাম, আজকে মুজাহিদের ফাঁসি দিলাম। সিলেটের সীমান্তে জঙ্গলের ভেতরে কলার পাতা গায়ে দিয়ে ছিলেন তিনি। এরা এত অন্যায় করেছে একেকজনের ১০ বার ফাঁসি দিলেও তাদের শাস্তি কম হবে।
তিনি আরও বলেন, সরকারের কাছে আহ্বান জানাই এই ট্রাইব্যুনালে যারা বিচার করেছেন, যারা শাস্তি দিয়েছেন, যারা সহযোগিতা করেছেন তাদের গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। মিথ্যা মামলা, মিথ্যা স্বাক্ষী দিয়ে নিজামী সাহেব, মুজাহিদ সাহেবকে যারা ফাঁসি দিয়েছেন তাদের কারোরই ক্ষমা নেই এই বাংলার মাটিতে।
মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান আরও বলেন, স্বৈরাচার শেখ হাসিনা ক্ষমতা গ্রহণের পরই বিডিআর বিদ্রোহের নামে ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাকে নির্বিচারে হত্যা করে। ইতোমধ্যে নিহতদের পরিবারের সদস্যরা সংবাদ সম্মেলন করে শেখ হাসিনাকে দায়ী করা শুরু করেছে। তাদের প্রথম টার্গেট ছিল সেনাবাহিনীকে দুর্বল করা। দ্বিতীয় টার্গেট ছিল ইসলামী শক্তিকে নিশ্চিহ্ন করা। এ জন্য আমির মওলানা নিজামীসহ জামায়াতের নেতাদের বিচারের নামে তামাশা করে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করা হয়েছে। আমার নামও দেওয়া হয়েছিল। বয়স কম হওয়ায় পরে তারা বাদ দিয়েছে। এ তালিকা এসেছে প্রতিবেশী দেশ থেকে। তারা মানুষ দেখে তালিকা করেনি, তালিকা করেছে পদ দেখে।
হিন্দু সম্প্রদায়ের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমরা মনে করি বাংলাদেশে কোনো সংখ্যালঘু নেই। নাগরিক হিসেবে সবাই সমান। একজন মুসলমান যে অধিকার পাবে, একজন অমুসলিম সেই অধিকার পাবেন। ইসলামী রাষ্ট্র হলে অমুসলিমদের ধন-মান-ইজ্জত আব্রু ও নিরাপত্তার গ্যারান্টি দেবে ইসলামী সরকার।
বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) বিকেলে সিরাজগঞ্জ শহরের প্রাণকেন্দ্র বাজার স্টেশন মুক্তির সোপান এলাকায় ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর আওয়ামীলীগের লগি-বৈঠা হামলায় নিহতদের স্মরণে আয়োজিত বিশাল সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি উপরোক্ত এসব কথাগুলো বলেন।
সিরাজগঞ্জ শহর জামায়াতের আমীর মোঃ আব্দুল লতিফের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও সিরাজগঞ্জ জেলা শাখা’র আমির অধ্যক্ষ মাওলানা মোঃ শাহীনুর আলম।
সিরাজগঞ্জ শহর জামায়াতের আমীর মাওলানা মোঃ মোস্তফা মাহমুদের সঞ্চালনায়
এ প্রতিবাদ সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন, সিরাজগঞ্জ জেলা জামায়াতে ইসলামী জেলা নায়েবে আমীর অধ্যক্ষ আলী আলম, মাওলানা মোঃ আব্দুস ছালাম, সেক্রেটারী অধ্যাপক মোঃ জাহিদুল ইসলাম, জেলা শাখার প্রচার শাখার প্রচার ও মিডিয়া সম্পাদক অধ্যাপক মোঃ শহিদুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মাসুদুর রহমান, জেলা শ্রমিক কল্যান ফেডারেশনের সভাপতি অ্যাডভোকেট মোঃ ছাইদুল ইসলাম খান, বেলকুচি উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর মোঃ আরিফুল ইসলাম সোহেল, জেলা ছাত্রশিবির সভাপতি মোঃ আলহাজ উদ্দিন,সিরাজগঞ্জ শহর শাখার সভাপতি মোঃ তারিকুল ইসলাম প্রমুখ।
উক্ত প্রতিবাদ সমাবেশে হাজার হাজার নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে উপস্থিত হলে পুরো বাজার স্টেশন এলাকায় লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়।