জাহিদ আল হাসান, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ
কুড়িগ্রামের উলিপুরে বারি ১২ জাতের বেগুন চাষে বাম্পার ফলন হয়েছে। প্রথমবারের মতো এ জাতের বেগুন চাষে সফলতা অর্জন করেছেন কৃষক আবু নাসির। আকারে বড় হওয়ায় বেগুন দেখতে ক্ষেতে ভিড় জমাচ্ছেন দর্শনার্থীরা। দূর থেকে গাছ ও ফুল দেখতে অন্যান্য বেগুনের মত হলেও কাছে গিয়ে দেখলে মনে হয় এক একটি গাছে যেন ছোট ছোট লাউ ধরেছে, এমনই একটি জাতের বেগুন চাষ করে এলাকায় চাঞ্চল্যর সৃষ্টি করেছেন উপজেলার তবকপুর ইউনিয়নের বামনেরহাট এলাকার কৃষক আবু নাসির। তার প্রতিটি বেগুনের ওজন প্রায় ৫০০ গ্রাম থেকে ৮০০ গ্রাম পর্যন্ত। আবু নাসিরের বেগুন দেখে অনেকেই এ জাতের বেগুন চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।
উপজেলা কৃষি অফিস জানান, বীজ সহায়তা কার্যক্রমের আওতায় উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের মধ্যে তাবকপুর, সাহেবের আলগা, ধরনিবারি ও পান্ডুল ইউনিয়নের মোট ৫ জন কৃষক প্রথমবারের মতো প্রদর্শনীর মাধ্যমে বারি ১২ জাতের বেগুন চাষ করেছেন। এসকল কৃষকদের মাঝে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে বিনামূল্যে বীজ দেয়া হয়েছে। এছাড়াও তাদের বীজতলা তৈরি থেকে শুরু করে বাজারজাত করা পর্যন্ত বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দেয়া অব্যহত রয়েছে বলে জানান।
কৃষক আবু নাসির জানান, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মাজেদুল ইসলাম আমাকে এ জাতের বেগুন চাষে উদ্বুদ্ধ করেছেন। তিনি আমাকে বিনামূল্যে বীজ দিয়েছেন এবং প্রতিনিয়ত তিনি আমার বেগুন ক্ষেতের জন্য পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। আমি ২৫ শতক জমিতে এ জাতের বেগুনের চাষ করেছি। এ পর্যন্ত খরচ হয়েছে প্রায় ৫ হাজার থেকে ৬ হাজার টাকা। কয়েক দিনের মধ্যে বাজারজাত শুরু হবে। তিনি এ বেগুনের ক্ষেত থেকে প্রায় ৭০ হাজার টাকা আয়ের আশা করছেন। তিনি আরও বলেন, আমার এই বেগুন ক্ষেত দেখতে বিভিন্ন জায়গা থেকে কৃষক ও দর্শনার্থীরা আসছেন। তারাও এ জাতের বেগুন চাষ করবেন বলে আমার কাছ থেকে পরামর্শ নিচ্ছেন।
আবু নাসিরের বেগুন ক্ষেত দেখতে আসা মিনজু, ইয়াকুব, রহমান ও মঞ্জু সহ আরও অনেকে জানান, জীবনে অনেক বেগুন দেখেছি, লাউয়ের মত এত বড় বেগুন এই প্রথম আমাদের এলাকায় দেখলাম।
এ বিষয়ে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মাজেদুল ইসলাম জানান, উপজেলার তবকপুর ইউনিয়নের তবকপুর ব্লকের বামনেরহাট এলাকার কৃষক আবু নাসিরকে বারি ১২ জাতের বেগুন চাষে উদ্বুদ্ধ করি। তাকে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে বিনামূল্যে বীজ দেয়া হয়। শুরু থেকেই তাকে বিভিন্ন ধরনের রোগবালাই পোকামাকড় নিধন সম্পর্কে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। এখন বেগুনের বাম্পার ফলন হয়েছে। আশা করি আবু নাসির অনেক লাভবান হবেন। তিনি আরও বলেন, আবু নাসিরের বেগুন চাষ দেখে এলাকার অনেকেই এ জাতের বেগুন চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও কৃষিবিদ মোঃ মোশারফ হোসেন জানান, বীজ সহায়তা কার্যক্রমের আওতায় উপজেলার ৪টি ইউনিয়নে ৫টি প্রদর্শনীর মাধ্যমে কৃষকদের বারি ১২ জাতের বেগুন চাষে আগ্রহী করা হচ্ছে। প্রদর্শনী গুলোর মধ্যে উপজেলার তবকপুর ইউনিয়নের তবকপুর ব্লকের কৃষক আবু নাসিরের বেগুনের ক্ষেত পরিদর্শন করেছি বাম্পার ফলন হয়েছে। এ জাতের বেগুনের অনেক ফলন হয়। এছাড়া এ জাতের বেগুন চাষ করলে কৃষকরা অল্প জমিতে অনেক লাভ করতে পারবেন বলে তিনি জানান।