নওগাঁ প্রতিনিধি : ইট ও মাটি দিয়ে দুই দিন ধরে নিজেরাই পরিশ্রম করে গড়ে তোলে শহীদ মিনার। সেই শহীদ মিনারে বুধবার সকালে শহীদদের স্মরণে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানালো কোমলমতি শিশুরা।
নওগাঁ সদর উপজেলার কুমাইগাড়ি ( মন্ডলপাড়া) স্থানীয় একটি স্কুলের চতুর্থ শ্রেণীর শিক্ষার্থী মুন্নি আক্তার তাদের বাড়ির সামনে কয়েকজন মিলে নির্মাণ করে এই মাটির শহীদ মিনার। এই মহল্লা এবং তাদের স্কুলে নেই কোন শহীদ মিনার। তাদের জমানো টাকা দিয়ে ফুল কিনে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন মুন্নি আক্তার, খাতিজা আক্তার,হুজাইফাসহ বেশ কয়েজন শিশু শিক্ষার্থী।
কথা হলে শিশু শিক্ষার্থী মুন্নি আক্তার বলেন, আমাদের চকবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নেই। যার কারনে আমরা শ্রদ্ধা নিবেদন করতে পারিনা স্কুলে। তাই আমিসহ কয়েকজন মিলে দুই দিন ধরে মাটি ও ইট দিয়ে এই শহীদ মিনার তৈরি করে শ্রদ্ধা নিবেদন করলাম।
খাতিজা আক্তার ও মুহাম্মদ হুজাইফা নামের আরও দুই শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের স্কুলে শহীদ মিনার না থাকার কারনে সেখানে ফুল দিতে পারিনা। তাই আমরা পরিকল্পনা করলাম নিজেরাই শহীদ মিনার তৈরি করবো। দুই দিন লেগেছে তৈরি করতে। আর আমাদের জমানো টিফিনের টাকা দিয়ে ফুল কিনেছে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালাম। আমাদের অনেক ভালো লাগছে। যারা আমাদের দেশের বাংলা ভাষার জন্য প্রাণ দিয়েছে তাদের স্মরণ করে শ্রদ্ধা জানাতে পেরে।
মমতাজ মন্ডল ও জেসমিন বেগম নামের দুই অভিভাবক বলেন, শিশুদের এমন কর্মকান্ড দেখে আমরা অনেক খুশি। তারা দেশের ভাষা আন্দোলন ও এর ইতিহাস সম্পর্কে ছোট থেকেই জানছে।
শিশুদের এমন আয়োজন ও শিশুদের তৈরি এই শহীদ মিনার দেখে বিশ্বাস করার উপায় নেই যে ছোটদের হাতে তৈরি এটি। মাটির তৈরি হলেও এর কারুকাজ অনেক সুন্দর। উপলব্ধিবোধ হতে পারে অনেকের জন্য অনুকরণীয়।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, জেলার ১১টি উপজেলায় ১ হাজার ৩৭৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে। এরমধ্যে শহীদ মিনার আছে মাত্র ২৪১টিতে। শহীদ মিনার নেই ১ হাজার ১৩৩টিতে।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, জেলায় মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে সরকারি ও বেসরকারি মোট ৯২৫টি স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আছে। এর মধ্যে ৫৭৩টিতে শহীদ মিনার নেই।