নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
ঢাকা, সোমবার:
বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও গভীর করতে বাংলাদেশের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন ২১ প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। আজ ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় চীনের ইউনান প্রদেশের গভর্নর ওয়াং ইউবোর সঙ্গে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে তিনি এ অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
অধ্যাপক ইউনূস গভর্নর ইউবোর প্রথম বাংলাদেশ সফরকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “এটা কেবল শুরু। আমরা এত কাছাকাছি, তবুও এত দূরে। আসুন, এ পরিস্থিতি বদলে ফেলি।” তিনি আরও বলেন, “আমরা ভালো প্রতিবেশী হতে চাই, তবে তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ, খুব ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী হতে চাই।”
চীনে তাঁর সাম্প্রতিক সফরের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “এই সফর ছিল দুই দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।” তিনি চীনের উষ্ণ আতিথেয়তার প্রশংসা করেন এবং প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে সম্পর্ক উন্নয়নে উৎসাহব্যঞ্জক মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ জানান।
বৈঠকে গভর্নর ওয়াং ইউবো বলেন, “আমার এই সফরের উদ্দেশ্য হলো আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদার করা। ইউনান দক্ষিণ এশিয়ার জন্য চীনের উন্মুক্ত কেন্দ্র হিসেবে কাজ করতে প্রস্তুত।”
বৈঠকে যুব বিনিময়, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ও বাণিজ্যসহ বিভিন্ন যৌথ উদ্যোগ নিয়ে আলোচনা হয়। গভর্নর ইউবো জানান, ইউনান প্রদেশে একটি চীনা ব্যাংক ইতোমধ্যে অধ্যাপক ইউনূস প্রবর্তিত ক্ষুদ্রঋণ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে এবং অনেকেই এর সুফল পাচ্ছেন।
তিনি পেশাগত প্রশিক্ষণ, ডিজিটাল ও ভাষা শিক্ষা, সামুদ্রিক খাদ্য, আম এবং অন্যান্য কৃষিপণ্য খাতে সহযোগিতা ও বাণিজ্য সম্প্রসারণের প্রস্তাব দেন।
অধ্যাপক ইউনূস এসব প্রস্তাবে সমর্থন জানিয়ে বলেন, “আপনি যা বলেছেন—স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বাণিজ্য বা প্রশিক্ষণ—আমরা সবকিছুর সঙ্গে একমত। এগুলো আমরা আগের চেয়ে দ্রুত বাস্তবায়ন করতে চাই।”
বৈঠকে স্বাস্থ্যসেবাকে মূল অগ্রাধিকার খাত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। কুনমিংয়ের চারটি হাসপাতালে বাংলাদেশি রোগীদের জন্য চিকিৎসা সেবা চালুর উদ্যোগকে স্বাগত জানান অধ্যাপক ইউনূস।
বর্তমানে চীনে ৪০০-এর বেশি বাংলাদেশি শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত রয়েছে উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস জানান, এই সংখ্যা আরও বাড়াতে উদ্যোগ নেওয়া হবে।
দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ৫০তম বার্ষিকী উপলক্ষে অধ্যাপক ইউনূস পারস্পরিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা ও নতুন সম্ভাবনা উন্মোচনে চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মূখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।