সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিদিন সকালে বিভিন্ন ধরনের মাটির তৈরি জিনিসপত্র ভ্যানে করে নিয়ে একাকি মনে ভ্যান চালিয়ে গ্রামে গ্রামে যান। কোথাও বিক্রি হয় আবার কোথাও বিক্রি হয় না। এভাবে তিন উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ফেরি করে মাটির তৈরি জিনিসপত্র বিক্রি করেন। দিনে যা বিক্রি হয় তাতে তার সামান্য লাভ হলেও বিলুপ্তির পথে মাটির তৈরি তৈজসপত্রের ঐতিহ্যকে ধরিয়ে রাখতে চান শফিকুল ইসলাম। শফিকুল ইসলাম বলেন, গত ১৯ বছর ধরে মাটির তৈরি জিনিসপত্র ফেরি করে বিক্রি করছি। তিন উপজেলায় এসকল জিনিসপত্র ভ্যানে করে বিক্রি করে আসছি। তিন উপজেলা হলো উলিপুর, চিলমারী ও রাজারহাট। দিনে ৩’শ থেকে ৪’শ টাকা পর্যন্ত আয় হয়। যা দিয়ে সংসার পরিচালনা করা খুবই কষ্টকর। বর্তমান মাটির তৈরি জিনিসপত্র মানুষ নিতে চাননা। কারণ প্লাষ্টিকের জিনিস দখল করে নিয়েছে মানুষের মন। প্লাস্টিকের কারণে মাটির তৈরি জিনিসপত্র টিকিয়ে রাখা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি আরও বলেন, মাটির তৈরি জিনিসপত্র টিকিয়ে রাখতে অনেক মুনাফার প্রয়োজন। সরকারি ভাবে আমাকে আর্থিক সহযোগিতা করলে আমি ব্যাবসাটি প্রসারিত করতে পারতাম।
স্থানীয়দের মধ্যে নুর আলম (৩০), আব্দুল লতিফ (৬৫), আমিনুল ইসলাম (৪০) ও লাল মিয়া সহ আরও অনেকে বলেন, শফিকুল ইসলাম প্রায় ১৯ বছর থেকে মাটির তৈরি জিনিসপত্র ভ্যানে করে গ্রামে গ্রামে ফেরি করে বিক্রি করেন। শফিকুলের বসত ভিটে তিস্তা নদীর গর্ভে ১২ থেকে ১৫ বার বিলীন হয়েছিল। তারপর কোনরকম ভাবে টাকা জমিয়ে ফাঁসিদাহ বাজার এলাকায় ৪ শতক জমি ক্রয় করে কষ্ট করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। তাকে সরকারি ভাবে সহযোগিতা করলে তার জিনিসপত্রের ব্যাবসা ভালো ভাবে করতে পারত।
থেতরাই ইউনিয়নের প্রাক্তন চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী সরকার বলেন, শফিকুল ইসলামের বাসা থেতরাই ইউনিয়নের ফাঁসিদাহ বাজার এলাকায়। তিস্তা নদী তাকে নিঃস্ব করে দিয়েছে। সে এখন মাটির তৈরি জিনিসপত্র ফেরিতে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। বর্তমান মাটির জিনিসপত্রকে প্লাস্টিকের সামগ্রী বিলীন করে দিচ্ছে। মাটির তৈরি জিনিসপত্রকে টিকিয়ে রাখা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে অনেক মুনাফার প্রয়োজন। তাই সরকারিভাবে তাকে যদি সহযোগিতা করা হয়, তাহলে আমার মনে হয় আরও বড় পরিসরে কাজটি করতে পারতেন।