হেলাল শেখঃ ঢাকা—১৯ আসনে হাত পাখা মার্কা এমপি প্রার্থী ফারুক খানের বিরুদ্ধে আশুলিয়ার ইয়ারপুর ইউনিয়নের পূর্ব নরসিংহপুরে মার্কেট ও বাড়ি ঘর, জমি দখলের একাধিক অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানাধীন ইয়ারপুর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের পূর্ব নরসিংহপুরের মৃত হাজী ফৈজদ্দিন ভুঁইয়া’র ছেলে আব্দুল মান্নান ভুঁইয়া গংদের জমি খতিয়ান নং ২২১৩, জোত নং ২২১২, দাগ নং ২৭/৩০, জমির পরিমাণ ১৬০০, ৫৩০০=৬৯০০। এই জমির ভেতর ৯৯ শতক (৩ বিঘা জমি) দখল করে স্থাপনা তৈরি করেছেন স্থানীয় ফারুক খান গংরা।
সরেজমিনে গিয়ে ঘটনাস্থলে দেখা যায়, ১। ইয়াকুব আলী খান গং, ২। মোহাম্মদ ফারুক খান গং, ৩। মোঃ সিদ্দিক খান গং একটি সাইনবোর্ড দিয়েছেন, তারা লিখেছেন যে, পৈত্রিক সুত্রে এই মার্কেট ও বাড়ির মালিক, অথচ বর্তমানে বি. এস দাগ নং ১৭০৫ এবং ১৭০৬। প্রকৃতপক্ষে এই জমির মালিক কে বা কারা জানতে চাইলে মোহাম্মদ ফারুক খান গং বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন, এক সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই মার্কেট ও বাড়ির দখলদার হিসেবে মালিক তিনি। ফারুক খান গণমাধ্যমের সামনে স্বীকার করে বলেন, আমাদের এই মার্কেট ও বাড়ি নিয়ে আদালতে দুইপক্ষের একাধিক মামলা রয়েছে। উক্ত মার্কেট ও বাড়ির জমির এস. এ,/আর. এস জোত এর কাগজপত্র দেখাতে বললে তিনি তা দেখাতে পারেননি। তবে তার মাথার উপর দেখা যায়, তিনি একজন এমপি প্রার্থী।
এ ব্যাপারে স্থানীয় লোকজন অনেকেই বলেন, ঢাকা—১৯ এর সাভার ও আশুলিয়া আসনে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর সম্ভাব্য প্রার্থী হাত পাখা মার্কার মোহাম্মদ ফারুক খান। তিনি এমপি না হয়েই কাগজপত্র ছাড়া মানুষের মার্কেট ও বাড়ি ঘর জমি দখল করে বসে আছেন কিন্তু এমপি হলে আরো যে, কি করবে তার কোনো ধারণা নেই এলাকাবাসীর।
এ বিষয়ে আশুলিয়ার ইয়ারপুর ইউনিয়নের (জিরাবো) পূর্ব নরসিংহপুরের মৃত হাজী ফৈজদ্দিন ভুঁইয়ার ছেলে ১। ছায়েদ আলী ভুঁইয়া, ২। আব্দুল বারেক ভুঁইয়া, ৩। আব্দুল মান্নান ভুঁইয়া, ৪। আপেল মাহমুদ ভুঁইয়া, ৫। আব্দুল কুদ্দুস ভুঁইয়া, ৬। মোঃ জামাল ভুঁইয়া গণমাধ্যমকে বলেন, ৯৯ শতক জমির উপর মার্কেট ও বাড়ি ঘর আমাদের। আমরা কোনো সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ নয়, এই জমির সকল কাগজপত্র আছে আমাদের। ফারুক খান গংদের সাথে আমাদের মামলা চলছে, সেই মামলার রায় পেয়েছি আমরা, সূত্র পিটিশন মামলা নং ১৬৯/২০০৬। এই মামলার ১ম পক্ষ হাজী আঃ মান্নান বনাম মোঃ সিদ্দিক খা গং। আব্দুল মান্নান ভুঁইয়া গং জানান, এই মার্কেট ও বাড়ির জমির মামলার রায় আমাদের পক্ষে আসছে ১৪/০৮/২০২৩ইং তারিখ। আমাদের সকল কাগজপত্র আছে তবুও ফারুক খান গং কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সহযোগিতায় আমাদের জমি জবরদখল করে রাখছে।
আশুলিয়ার ৪নং ইয়ারপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৬নং ওয়ার্ডের মেম্বার ও ইয়ারপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ জলিল উদ্দিন (রাজন) ভুঁইয়া বলেন, আমি জনপ্রতিনিধি হয়েও ফারুক খান গংদের কাছ থেকে আমাদের মার্কেট ও বাড়ির জমি উদ্ধার করতে পারছি না, তাহলে সাধারণ মানুষ তাদের সাথে এমন কিছু করলে তারা ফারুক খান গংদের সাথে পারবে কি করে। আমি যুবলীগ করি এবং ইউপি সদস্য হয়েছি, জনগণ আমাকে ভালোবাসে বলেই আমাকে তারা ভোট দিয়ে মেম্বার নির্বাচিত করেছেন। তাই অনেকেই আমাকে নিয়ে হিংসা করেন। তিনি আরও বলেন, আমার নাম জড়িয়ে যারা অপপ্রচার চালাচ্ছে, আমি এই অপপ্রচারের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ যানাচ্ছি, তিনি আরো বলেন, এরপর যদি আমার বিরুদ্ধে কেউ অপপ্রচার চালায়, আমি তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিবো।
এ ব্যাপারে পুলিশ ও র্যাব জানায়, আদালতের আদেশ অমান্যকারী অপরাধী আর অপরাধী সে যেইহোক না কেন, কোনো অপরাধীকে ছাড় দেয়া হবে না। উক্ত ব্যাপারে ধারাবাহিক সংবাদ প্রকাশ করা হবে। পর্ব—১।