পিয়াস ইকবাল নুর (২৩) অর্নাস ২য় বর্ষে কবি নজরুল ইসলাম কলেজে পড়াশুনা করত।সূত্রঃ মুগদা থানার মামলা নং- ০৯, তারিখ- ০৮/০৩/২০২৪ খ্রিঃ, ধারা- ১৪৩/১৪৪/৩২৩/৩২৫/ ৩২৬/৩০৭/৩০২/৩৪ পেনাল কোড। পিয়াস ইকবাল নুর (২৩) তার বন্ধু মোঃ শামীম হোসেন (২৩) ও তাদের বন্ধু ফাতিন ইসরাক মাহির (২২) এক সাথে মুগদা এলাকায় চলাফেরা করত। ভিকটিমের বন্ধু ফাতিন ইসরাক মাহির (২২) গত ১৮/০২/২০২৪ খ্রিঃ তারিখ ১ নং আসামী মোঃ আমির উদ্দিন আহম্মেদ অনিক (২২) এর নিকট হইতে ১ টি পুরাতন রিয়েলমি মোবাইল সেট, ৪,৩০০/- টাকা বাকিতে ক্রয় করেন। মোবাইলের মূল্য ২৫/০২/২০২৪ খ্রিঃ তারিখ পরিশোধ করার কথা ছিল কিন্তু আর্থিক সমস্যার কারনে উক্ত তারিখে ক্রয়কৃত মোবাইলের টাকা পরিশোধ করতে পারেন নাই। ০৭/০৩/২০২৪ খ্রিঃ তারিখ রাত্র অনুমান ০৮.৩০ ঘটিকার সময় ১ নং আসামী মোঃ আমির উদ্দিন আহম্মেদ অনিক (২২), ২ নং আসামী মোঃ ফরিদ আহম্মেদ রাব্বী (২৫), ৩ নং আসামী মোঃ মারুফ উল্লাহ অর্নব (৩২), ৬ নং আসামী মিরাজ (২০) ভিকটিমের বন্ধু ফাতিন ইসরাক মাহির (২২) এর বর্তমান ঠিকানার বাসায় মোবাইলের টাকা চাওয়ার জন্য যায়। ফাতিন ইসরাক মাহির (২২) কে বাসায় না পেয়ে আসামীগন তার মা ফেরদৌসি আক্তারের নিকট মোবাইল বিক্রির পাওনা টাকা দাবি করে তখন ফেরদৌসি আক্তার বলেন আগামীকাল তোমাদের মোবাইলের টাকা পরিশোধ করা হবে। এই কথা বলার পর আসামীরা চলে যায়। তখন ফাতিন ইসরাক মাহির (২২) তার বন্ধু শামীম ও ভিকটিম পিয়াস ইকবাল নূর কে বিষয়টি জানায়। তখন তারা ১ নং আসামী মোঃ আমির উদ্দিন আহম্মেদ অনিক (২২), ২ নং আসামী মোঃ ফরিদ আহম্মেদ রাব্বী (২৫), ৩ নং আসামী মোঃ মারুফ উল্লাহ অর্নব (৩২) কে মুগদা থানাধীন উত্তর মুগদা, লিটল এ্যাঞ্জেল স্কুলের গলিতে পাইয়া ভিকটিম ও তার বন্ধু শামীম এবং ফাতিন ইসরাক মাহির মোবাইলের টাকা চাওয়ার জন্য বাসায় যাওয়ার কারন জিজ্ঞাসা করলে তাদের মধ্যে তর্ক-বির্তক ও কথা-কাটাকাটি হয়। পরবর্তীতে ০৭/০৩/২০২৪ খ্রিঃ তারিখ রাত্র অনুমান ১০.৪০ ঘটিকার সময় মুগদা থানাধীন ৪৫/১/সি উত্তর মুগদা লিটল এ্যাঞ্জেল লানিং হোম নামক স্কুলের সামনে পাকা রাস্তার উপর ভিকটিম পিয়াস ইকবাল নূর (২৩) ও তার বন্ধু মোঃ শামীম হোসেন (২৩)'কে আসামী ১। মোঃ আমির উদ্দিন আহম্মেদ অনিক (২২), ২। মোঃ ফরিদ আহম্মেদ রাব্বী (২৫), ৩। মোঃ মারুফ উল্লাহ অর্নব (৩২), ৪। খালেদ (১৮), ৫। আরিফ (২০), ৬। মিরাজ (২০), সহ অজ্ঞাতনামা কয়েক জন দেখতে পেয়ে বেআইনী জনতাবন্ধে বেসবল খেলার স্টিক, লাঠি, ধারালো চাকু ও দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রসহ একযোগে আক্রমন করে এলোপাথারি মারপিট করতে থাকে।
৩ নং আসামী মোঃ মারুফ উল্লাহ অর্ণব (১২) ভিকটিমকে চর ও কিলঘুষি মারতে থাকে। ৪ নং আসামী খালেদ (১৮), ৫ নং আসামী আরিফ (২০) ও ৬ নং আসামী মিরাজ (২০) ভিকটিম ও তার বন্ধুকে বেসবল খেলার স্টিক ও লাঠি দিয়ে এলোশাঙ্কারী ভাবে মারপিট করতে থাকে। মারপিটের এক পর্যায়ে ১ নং আসামী মোঃ আমির উদ্দিন আহম্মেদ অনিক (২২) ভিকটিম পিয়াস ইকবাল নূর (২৩) কে হত্যার উদ্দেশ্যে তাহার হাতে থাকা ধারালো চাকু দিয়ে পিঠের ডান পার্শ্বের উপরের দিকে গুরুতর আঘাত করে, এতে ভিকটিমের পিঠে ২ ইঞ্চি চওড়া গভীর রক্তাক্ত জখম করে এবং ভিকটিমের বন্ধু মোঃ শামীম হোসেন (২৩) কে ২ নং আসামী মোঃ ফরিদ আহম্মেদ রাব্বী (২৫) ধারালো চাকু দিয়ে আঘাত করে ডান কাধে ৪ ইঞ্চি পরিমান গভীর রক্তাক্ত জখম করে। ভিকটিম পিয়াস ইকবাল নূর (২৩) কে ধারালো চাকু দিয়ে পিঠের ডান পার্শ্বের উপরের দিকে আঘাতের ফলে ক্ষত স্থান হইতে প্রচুর পরিমানে রক্তক্ষরন হতে থাকে। ভিকটিম পিয়াস ইকবাল নূর (২৩) ও তার বন্ধু মোঃ শামীম হোসেন (২৩) রাস্তায় লুটিয়ে পড়ার পরে আসামীরা ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়। ভিকটিম ও তার বন্ধুর ডাক চিৎকারে আশেপাশের লোকজন আগাইয়া আসিয়া ভিকটিম পিয়াস ইকবাল নূর (২৩) ও তার বন্ধু মোঃ শামীম হোসেন (২৩) কে প্রথমে মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কর্তব্যরত ডাক্তার ভিকটিম ও তার বন্ধুর শারিরীক অবস্থার অবনতি দেখিয়া দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। তাৎক্ষনিকভাবে ভিকটিম ও তার বন্ধু মোঃ শামীম হোসেনকে তাদের বন্ধু ফাতিন ইসরাক মাহিরসহ আশপাশের লোকজন ও মুগদা থানা পুলিশের সহায়তায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কর্তব্যরত ডাক্তার পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে ভিকটিম পিয়াস ইকবাল নূর (২৩) কে ০৭/০৩/২০২৪ খ্রিঃ তারিখ রাত্র অনুমান ১১.৪০ ঘটিকার সময় মৃত ঘোষনা করে এবং ভিকটিমের বন্ধু মোঃ শামীম হোসেন (২৩) বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাহালে ভর্তি অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছে। ভিকটিমের বাবা মোঃ ইকবাল হোসেন (৫৭) বাদী হয়ে অত্র মামলা দায়ের করেন। মামলা রুজুর সাথে সাথেই ইন্সপেক্টর (তদন্ত) জনাব কামরুল হুসাইনের নেতৃত্বে মুগদা থানার একাধিক চৌকস টিম আসামী গ্রেফতারের জন্য মাঠে নামে এবং মামলা রুজুর ১ ঘন্টার মধ্যে এজাহার নামীয় ৩ নং আসামী মোঃ মারুফ উল্লাহ অর্নব (৩২) কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় এবং উক্ত আসামী বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করে। পরবর্তীতে ইং ১১/০৩/২০২৪ তারিখ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এজাহার নামীয় ৪,৫ এবং ৬ নং আসামী যথাক্রমে খালেদ (১৮), আরিফ (২০) ও মিরাজ (২০) দের গ্রেফতার করেন। বিজ্ঞ আদালতে উক্ত আসামীদের সোপর্দ করলে আসামী খালেদ (১৮) ও মিরাজ (২০) বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। ঘটনার পর হতে মামলার মূল আসামী মোঃ আমির উদ্দিন আহম্মেদ অনিক (২২) ও মোঃ ফরিদ আহম্মেদ রাব্বী (২৫) আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখকে ফাঁকি দিয়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান নেয়। এবং ঘন ঘন স্থান পরিবর্তন করে আত্মগোপনে থাকে।
ইং ১৭/০৩/২০২৪ তারিখ হায়াতুল ইসলাম খান পিপিএম-সেবা, উপ-পুলিশ কমিশনার (মতিঝিল বিভাগ), ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ, ঢাকা সার্বিক তত্ত্বাবধানে, জনাব গোবিন্দ চন্দ্র পাল, অতিঃ উপ-পুলিশ কমিশনার (উপ-পুলিশ কমিশনার পদে পদ্দোন্নতি প্রাপ্ত), সবুজবাগ জোন, ডিএমপি, ঢাকা, জনাব শোভন চন্দ্র হোড়, সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার (সবুজবাগ জোন)ডিএমপি, তারিকুজ্জামান, অফিসার ইনচার্জ মুগদা থানা, এর সার্বিক নির্দেশনায় ইন্সপেক্টর (অপারেশন) জনাব আশীষ কুমার দেব এর নেতৃত্বে সঙ্গীয় এসআই (নিরস্ত্র)/ মোঃ আহসান উল্লাহ, এসআই (নিরস্ত্র)/মিনহাজুল হক আকিলসহ মুগদা থানার একটি চৌকস টিম তথ্য প্রযুক্তি ও লোকাল সোর্সের সহায়তায় তাদের অবস্থান সনাক্ত করে অদ্য ১৭/০৩/২০২৪ ইং তারিখ ভোরে লক্ষ্মীপুর জেলার চন্দ্রগঞ্জ থানার দুর্গম এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে মামলার ১ নং এজাহার নামীয় আসামী মোঃ আমির উদ্দিন আহম্মেদ অনিক (২২) ও ২ নং এজাহার নামীয় আসামী মোঃ ফরিদ আহম্মেদ রাব্বী (২৫) কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। থানার রেকর্ড পত্র পর্যালোচনায় এজাহার নামীয় ২ নং আসামী মোঃ ফরিদ আহম্মেদ রাব্বী (২৫) এর বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে মাদকসহ ২ টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে মর্মে জানা যায়। তাছাড়া হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ১টি বাঁশের লাঠি, ১টি বেসবল খেলার স্টিক, ১টি রক্তমাখা চাকু উদ্ধার পূর্বক জব্দ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে এজাহার নামীয় ৪ জন আসামীকে গ্রেফতার করে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃত আসামীদের নাম ঠিকানাঃ
১। মোঃ আমির উদ্দিন আহম্মেদ অনিক (২২), পিতা- মোঃ আলাউদ্দিন আহম্মেদ, মাতা-নাজমা বেগম, স্থায়ী ঠিকানা-সাং- হরিসপুর, থানা-হাতিয়া (স্বন্দীপ) জেলা-চট্টগ্রাম, বর্তমান-সাং-৮৬/৩ উত্তর মুগদা, মধ্য মসজিদ গলি, মোশারফ সাহেবের বাড়ী, ৫ম তলা, আরব বেকারীর গলি মসজিদের পার্শ্বে, থানা-মুগদা, ঢাকা।
২। মোঃ ফরিদ আহম্মেদ রাব্বী (২৫), পিতা-মোঃ আব্দুর রহিম, মাতা-ফরিদা বেগম, ঠিকানা-বাসা নং-৩৫ উত্তর মুগদা, ঝিলপাড়, থানা-মুগদা, ঢাকা।