নিজস্ব প্রতিনিধি, যশোর || ১০ মে ২০২৫
বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনে ভারতীয় পাসপোর্টধারী যাত্রীদের ল্যাগেজ সুবিধায় আনা অতিরিক্ত পণ্যের বিপরীতে শুল্ক ফাঁকিতে সহায়তার অভিযোগ উঠেছে কাস্টমসের এক রাজস্ব কর্মকর্তা গনির বিরুদ্ধে। এতে সরকারের কোটি কোটি টাকার রাজস্ব ক্ষতির মুখে পড়লেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নীরব ভূমিকা পালন করছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
সূত্র জানায়, রাজস্ব কর্মকর্তা গনির প্রত্যক্ষ মদদে সীমান্তবর্তী একাধিক ল্যাগেজ ব্যবসায়ী নিয়মিতভাবে শাড়ি, থ্রি-পিস, কম্বল, মদ, জিরা, চকলেট, প্রসাধনী, ওষুধ, এমনকি মেডিকেল ইকুইপমেন্ট—বিভিন্ন পণ্য শুল্ক না দিয়ে দেশে প্রবেশ করাচ্ছে। প্রতিটি ব্যাগের পেছনে ৫ থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত ঘুষ নেওয়া হয়, যার বড় একটি অংশ ওই কর্মকর্তার পকেটে ঢুকছে বলে অভিযোগ।
সাধারণত প্রতিদিন ৩ থেকে ৪ শতাধিক ভারতীয় যাত্রী বিজনেস ভিসায় এসে এসব পণ্য বিক্রি করে পুনরায় ভারতে ফিরে যান। স্থানীয়দের মতে, গোয়েন্দা পরিচয়ধারী লিটন, সাদীপুর গ্রামের মাসুদ, শরিফুল, আফজাল এবং বিজিবি সোর্স তরিকুলের সমন্বয়ে গঠিত একটি সংঘবদ্ধ সিন্ডিকেট এই চোরাচালান পরিচালনা করছে।
১০ মে দুপুর ১২টা থেকে ১টা ৩৫ মিনিট পর্যন্ত রাজস্ব কর্মকর্তা গনিকে একাধিকবার ফোন করেও পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “সাংবাদিক আর স্থানীয়দের কিছু ছাড় দিতে হয়।”
এদিকে, গত ৭ মে ২০২৫ তারিখে যশোর ৪৯ বিজিবির আইসিপি ক্যাম্পের সদস্যরা বেনাপোল চেকপোস্ট এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রায় ১৪ লাখ ৯৮ হাজার টাকার ফেনসিডিল, শাড়ি, কম্বল, কসমেটিকস ও খাদ্য সামগ্রী জব্দ করে। এসব পণ্য অধিকাংশই পাসপোর্ট যাত্রীদের ল্যাগেজ তল্লাশি থেকে জব্দ হয় বলে জানানো হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার কামরুজ্জামানের মোবাইল নম্বরে কল দেওয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এদিকে, ল্যাগেজ ব্যবসায়ীদের কারণে সাধারণ যাত্রীদের ভোগান্তিও বাড়ছে। দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে চেকিংয়ের নামে হয়রানি, দালালদের উৎপাতসহ নানা সমস্যার মুখে পড়ছেন তারা। তবে এই দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেই বলেই মনে করছেন সচেতন মহল।