হেলাল শেখ
৫ বছরের প্রণয়কে বিয়েতে রূপ দিতে সূদুর ইউরোপ থেকে বাংলাদেশে ছুঁটে এসেছেন সাভারের যুবক শামীম আহমেদের সাথে সাইপ্রাসের নাগরিক আন্থি তেলেবান্থু তরুণী। কয়েক হাজার মাইলের দুই দেশের দূরত্ব যেন ভালোবাসার টানে সাতসমুদ্র পারি দিয়ে অবশেষে বিবাবহ-বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন। এরই মধ্যে শ্বশুড়বাড়ি, আত্মীয়স্বজন আর প্রতিবেশীদের মন জয় করে নিয়েছেন ভিনদেশী এই নারী। পরদেশী এলাকার বউ পেয়ে দারুন খুশি শামীমের পরিবারও।
রবিবার (৩ডিসেম্বর) সকালে আশুলিয়ার গাজীরচট আয়নাল মার্কেট এলাকায় মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান শামীমের স্ত্রীকে ঘিরে চলছে উৎসব। আত্মীয়স্বজন আর পাড়াপ্রতিবেশীরা ছুঁটে আসছেন ভীনদেশী বউকে একবার দেখতে।
জানা যায়,গত ২৭ নভেম্বর আশুলিয়ায় শামীমের বাড়িতে ছুঁটে আসেন সাইপ্রাসের তরুণী আন্থি তেলেবান্থু। ৩০ নভেম্বর ঢাকা জজকোর্টে বাংলাদেশের আইন অনুসারে বিয়ে করেন আন্থি ও শামীম। স্টুন্ডেন্ট ভিসায় ২০১৫ সালে সাইপ্রাসে চলে যায়। সেখানে সিডিএ কলেজে ভর্তি হওয়ার পর লেখাপড়ার পাশাপাশি একটি প্রতিষ্ঠানে পার্টটাইম চাকরি নেই শামীম। একই প্রতিষ্ঠানে কাজের সুবাদে আন্থির সাথে পরিচয় হয় তাদের দুজনের। একসময় দুইজনের সম্পর্ক গড়ায় প্রেমে।
আন্থির সাথে তার পরিচয় ও প্রণয়ের বিষয়ে শামীম আহমেদ বলেন, সাইপ্রাসের লিমাসোল শহরে আন্থির বাসায় আমার যাওয়া-আসা শুরু হয়।। ওর পরিবারের সাথেও আমার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয়। এরপর ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে আসলে আমি দেশে ফিরে আসি। তারপরও আন্থি এবং আমার মধ্যে অনলাইনে যোগাযোগ হতো। আমার পরিবারের সাথে ভিডিও কলে কথা বলতো। অনেক আগে থেকেই সে বাংলাদেশে আমার বাড়িতে আসার জন্য উদগ্রীব থাকতো। এরপর গত ২৭ নভেম্বর সে বাংলাদেশে চলে আসে। উভয় পরিবারের সম্মতিতে আমরা দুজন গতকাল ঢাকা জজকোর্টে বিবাহ-বন্ধনে আবদ্ধ হই। আমার পরিবারের সাথে আন্থি নিজেকে মানিয়ে নিয়েছে। আটদশটা বাঙ্গালী বউদের মতোই সবার সাথে মিশতেছে। তার কথায় বাঙ্গালী বউ হওয়ার ইচ্ছা পূরণ হয়েছে। পরিবার ও আত্মীয়স্বজন সবাইকে মাতিয়ে রাখছে সে।
এব্যাপারে সাইপ্রাসের তরুণী আন্থি তেলেবান্থু বলেন,আমরা দুজন একসাথে কাজ করেছি। তারপর বন্ধু হয়েছি এবং আমি তাকে ব্যক্তিগত ভাবে একজন ভালো চরিত্রের মানুষ হিসেবেই জানি। সে অসহায় মানুষদের সাহায্য করতে পছন্দ করে। এসব থেকেই আস্তে আস্তে আমি তার প্রেমে পড়ে যাই। আমার পরিবার শামীমকে অনেক পছন্দ করে। তারাও আমাদের এই সম্পর্ককে মেনে নিয়েছে। আমি বাংলাদেশের মানুষের আতিথীয়তায় মুগ্ধ।
শামীমের চাচা ফরিদ উদ্দিন বলেন, বিদেশী মেয়ে হলেও ওর সাথে আমাদের পারিবারিক সম্পর্ক হয়ে গেছে। গত তিন দিন ধরে যখনই সে আমার সামনে আসছে ঘোমটা পরে আসছে, বাঙ্গালি মেয়েদের মতো। সে আমাদের মতোই শাকসবজি, তরকারি খাচ্ছে। পূত্রবধূকে নিয়ে কোন সমস্যা পরিবারে নাই।