নাজমুল হোসেন, নিজস্ব প্রতিবেদক :
জরাজীর্ণ ভবনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলছে লক্ষ্মীপুর জেলার কমলনগর সাব-রেজিস্ট্রার ভবনের কার্যক্রম।
ভবনের বিভিন্ন অংশে বড় বড় ফাটল দেখা দিয়েছে, ছাদ থেকে খসে পড়ছে পলেস্তারা। বেরিয়ে গেছে ভিমের রড। এতে বর্ষার পানিতে গুরুত্বপূর্ণ দলিল ও নথিপত্র নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। এমতাবস্থায় ভবনটি সংস্কার বা নতুন ভবন নির্মাণের দাবি সংশ্লিষ্টদের।
আজ রোববার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, লক্ষ্মীপুর জেলার কমলনগর উপজেলার সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয় ভবনটি যেকোনো মুহূর্তে ধসে পড়ার আশঙ্কায় রয়েছে। ভবনে ছাদের পলেস্তারা খসে ঢালাইয়ের রড বের হয়ে গেছে। কার্যালয়টির দেয়ালে বড় বড় ফাটল। ছাদের ভিমেও ফাটল ধরেছে। সিলিং ফ্যানের হুকগুলো মরিচা ধরে নষ্ট হয়ে গেছে। ভবনের অনেক স্থানে মেঝের ঢালাই উঠে গেছে। বিদ্যুৎ লাইনও ঝুঁকিপূর্ণ। বৃষ্টি শুরু হলে টেবিলের ওপর পলিথিন দিয়ে রক্ষা করা হয় প্রয়োজনীয় দলিল-দস্তাবেজ ও কাগজপত্র। এভাবেই ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের। এমতাবস্থায় ঝুঁকি নিয়েই চলছে সাব-রেজিস্ট্রি কার্যালয়ের কার্যক্রম।
জানা গেছে, অফিসে প্রতিদিন কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ জমি-সংক্রান্ত কাজে প্রায় শতাধিক মানুষ যাতায়াত করে। রামগতি গিয়ে আগে মানুষ সাবরেজিস্টার এর কাজ করতে হতো। পরবর্তীতে ৬ নভেম্বর ২০১৩ সালে স্থাপিত হয় এই কমলনগর সাব-রেজিস্টারটি। ২০২৪ সালে রাজস্ব আদায় হয় ৯কোটি ৫১লাখ ৪৮হাজার ৬১৫। যেকোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।
রেজিস্ট্রার অফিসের কর্মচারী হাফিজ উল্যা বলেন, বৃষ্টির পানি থেকে কার্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র রক্ষা করার জন্য ভবনের ভেতরের অংশের ছাদে ও ফাইলের ওপর পলিথিন দিয়ে রাখা হয়। সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের ভেতরেই দলিল লেখকরাও বসেন।
নকলনবিশ নাঈমুল আবেদিন রুপম বলেন, বৃষ্টি হলে ভবনের ছাদ চুঁইয়ে মেঝেতে পানি পড়ে। আর মাথার ওপর পলিথিন তো থাকেই। আমরা অনেক সময় অফিসের কাগজ রক্ষা করতে গিয়ে নিজেরাই ভিজে যাই।
দলিল লেখক খোরশেদ আলম রতন বলেন, ভবনটির অবস্থা খুবই নাজুক। যেকোনো মুহূর্তে ধসে পড়তে পারে। বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আগেই দ্রুত মেরামত করা উচিত।
কমলনগর উপজেলার সাব-রেজিস্ট্রার মোরশেদ আলম বলেন, পরিত্যক্ত এবং ঝুঁকিপূর্ণ এ ভবনটিতে আমরা কর্মচারী চরম ঝুঁকি নিয়ে সরকারি দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি।
লক্ষ্মীপুর জেলা রেজিস্ট্রার সাবিকুন নাহার বলেন, উপজেলার সাব-রেজিস্ট্রার অফিস ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় কার্যক্রম চলছে। এ সমস্যা দ্রুত সমাধান হবে বলে আশা করছি। জেলার সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের তথ্য মতে উপজেলা থেকে প্রতিবছর প্রায় কোটি টাকা রাজস্ব সরকারি কোষাগারে যায়। আমরা দেখছি ভাড়া ভবন পাই কিনা। কিনবা উপজেলা পরিষদের ভিতরে কোনো ভবন খালি আছে কিনা। আশা করছি খুব দ্রুত এই সমস্যা সমাধান হবে।