হেলাল শেখঃ ঢাকা জেলার সাভার ও আশুলিয়ার বিভিন্ন বাসা বাড়িতে তিতাস গ্যাস—তীব্র সংকট আকার ধারণ করায় গত এক মাস ধরে পুরো এলাকায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে গ্রাহকসহ পোশাক কারখানায় কর্মরত থাকা লক্ষ লক্ষ শ্রমিকদের। গ্যাস ব্যবহারকারী গ্রাহক ও শ্রমিক সাধারণ জানান দিনের বেশিরভাগ সময় পাইপ লাইনে গ্যাস থাকে না, রাত ১২ টার পর গ্যাস আসলেও তা ২—৩ ঘন্টা থাকে, তার উত্তাপ খুবই নগণ্য, এতে বাসা বাড়ির মালিকরা বিপাকে পড়েছেন বলে অনেকেই জানান।
রবিবার (৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ইং) জানা গেছে, আবাসিক এলাকায় এমন গ্যাস সংকট দেখা দেওয়ায় অনেকেই রান্না করতে পারছেন না। বিষয়টি সাভার ও আশুলিয়াবাসী বৈধ গ্রাহক একাধিকবার তিতাসসহ সংশ্লিষ্ট কতৃর্পক্ষকে জানালেও তাদের এই সমস্যার সমাধান হয়নি। সরেজমিনে গিয়ে খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে, গত দুই বছর ধরে সাভার পৌরসভা এলাকা ও সাভার উপজেলার আশুলিয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় গ্যাস—সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। কিছু এলাকায় সকাল ৬টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত গ্যাস থাকে না। আবার কোন কোন এলাকায় রাত ১২ টাতেও পাইপ লাইনে গ্যাসের চাপ থাকে না।
সাভারের আশুলিয়ার জামগড়ার বাসিন্দা মানবাধিকার কর্মকর্তা লতিফ মোল্লা বলেন, এভাবে দিনের পর দিন বাসা বাড়িতে গ্যাস সরবরাহ বিঘ্নিত হওয়ায় গ্যাস ব্যবহারকারীদের রান্নাবান্নাসহ ঘর গেরস্থালির কাজ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন এলাকার মানুষ। নিরূপায় হয়ে অনেকেই এলপি গ্যাস, বৈদ্যুতিক চুলা ও মাটির তৈরি চুলা দিয়ে রান্নার কাজ সেরে নিচ্ছেন। তবে এলপি গ্যাসের ছোট সিলিন্ডার ১৫০০/টাকা দিয়ে কিনতে হচ্ছে, এতে সাধারণ মানুষ বিপাকে পড়ছেন, আয়ের চেয়ে ব্যয়—খরচ বেশি হওয়ায় মানুষ চরম সমস্যায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
সাভারে ব্যাংক কলোনি মহল্লার বাসিন্দা আব্বাস হওলাদার গণমাধ্যমকে জানান, বাসাবাড়িতে সারাদিনে দুই ঘন্টাও ঠিকমতো গ্যাস পাওয়া যায় না। তিনি দাবী করেন গ্যাসের চাপ এতটাই কম থাকে যে পানিও গরম করা করা যায় না। অথচ আমাদের নিয়মিত গ্যাসের বিল পরিশোধ করতে হচ্ছে। এ সংকট নিরসনে অনতিবিলম্বে তিতাস গ্যাস কতৃর্পক্ষসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।
ঢাকা জেলার ৭ম বার সেরা করদাতা আলহাজ্ব মোঃ তানভীর আহমেদ রোমান ভু্ঁইয়া জানান, আমরা নিয়মিত গ্যাসে বিল দিচ্ছি, আবাসিক বাসা বাড়িতে ও ভাড়া বাসায় গ্যাস না থাকায় রুম বা কক্ষ ছেড়ে ভাড়াটিয়া চলে যাচ্ছে, বেশিরভাগ বাসায় রুম খালি থাকায় অনেক বাড়িওয়ালা ব্যাংকের কিস্তি দিতে পারছেন না। তিনি আরো বলেন, আমি যে বাড়িতে বসবাস করি সেখানেও গ্যাস নাই। গ্যাসের সিলিন্ডার বোতলের দাম বৃদ্ধি করায় মানুষ বিপাকে পড়েছে, তিনি আরো বলেন, দেশ ও জাতির কল্যাণের চিন্তা করে সরকারের এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া দরকার।
সাভার তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী আবু সালেহ খাদেম উদ্দিন গণমাধ্যমকে জানান, জাতীয় পর্যায়ে গ্যাস সরবরাহ কম হওয়ায় এ অ লের আবাসিক এলাকাগুলোতে চাহিদা অনুযায়ী গ্যাস বিতরণ করা যাচ্ছে না। আমরা চেষ্টা করছি পরিস্থিতি স্বাভিক করতে একটু সময় লাগবে। গ্যাসের চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে যে পার্থক্য এর জন্যই সমস্যাটা বেশি। জানা গেছে, কিছু এলাকার মেম্বার ও চেয়ারম্যানের লোকজন অবৈধ ভাবে তিতাস গ্যাস ব্যবহার করছে, এর কারণেও বৈধ গ্রাহকদের পাইপ লাইনে গ্যাস থাকে না। উক্ত বিষয়ে ধারাবাহিক ভাবে সংবাদ প্রকাশ করা হবে। পর্ব—১।