হেলাল শেখঃ ঢাকা জেলার ভাইরাল ওসি বিদায়—আশুলিয়া থানার নতুন অফিসার ইনচার্জ (ওসি’র) সোহরাব আল হোসাইন যোগদান করেছেন গত রবিবার (২০ এপ্রিল ২০২৫ইং) দিবাগত রাতে, তিনি কেরানীগঞ্জ থানা থেকে আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করলেন। এদিকে পুলিশ ও সাংবাদিকদের ঘোষণা: দেশ ও জাতির কল্যাণে যারা কাজ করছেন তাদের কাজে বাঁধা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। এ দিকে নতুন ওসি’র কাজে সহযোগিতা করার জন্য সবার সহযোগিতা দরকার বলে অভিমত প্রকাশ করেন সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ।
বাংলাদেশ পুলিশ ও সাংবাদিকদের কাজে বাঁধা সৃষ্টিকারীদের দ্রুত আটক করে আইনের আওতায় আনার দাবী জানিয়েছেন এশিয়ান টিভি’র স্টাফ রিপোর্টার জহিরুল ইসলাম খান (লিটন), সাধারণ সম্পাদক আশুলিয়া প্রেসক্লাব, আশুলিয়া সাংবাদিক সমন্বয় ক্লাবের সভাপতি ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সাংবাদিক সংস্থার ঢাকা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম জয় (হেলাল শেখ) ও আশুলিয়া রিপোর্টার্স ক্লাবের সভাপতি এম. এ হান্নান চৌধুরী এবং বিভিন্ন ক্লাবের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ।
জানা গেছে, ঢাকার আশুলিয়ার শ্রমিক নেতা মিজানুর রহমান মিজান ও জাহাঙ্গীর শ্রমিক নেতা কতৃর্ক চাঁদাবাজির বিষয়ে জানতে গিয়ে সাংবাদিক সাব্বির ও সাংবাদিক রাসেলকে প্রাণনাশের হুমকি প্রধান করা হয়েছে। আশুলিয়ায় গত (৭ মার্চ ২০২৫ইং) সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে হেনস্তার শিকার হোন ২ সাংবাদিক। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, আশুলিয়ার ক্রাইম জোন এলাকা রূপায়ন মাঠের পাশে পাবনারটেক এলাকায় শুক্রবার দুপুরে একটি ঝুটের গোডাউনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে মাই টিভি’র জার্নালিস্ট হাফিজুর রহমান ও দৈনিক ভোরের পাতা পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার জাহিদুল ইসলাম অনিককে পেশাগত কাজে বাঁধা সৃষ্টি ও হেনস্তা করার অভিযোগ স্থানীয় ঝুট ব্যবসায়ী নুর আলম ও তাদের লোকজনের বিরুদ্ধে।
বাংলাদেশের অতি গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মনিরুল হক ডাবলু’কে নিয়ে একটি মহল ষড়যন্ত্র করে তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে তার কাজে বাঁধা সৃষ্টি করে। তিনি বাংলাদেশ পুলিশ এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক, তিনি আশুলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ হিসেবে কাগজে কলমে এক মাস থাকলেও কাজে যোগদান করতে পারেননি কিন্তু প্রায় এক মাস থানায় তাকে দেখা যায়নি, আশুলিয়া থানায় নতুন ওসি যোগদান করার খবর পুলিশ সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে ২১ এপ্রিল ২০২৫ইং তারিখে।
জানা যায়, এর আগে গত (৩ মার্চ ২০২৫ইং) দুপুর ২টার দিকে আশুলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হিসেবে যোগদান করেন মোহাম্মদ মানিরুল হক ডাবলু। এ সময় থানার কর্মরত (এসআই) অফিসারগণ তাকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন। ওসি থানায় আসার পূর্বে অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অভিনন্দন জানানো শুরু করেন, এরপর থানায় ওসি’র দায়িত্ব নিতেই বিভিন্ন ফেসবুক আইডি থেকে অপপ্রচার শুরু করে একটি মহল। সেই সত্যতা জানতে চেষ্টা করেন গণমাধ্যম কর্মীরা। কেউ দাবী করেন যে, এই ওসি ছাত্রলীগ করতেন, কেউ দাবী করেন যে, তিনি ছাত্রদল করতেন, মুহুর্তের মধ্যে তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হন, জাতি জানতে চায় কে এই মনিরুল হক ডাবলু ওসি? সে যেখান থেকেই আসুক না কেন তিনি এখন বাংলাদেশ সরকারের নিয়োগপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা—একটি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি)।
সূত্র জানায়, মোহাম্মদ মনিরুল হক ডাবলু ১৯৭৮সালে ফরিদপুর—রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ থানার বাহাদুরপুর গ্রামের সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন, তিনি মরহুম আঃ জলিল শেখের ছেলে, তিন ভাই ও দুই বোনের মধ্যে ডাবলু কনিষ্ঠ। মনিরুল হক ডাবলুর বড় ভাই জিয়াউল হক বাবলু বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক, মেজ ভাই জহিরুল হক লাভলু বাংলাদেশ জাতীয় যাদুঘর এর প্রশাসনিক কর্মকর্তা, তিনি বাংলাদেশ জাতীয় যাদুঘর ইউনিয়নের বার বার নির্বাচিত সফল সভাপতি। এবার আসি মোহাম্মদ মনিরুল হক ডাবলু কেমন মানুষ, ছোট বেলা থেকে স্কুলে সবার প্রিয় ভালো ছাত্র ছিলেন, সর্বশেষ শিক্ষাজীবন শেষ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পাসের মধ্য দিয়ে। এরপর বাংলাদেশ পুলিশে যোগদান করেন অফিসার হিসেবে। এর আগেও তিনি আশুলিয়া থানায় চাকরি করেছেন, তখন শেখ রিজাউল হক দিপু আশুলিয়া থানার ওসি ছিলেন। তিনি বর্তমানে বাংলাদেশ পুলিশ এসোসিয়েশনের নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক। ২০০৫ সালে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে যোগদান করেন এই মনিরুল হক ডাবলু।বিশেষ করে গত (৩ মার্চ ২০২৫ইং) তারিখে মনিরুল হক ডাবলু নতুন ওসি হিসেবে আশুলিয়া থানায় যোগদানের পর থেকে একটি প্রত্যায়নপত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। এ ছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হাজী মুহাম্মদ মুসলিম হলের একটি কমিটির যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক পদের একটি প্রত্যায়নপত্রও ভাইরাল হয়। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী ও বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন: কে এই ওসি ডাবলু? তখন এই দুইটি প্রত্যায়নপত্রের সত্যতা নিশ্চিত করতে অনুসন্ধানে নামে গণমাধ্যম কর্মীরা। উক্ত বিষয়ে প্রথমেই ছাত্রলীগের কর্মী দবিকৃত প্রত্যায়নপত্রের সত্যতা নিশ্চিত করতে নারায়নগঞ্জের আড়াইহাজারের সাবেক এমপি সংসদ সদস্যের সাথে নানা ভাবে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। নারায়নগঞ্জের আড়াইহাজারের এমপি নজরুল ইসলাম বাবুর নামের বানান, দুই জায়গায় দুইরকম, (ছাপানো অক্ষরে লেখা মোঃ নজরুল ইসলাম বাবু, সিলে লেখা আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম বাবু, যা খুবই নিম্নমানের, কোনো এমপি এমন মানের সিল ব্যবহার করার কথা নয়।) এরপর ছাত্রদলের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক দাবি করা প্রত্যায়নপত্রের অনুসন্ধান শুরু করলে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় অফিসের পিয়ন সুমন নামের একজন ব্যক্তি আশুলিয়া থানায় এসে বলেন যে,ওসি মনিরুল হক ডাবলু নাকি ছাত্রলীগ করতেন তার তদন্ত করতে আসছেন, এসময় গণমাধ্যম কর্মীরা প্রশ্ন করলে ওই সুমন নামের ব্যক্তি বিপাকে পড়েন, তখন ওসি ডাবলু তার কক্ষে চেয়ারে বসে থাকতে দেখা যায়।
অন্যদিকে গণমাধ্যম কর্মী পরিচয়ে মনিরুল হক ডাবলু’র রাজনৈতিক পরিচয় জানতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হাজী মুহাম্মদ মুসলিম হলের সভাপতি একে এম মেজবাহ উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি, তবে অনেকেই জানান, ডাবলু ভাই হল কমিটিতে যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। আমরা একসাথে রাজনীতি করেছি, তখন সুলতান সালাউদ্দিন টুকু ভাই, ডাবলু ভাই ও আমরা এক সাথে রাজনীতি করছি। ২০০১ সালে মহসিন হলের দখলে ছিলো ছাত্রলীগের শফিকরা। তখন ডাবলু আনিস, হিরু আমরা একসাথে ছাত্রদলের রাজনীতি করেছি। আওয়ামী লীগের এক সংসদ সদস্যের প্রত্যায়নপত্রের বিষয়ে তারা বলেন, এসব ভুয়া। ৫ আগষ্টে গণহত্যার ঘটনায় ভুয়া বাদী সেজে একাধিক মামলা করে সায়েব আলী জলিলসহ আরো অনেকে, তারা পুলিশ ও সাংবাদিকদের কাজে বাধা সৃষ্টিকারী, তাদেরকেও আটক করে আইনের আওতায় আনার দাবী সবার। আশুলিয়া থানায় নতুন ওসি আসলেই ফেসবুকে অপপ্রচার শুরু করা হয় কেন জাতি জানতে চায়। এই অপপ্রচারকারী যেইহোক না কেন তাদেরকে আটক করে আইনের আওতায় আনার দাবী জানান সচেতন মহল।এদিকে রাজবাড়ীর মনিরুল হক ডাবলু পরিবারের রাজনৈতিক পরিচয় হলো তার বাবা মৃত আব্দুল জলিল মিয়া প্রথমে ফরিদপুর জেলার গোয়ালন্দ মহকুমা শাখার জাগ দলের ও পরে বিএনপি’র সদন্য ছিলেন, ডাবলু’র বড় ভাই মোঃ জিয়াউল হক বাবলু ছিলেন, গোয়ালন্দ পৌর বিএনপি’র সহ—সভাপতি ও গোয়ালন্দ উপজেলা শাখার জাসাস এর সাবেক সভাপতি। তার মেঝ ভাই মোঃ জহিরুল হক লাভলু গোয়ালন্দ উপজেলা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি (১৯৯১—১৯৯৬ইং) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। উক্ত ব্যাপারে আশুলিয়া থানার নতুন অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মনিরুল হক ডাবলু’র সাথে গণমাধ্যম কর্মীরা কথা বললে তিনি বিষয়টি নিয়ে লজ্জায় পড়েন আর কোনো বক্তব্য দেননি। এদিকে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও পুলিশের উপর মহলের কর্মকর্তাগণ বলেন, মনিরুল হক ডাবলু কোথায় ছিলেন, কি দল করছেন? কোথায় বাড়ি তা প্রমান হয়েছে, তিনি আশুলিয়া থানায় এর আগেও চাকরি করেছেন, পুলিশের বদলির চাকরি, তার রিজিক যতদিন আশুলিয়া থানায় ছিলো তিনি ততদিনই ছিলেন, এ ঘটনায় ওসি মনিরুল হক ডাবলু’র কাজে বাঁধা সৃষ্টিকারী বিএনপির কেন্দ্রীয় অফিসের পিয়ন পরিচয়দানকারী সুমনকে গ্রেফতার করা হয়। তবে ৪জন সাংবাদিকের কাজে যারা বাঁধা সৃষ্টি করেছে, পুলিশ ও সাংবাদিকদেরকে নিয়ে যারা ষড়যন্ত্র করছে তাদেরকে এখনো পুলিশ গ্রেফতার করতে পারেননি, এরপর আরো কয়েকজন সাংবাদিক পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছেন। পুলিশ ও সাংবাদিকদের কাজে বাঁধা সৃষ্টিকারীদেরকে গ্রেফতার না করা হলে এই প্রতিবেদন ধারাবাহিক ভাবে চলবে এবং মানববন্ধন করা হবে বলে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দরা জানান।