মারুফ সরকার, প্রতিবেদক:
ভারত সরকার কর্তৃক পাসকৃত ওয়াকফ (সংশোধনী) আইন, ২০২৫-এর মাধ্যমে দেশটির প্রায় ২০ কোটি মুসলমানের ধর্মীয়, সাংবিধানিক ও মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে বলে মনে করছে বাংলাদেশ শান্তির দল (Peace Party of Bangladesh)। দলটি এক খোলা চিঠির মাধ্যমে বিশ্ব নেতৃবৃন্দ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে – যেন এই ‘বৈষম্যমূলক ও অমানবিক আইন’ বাতিলের জন্য আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ৮ এপ্রিল ২০২৫ তারিখে ভারতীয় সংসদে পাস হওয়া এই আইনটি মুসলিমদের ঐতিহাসিক ওয়াকফ সম্পত্তির ওপর সরকারি নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে মুসলিমদের ধর্মীয় ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানের স্বাধীনতা হরণ করেছে।
সংবিধান লঙ্ঘন:
আইনটি ভারতের সংবিধানের ২৫, ২৬, ২৯ ও ৩০ অনুচ্ছেদের পরিপন্থী বলে উল্লেখ করা হয়েছে। বিশেষ করে এতে ওয়াকফ বোর্ডে অমুসলিম সদস্য রাখা বাধ্যতামূলক করায় ধর্মীয় স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ হয়েছে।
ধর্ম পালনের অধিকার ক্ষুন্ন:
ওয়াকফ প্রতিষ্ঠার জন্য ৫ বছর ইসলাম ধর্মে থাকার শর্ত আরোপ করাকে ধর্মীয় বিশ্বাসের ওপর সরাসরি হস্তক্ষেপ বলা হয়েছে।
সম্পত্তি অধিগ্রহণের আশঙ্কা:
ভারতে বর্তমানে প্রায় ৮.৭ লক্ষ ওয়াকফ সম্পত্তি রয়েছে, যার মূল্য প্রায় ১২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এই আইন অনুযায়ী, সরকার যেকোনো ওয়াকফ সম্পত্তি অধিগ্রহণ করতে পারবে—যা সম্পূর্ণভাবে শরীয়াহ ও মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী।
সহিংসতা ও নির্যাতনের চিত্র:
আইন পাসের পর দেশব্যাপী মুসলিমদের ওপর হামলা, নির্যাতন, ধর্ষণ, দোকান ও বাসাবাড়িতে অগ্নিসংযোগের হাজার হাজার ঘটনার উল্লেখ রয়েছে। এমনকি ভারতের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও পুলিশও এসব ঘটনায় সম্পৃক্ত বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
অবিলম্বে বিতর্কিত ওয়াকফ আইন বাতিল ও পূর্বের আইন পুনর্বহাল করতে হবে।
জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে একযোগে কূটনৈতিক পদক্ষেপ নিতে হবে।
আগামী ৩০ দিনের মধ্যে ভারত সরকার আইনটি বাতিল না করলে, মুসলিম রাষ্ট্রগুলোতে কর্মরত ভারতীয়দের স্থায়ীভাবে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার বিষয়ে বিবেচনা করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশ শান্তির দল মনে করে, এই আইন ভারতের মুসলিমদের অস্তিত্বের জন্য সরাসরি হুমকি। বিশ্ব মানবাধিকার সংস্থা, ওআইসি ও আন্তর্জাতিক মিডিয়া সংস্থাগুলোর প্রতি ভারতের এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে মুখ খোলার অনুরোধ জানানো হয়েছে।