1. admin@sokalerbangla.com : সকালের বাংলা :
বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৩৪ অপরাহ্ন
শিরবাম:
রাণীশংকৈলে আমন ধানের বাম্পার ফলন ঘরে তুলতে ব্যাস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা লক্ষ্মীপুরে সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি কামাল গ্রেপ্তার সিরাজগঞ্জে মাশরুমের গুরুত্ব ও উৎপাদন কৌশল বিষয়ক কৃষক-কৃষাণী প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত  কোডেকের উ‌দ্যোগে কৃষি উপকরণ বিতরণ রতনকান্দি ও বাগবাটি ইউপিতে সঠিকভাবে খাদ্যবান্ধব চাল বিতরণ জন্য পরিদর্শন করেন,জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি নাজমুল হাসান তালুকদার রানা  রাণীশংকৈলে রাস্তা সংস্কার ও প্রশস্তকরণের দাবিতে এলাকাবাসীর মানববন্ধন  ২ নং গাজীপুর ইউনিয়ন বিএনপি ও অঙ্গসংগঠন কতৃক আলোচনা সভা। শ্রীপুরে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মিনারা বেগমের অপসারণের দাবিতে বিএনপি ও জনতার অবস্থান কর্মসূচি। কালীগঞ্জে ছেলের শোকে মায়ের মৃত্যু, বড়বোন হাসপাতালে রাজধানীর কদমতলীতে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধগতিতে বিপর্যস্ত মানুষ

বেদে সম্প্রদায়ের বিচিত্র্যসব পেশা বৈচিত্র্যময় জীবন 

Reporter Name
  • Update Time : মঙ্গলবার, ৭ নভেম্বর, ২০২৩
  • ১৬২ Time View

শেখ খায়রুল ইসলাম স্টাফ রিপোর্টার:-এক ঘাটেতে রান্না করে অন্য ঘাটে খাই তাদের দুঃখের সীমা নাই,বলছি বেদে পরিবারের কথা।দুঃখ কষ্টে যাদের জীবন গাঁথা।জীবনের সাথে যুদ্ধ করে চলে প্রতিটি দিন।একটু সুখের আশায় সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে কঠিন পরিশ্রম।যাযাবরের মতো ঘুরে বেড়ায় বলে জীবন বৈচিত্র্যময়।স্থানভেদে হয় একেক নাম,বেঁচে থাকার জন্য বিচিত্র্যসব পেশা।বেদেদের বাহন নৌকা হলেও নদ-নদীর নব্রতা হ্রাসের কারণে অন্য বহন ও বেছে নিয়েছে তারা।জীবনকে একঘরে বন্ধি করে রাখতে চান না বলে প্রকৃতির ভালোবাসাকে স্বীকার করে নিয়েছে তারা।তাদের জীবন যুদ্ধ সম্পর্কে জানতে চাইলে,বেদে কন্যা সিমা, আছমা,কেয়া জানালেন,স্বামীদের আঁচলে বেঁধে রাখার রহস্য।পুরুষ বশে রাখতে তারা শরীরে সাপের চর্বি দিয়ে তৈরি তেল ব্যবহার করেন।তাদের বিশ্বাস এতে স্বামীরা তাদের ছেড়ে অন্য কারো কাছে যায় না।তারা জানালেন,পেশা পরিবর্তনের সুযোগ করে দিতে পারলে এই জীবন থেকে মুক্তি পেত বেদে সম্প্রদায়।তাবিজ- কবজ বিক্রি, জাদুটোনা আর সাপ খেলা দেখিয়ে জীবন সংগ্রামে টিকে থাকতে হয় তাদের।রাস্তার পাশে,ফাঁকা মাঠে বা পরিত্যক্ত জমিতে,নদীর তীরে অতিথি পাখির মতো অস্থায়ী আবাস তাদের।সময়ের আবর্তে উন্নয়ন পরিবর্তণে বেদে জীবনে নেমে এসেছে চরম দুর্দিন।নদীর রূপ বদলের সঙ্গে সঙ্গে তাদের চলার পরিধি ছোট হয়ে আসছে।অনেকেই ছাড়তে শুরু করেছে নদী।বাংলাদেশ সরকার কিংবা সমাজের উচ্চ শ্রেণির মানুষ যদি আমাদের একটু দেখতেন তাহলে আমরা খুবই ভালো করে জীবন অতিবাহিত করতে পারতাম,এমনটাই বললেন বেদে সরদার মোঃ লিটন।বেদেদের জীবন অধিকারবিহীন।শীত,ঝড়,তুফান,গরম বুকে ধারণ করে দরিদ্রতার সাথে লড়াই করে চলে বেদেদের জীবন। বাড়ি-ঘর,মাথার ওপর ছাদ,সামাজিক মর্যাদা জন্ম থেকে আজও বঞ্চিত তারা।এখানে-সেখানে ঘুরে বেড়ানো পাশাপাশি টেঁটা দিয়ে মাছ শিকার, সিঙ্গা,তাবিজ,ছাতা,পুরোনো তালা মেরামত,কবজ,সাপ ধরা,সাপের খেলা দেখানো এই নিয়ে বেদে সম্প্রদায়ের গন্তব্যহীন রাজ্যের আস্তানা বিভোর। রাস্তার ধারে,কখনও মেঠোপথের ধারে ও ফাঁকা মাঠে ছঁই বা ঝুপড়ি,মাচা, তুলে স্ত্রী,পুত্র,কন্যা নিয়ে দিন-রাত কাটে তাদের।লোকমুখে আছে ‘সবার উপর মানুষ সত্য তাহার উপর নাই’। এদেশে বেদেদের জাত প্রথার শিকার। বিশ্বে দাস প্রথা,বর্ণবাদ আজ বিলুপ্তির পথে কিন্তু এই জাতের নিত্যদিনের জীবনযাত্রা যা দরকার তা তাদের নেই। জাতের বড়াইয়ে মানুষ হলেও যাযাবর বাইদ্যা (বেদে) বলে গণ্য গাঁও-গ্রামে।

এই পরিবারের ছেলে-মেয়ে অযত্ন আর অবহেলায় বেড়ে ওঠে।শিশু- কিশোররা স্কুলে ভর্তি হওয়ার মতো মেধাসম্পূর্ণ হলেও বেদের ঘরে জন্ম নেয়াই হলো পাপ। তা না হলে তাদের ক্লাস করা কষ্ট হয় কেন?কী নির্মম নির্দয় এই সমাজব্যবস্থা।দু’বেলা দু-মুঠো খাবার জোগাড় করতে পারলেই মহাখুশি।স্বামীর,স্ত্রী সাংসারিক জীবিকার তাগিদে ছুটে বেড়াই গাঁও-গ্রামে। কপালের টিপ, চুড়ি,থালা-বাসন বিক্রি ও সাপ খেলা ও বানরের নাচ দেখিয়ে পরিবার- পরিজন নিয়ে কোনো রকমে সংসার জীবন চলে।বেদে সরদারিনী আম্বিয়া বলেন,বেঁচে থাকার নাম সংগ্রাম। আমাদের খোঁজ কেউ রাখে না, আমরা যাযাবর এটাই লোকমুখে আখ্যায়িত।স্বামী-স্ত্রী যখন জীবিকার সন্ধানে ছুটে যান তখন শিশু-ছেলে- মেয়েরা পাখির মতো বন্দিশালার দৃশ্য অবাক হওয়ার মতো।কিভাবে পথ পানে চেয়ে থাকে।মা-বাবার স্নেহ কখন মিলবে অপেক্ষার প্রহর গুনতে হয় এই সোনামণিদের। তীব্র গরমে রাতে সৌর বিদ্যুতের মাধ্যমে ইলেক্ট্রিক পাখা ব্যবহার করলেও দিনের গরমে সীমাহীন ভোগান্তি,অনাদর অবহেলায় রোগ ব্যাধিতে নিঃশেষ হয়ে যায়। এদের পাশে থাকে না সমাজের কোনো ধনী শ্রেণি,থাকে না প্রশাসনের দৃষ্টি।এই বেদে পরিবারের শিশুরা সব সময় পুষ্টিহীনতায় ভোগে। সব এলাকায় যাওয়া হলেও সচেতনতার জন্য ও জন্মনিয়ন্ত্রণ কর্মী এবং এনজিও কর্মীরা তাদের প্রতি কতটুকু সহনশীল যা খোঁজ-খবর নেন না বলে জানান ওই পরিবার।‘ছেলে হোক আর মেয়ে হোক দুটি নয় একটি হলে ভালো হয়’ সরকারের স্লোগান।না নেয়ার কারণে প্রতি পরিবারে ৭-৮ জনের মতো সন্তান জন্মায়। তাদের সন্তানরা অন্য ৮-১০ জনের মতো লেখাপড়া শিখে স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে চায়।তখন হিমশিম খেতে হয় মা-বাবার।যদি সরকারের সুদৃষ্টি থাকে তাহলে সম্ভব।ওদের চিকিৎসার জন্য তাৎক্ষণিক কোনো ব্যবস্থা নেই।তাদের বেশিরভাগ প্রকৃতির লতাপাতা,গাছ- গাছড়ার মাধ্যমে ওষুধ তৈরি করে রোগ নিরাময় করে থাকেন।প্রেম যেমন কোনো জাত বা প্রথা ও ধর্ম মানে না তেমনি জাতির কাছে উচ্চবর্ণ বা নিম্নবর্ণ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘বিলাসী’গল্পের মতো জ্ঞাতি খুড়ার চরিত্র নয়,বেদে (বাইদ্যা) হিসেবেও নয়,‘মানুষ’ হিসেবে সবার কাছে পরিচিতি পেয়ে থাক এটাই আমাদের আশা-এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved , sokalerbangla.com
Theme Customized BY LatestNews