কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ
কুড়িগ্রামে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে পিতা কর্তৃক নিজ কন্যাকে হত্যার ঘটনায় পিতা-মাতাসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, কুড়িগ্রাম সদর এলাকার হলোখানা ইউনিয়নের কাজীপাড়া এলাকার মোঃ জাহিদুল ইসলাম এর কন্যা জান্নাতি খাতুন (১৫) কে গত ১০ মে গভীর রাতে অজ্ঞাত ব্যক্তি হত্যা করে বাড়ির আনুমানিক ১০০ গজ সামনে ভূট্টা ক্ষেতের পাশে ফেলে রাখে। জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে সংবাদ পেয়ে পুলিশ তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে লাশ উদ্ধার করে এবং লাশ ময়নাতদন্তের জন্য প্রেরণ করেন। পরে নিহতের চাচা মোঃ খলিল হক(৫৫) বাদি হয়ে কুড়িগ্রাম থানায় একটি এজাহার দাখিল করেন। এজাহার প্রাপ্তির পর কুড়িগ্রাম থানার একটি চৌকস টিম হত্যাকান্ডের বিষয়ে তদন্ত শুরু করে। তদন্তের একপর্যায়ে প্রাথমিকভাবে পুলিশ জানতে পারে ভিকটিমের পিতা মোঃ জাহিদুল ইসলামের সাথে তার প্রতিবেশি মজিবর গংদের ৩২ বিঘা জমি নিয়ে বিরোধ রয়েছে এবং জাহিদুল ইসলাম তার প্রতিপক্ষ মজিবর গংদের ফাঁসানোর উদ্দেশ্যে পূর্বপরিকল্পনা মোতাবেক ঘটনার দিন ১০ মে রাত ৩টা থেকে ৬ ঘটিকার মধ্য যে কোন সময় তার স্ত্রী ও ভাইয়ের স্ত্রীর সহযোগিতায় হলোখানা কাগজীপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় ৯ম শ্রেনীর ছাত্রী নিজ কন্যা জান্নাতি খাতুন (১৫)কে রড ও দা দিয়া শরীরের বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে হত্যা করে ভুট্টা খেতে ফেলে রাখে এবং খরের পালায় আগুন লাগিয়ে দেয়।
কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশের মিডিয়া অফিসার ও ওসি ডিবি বজলার রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মামলার তদন্তকারী অফিসার কুড়িগ্রাম থানার ওসি মোঃ হাবিবুল্লাহ ও ডিবি পুলিশের একটি টিম তাৎক্ষণিকভাবে অনুসন্ধান শুরু করে মাত্র ৪ ঘন্টার মধ্যে ঘটনার মূলরহস্য উদঘাটন সহ মূল ঘাতক ভিকটিমের পিতা জাহিদুল ইসলাম (৪৫), ভিকটিমের মা মোছাঃ মোর্শেদা বেগম (৩৮), ও ভিকটিমের চাচী শাহিনুর বেগম (৪৫)কে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আসামী ভিকটিমের পিতা জাহিদুলকে সাথে নিয়ে তার দেখানো বাড়ির পার্শ্বের বাঁশ ঝারে মাটির নিচে পোতা অবস্থায় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ২০ মিঃলিঃ লোহার রড (লম্বা ৩৩ ইন্চি), একটি দা উদ্ধার করে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত ৩ জন আসামী আজ সোমবার বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। এ মামলার তদন্ত অব্যাহত আছে।