নাজমুল হোসেন, নিজস্ব প্রতিবেদক :
বন্যা-জলাবদ্ধতা সংকটে রোদের কারণে আশার আলো দেখছে লক্ষ্মীপুর জেলার মানুষ। মেঘনা নদীতে জোয়ারের সময় কিছু পানি ঢুকলেও এখন কমতে শুরু করে। আজ শনিবার (২৪ আগস্ট) লক্ষ্মীপুর জেলার বিভিন্নস্থানে দুপুরের দিকে তীব্র রোদ দেখা যায়। অন্য দিকে ভারী বর্ষণ ও জোয়ারের কারণে লক্ষ্মীপুর জেলায় জলমগ্ন হয়ে পড়েছে ৬ লক্ষাধিক মানুষ। চারদিকে পানি থই-থই। অনেক এলাকায় কোমর সমান পানি। ঘর-বাড়ির ভেতরেও পানি। লক্ষ্মীপুর সদরের রহমতখালী খাল, রামগতি, কমলনগরের ভুলুয়া নদী, রামগঞ্জের ওয়াপদা, বিরেন্দ্র খাল, রায়পুরের ডাকাতিয়া নদীসহ বিভিন্নস্থানে নদী-খাল দখল করে মাছ চাষ, সেতু-কালভার্ট-রাস্তা, দোকানপাটসহ স্থাপনা নির্মাণ করায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। ও অনেক সেতু-কালভার্ট-রাস্তা নষ্ট হয়ে গেছে। জমা পানি নামতে বেগ পেতে হচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সদর, রায়পুর, রামগঞ্জ, রামগতি ও কমলনগর উপজেলার বিভিন্নস্থানে খাল-নদীর অবৈধ স্থাপনা সরাতে স্থানীয় প্রশাসন মাঠে নেমেছেন। জলাবদ্ধতা নিরসনে এলাকার ছাত্র ও সচেতন লোকজনকে সঙ্গে নিয়ে বাঁধ অপসারণ করা হচ্ছে। সকাল থেকে রায়পুরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহেদ আরমানের নেতৃত্বে ডাকাতিয়া নদীর মহিলা কলেজ, ল্যাংড়া বাজার, পানপাড়া রোড এলাকায় অভিযান চালানো হয়। অন্য দিকে লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসনের একজন কর্মকর্তা জানান, লক্ষ্মীপুরে স্থায়ী ও অস্থায়ী ১’শ ৮৯টি সাইক্লোন শেল্টারগুলোও প্রস্তুত করে রাখা হয়। জলাবদ্ধতাসহ চলমান সংকট নিরসনে ইউএনও-এসিল্যান্ডকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তারা গত ৩ দিন ধরে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় অভিযান চালাচ্ছেন। নদী-খাল সব ধরনের প্রতিবন্ধকতা সরিয়ে পানি প্রবাহ স্বাভাবিক রাখতে এ অভিযান অব্যাহত থাকবে। স্থানীয় লোকজন বলেন, কয়েকদিনের ভারী বর্ষণে আমরা জলমগ্ন। ১৯৯৮ সালের বন্যার সময় এমন হয়েছে। আর এখন দেখলাম। তবে আজ যেভাবে রোদ হচ্ছে, এতে আমরা আশাবাদী। অল্পসময়ের মধ্যে পানি নেমে যাওয়ার আশা করছি। রায়পুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহেদ আরমান বলেন, আমরা নদীর ৩টি স্থানে প্রতিবন্ধকতা অপসারণ করেছি। আমাদের এ অভিযান চলবে। সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আরিফুর রহমান বলেন, ৩ দিন ধরে মান্দারীসহ বিভিন্নস্থানে খাল-নদীর অবৈধ বাঁধ উচ্ছেদ করা হচ্ছে। মানুষের শুকনো খাবারসহ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদ-উজ জামান খান বলেন, লক্ষ্মীপুরে আর ভারী বৃষ্টি না হলে চলমান জলাবদ্ধতার সংকট দ্রুত সময়ের মধ্যে কেটে যাওয়ার আশা করছি।