হেলাল শেখঃ রাজধানীতে রাজনৈতিক দলগুলো মহাসমাবেশের সংবাদ সংগ্রহের সময় সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছেন একাধিক সংবাদকর্মী। গত শনিবার সকাল থেকে রাজধানীর বিজয়নগর, কাকরাইল, ফকিরাপুল, ও নয়াপল্টন এলাকায় এসব হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় প্রায় ২৫জন সাংবাদিকের উপর হামলা চালিয়ে তাদের কয়েকটি মো্টরসাইকেলে আগুন লাগিয়ে দেয়া হয়। এসব ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন সাংবাদিক নেতারা।
উক্ত হামলায় আহত সংবাদকর্মীরা হলেন, নিউ এজের আহমেদ ফয়েজ, বাংলা ট্রিবিউনের প্রধান প্রতিবেদক সালমান তারেক শাকিল, ফটোসাংবাদিক সাজ্জাদ হোসেন ও নিজস্ব প্রতিবেদক জোবায়ের আহমেদ, দৈনিক কালবেলার অপরাধ প্রতিবেদক রাফসান জানি, মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার জনি রায়হান আবু সালেহ মুসা, রবিউল ইসলাম রুবেল, তৌহিদুল ইসলাম তারেক, ঢাকা টাইমসের প্রতিবেদক সালেকিন তারিন, বেকিং নিউজের ক্রাইম রিপোর্টার কাজী ইহসান বিন দিদার, দৈনিক ইনকিলাবের ফোটসাংবাদিক এফ এ মাসুম, দৈনিক ইত্তেফাকের মাল্টিমিডিয়ার রিপোর্টার তানভীর আহম্মেদ, একুশে টিভির রিপোর্টার তৌহিদুর রহমান, ক্যামেরাপারসন আরিফুর রহমান, দৈনিক দেশ রূপান্তর পত্রিকার সাংবাদিক আরিফুর রহমান রাব্বি, ইত্তেফাকের সাংবাদিক শেখ নাছের এবং ফ্রিল্যান্সার মারুফসহ প্রায় ২৫ জন সাংবাদিক আহত হয়েছেন।
ভুক্তভোগী আহত সাংবাদিক ও ঘটনাস্থলে থাকা সংবাদকর্মীরা জানান, আহতদের বেশিরভাগই বিএনপির নেতা—কর্মীদের হামলার শিকার হয়েছেন এবং কয়েকজন পুলিশের ছোঁড়া কাঁদানে গ্যাসের শেল ও রাবার বুলেটের আঘাতেও আহত হয়েছেন। হামলার শিকার কালবেলার সাংবাদিক রাফসান জানি গণমাধ্যম কর্মীদের জানান, ঘটনার দিন সকাল থেকে তিনি বিএনপির সমাবেশের সংবাদ সংগ্রহ করছিলেন। দুপুর ১টার দিকে কাকরাইল মসজিদের সামনে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি’র নেতা—কর্মীদের সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় হঠাৎ করে তাঁর ওপর হামলা চালান বিএনপি’র নেতা—কর্মীরা। এরপর আঘাতপ্রাপ্ত হলে আহতাবস্থায় অন্য সহকর্মী সাংবাদিকরা গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করেন।
বিকেল ৪টার দিকে নাইটিঙ্গেল মোড়ে দৈনিক আজকের পত্রিকার আলোকচিত্র ওমর ফারুকের উপর হামলা করে তার মোটরসাইকেলে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। ওমর ফারুক বলেন, ‘আমি নয়াপল্টনে বিএনপির কার্যালয়ের সামনে ছিলাম। পরে গাড়িটা যেখানে রেখেছিলাম সেখানে গেলাম, জাতীয় স্কাউট ভবনের সামনে, রাস্তার পাশে আমার মোটরসাইকেলটা রাখা ছিলো, এসে দেখি পুড়ে শেষ, শুধু ধোঁয়া বেরোচ্ছে। আমি সাংবাদিক হয়েও অসহায়ের মতো কিছুক্ষণ চেয়ে থেকে পুরান পল্টনের দিকে আবারও নিউজ কভার করতে রওনা দিলাম’। তিনি বলেন, আমরা সংবাদ পরিবেশন করি আর সেই সাংবাদিকই যদি সংবাদের শিরোনাম হয়ে যাই এটা খুবই দুঃখজনক ও লজ্জার। এর আগে ঢাকার আশুলিয়ায় আশুলিয়া সাংবাদিক সমন্বয় ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক চৌকস পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার মোঃ কহিরুল ইসলাম ও সাংবাদিক শামীমমহ তিনজনকে র্যাব কতৃর্ক আটক করে আশুলিয়া থানায় সোপর্দ করা হয়, তারা বর্তমান কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী আছেন। সাংবাদিকরা পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে হামলা মামলার শিকার হওয়ার ঘটনা নতুন কিছু নয়। তবে এসব ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ।