নাজমুল হোসেন, নিজস্ব প্রতিবেদক :
লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে উপ-সহকারী প্রকৌশলী পানি উন্নয়ন বোর্ডের ভিতরে দেখা মিলে এমন শামুকের।
ছোট-বড় বিভিন্ন সাইজের এ প্রজাতির শামুক ছড়িয়ে পড়ছে। এনিয়ে হৈচৈ শুরু হয়েছে। এছাড়া খবর পেয়ে দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ এসব শামুক দেখতে আসছেন।
রামগতি পাউবো’র উপ-সহকারী প্রকৌশলী আ ম ম নঈম বলেন, গত কয়েক মাস ধরে এ প্রজাতির শামুকের বিচরণ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। দিনে শামুকের সংখ্যা কম থাকলেও রাত হলে বেড়ে যায়। দিনের বেলায় এরা আম, পেঁপে গাছসহ বিভিন্ন গাছে ও ঘাসের নিচে থাকে। এছাড়া বিভিন্ন দেয়ালেও থাকে। বাড়ির আশপাশে শাক-সবজি চাষ করলে শামুকগুলো তা খেয়ে ফেলে। কোথা থেকে এতো শামুক এসেছে তা কেউই বলতে পারছেনা। দিন দিন এসব শামুক ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এ ব্যাপারে রামগতি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু সাঈদ তারেক বলেন, শামুক এভাবে শাক-সবজি খাচ্ছে এবং ক্ষতি করছে এমন বিষয় নিয়ে কোনো কৃষক এখনো কেউ অভিযোগ করেননি। সবচেয়ে বড় কথা শামুক গুলো শাক-সবজির পাতা খেয়ে পেলে, এতে করে মানুষের খাবারের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে বলে তিনি জানান।
লক্ষ্মীপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ডা. জাকির হোসেন বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই।
রামগতি উপজেলা মৎস্য সিনিয় কর্মকর্তা মো. জসিম উদ্দিন বলেন, এমন ঘটনা আগে শুনিনি। তবে শামুক মানুষের জন্য ক্ষতিকর না। কিন্তু শাক-সবজি খেয়ে ফেলছে এবং বিনষ্ট করছে এটা তো অবশ্যই কৃষকের জন্য ক্ষতি। যেহেতু কৃষির বিষয়টি সঙ্গে জড়িত এটা কৃষি কর্মকর্তারা ভালো বলতে পারবে।
উইকিপিডিয়া থেকে জানা গেছে, শামুক হচ্ছে মোলাস্কা ফাইলামের গ্যাস্ট্রোপোডা শ্রেণির। এরা নরমদেহী এবং দেহ প্যাঁচানো খোলকে আবৃত থাকে। মরুভূমি, নদী, বদ্ধ জলাশয়, জলাশয়, সমুদ্র উপকূলসহ অনেক আবহাওয়াতে শামুকের দেখা পাওয়া যায়। স্থলচর শামুক শামুকের জগতে সংখ্যালঘু। সামুদ্রিক শামুকরাই বৈচিত্র্যে ও সংখ্যায় অনেক বেশি। বেশিরভাগ শামুকই তৃণভোজী। তবে কিছু সামুদ্রিক শামুক প্রজাতি উভভোজী অথবা মাংসাশী। কিছু শামুক ফুসফুসের সাহায্যে শ্বাস নেয়। এদেরকে পালমোনাটা বলে। যেসব শামুক ফুলকা জাতীয় অঙ্গের সাহায্যে শ্বাস নেয় তাদের প্যারাফিলেটিক দলে ফেলা হয়। স্থলচর শামুকদের মাথায় দুই জোড়া কর্ষিকা থাকে দরকার পড়লে গুটিয়ে রাখতে পারে। পেছনের কর্ষিকাজোড়ায় থাকে চোখ। পায়ের পেশীতে ঘনঘন সঙ্কোচন ঘটিয়ে শামুক চলাচল করে। শামুকের চলার গতি অত্যন্ত ধীর।
প্রজাতি ভেদে শামুকের আয়ু ভিন্ন। প্রকৃতিতে আকাটিনিডে শামুক ৫-৭ বছর বাঁচে, আবার হেলিক্স প্রজাতির শামুক ২-৩ বছর বাঁচে। অ্যাকোয়াটিক অ্যাপল জাতের শামুকের আয়ু মাত্র বছর খানেক। বেশিরভাগ শামুকের মৃত্যু হয় শিকারীর হাতে নয়তো পরজীবী দ্বারা। কিছু কিছু শামুকের প্রায় ৩০ বছর পর্যন্ত বাঁচার নজির রয়েছে।
স্থলচর শামুক তৃণভোজী। এরা পাতা, গাছের নরম বাকল, ফল, শাক ইত্যাদি খেয়ে থাকে। শামুকের কিছু প্রজাতি শস্য ও বাগানের গাছের ক্ষতি করে বিধায় এদেরকে ক্ষতিকারক কীটের দলে ফেলা যায়।