নিজস্ব প্রতিবেদক :
লক্ষ্মীপুর জেলার পৌরসভায় প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় এক কলেজছাত্রীকে কুপিয়ে ও ইট মেরে জখম করেছে বখাটে। মঙ্গলবার পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কলেজ রোডের সামাদ স্কুল পুকুর এলাকায় কলেজছাত্রী সুবর্ণা মুনতাহা রিজমিকে বখাটে তানজীদ আহমেদ রিয়ান এ ঘটনা ঘটায়।
সদর উপজেলার লাহারকান্দি ইউনিয়নের তালহাটি গ্রামের প্রবাসী মুরাদ হোসেনের মেয়ে রিজমি। তিনি লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী। আর রিয়ান পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কালুহাজী সড়কের প্রবাসী শামীমের ছেলে ও দালালবাজার ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র। প্রতারণা করে রিয়ান লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজে ক্লাস করত বলে জানা গেছে। কলেজছাত্রী রিজমি জানান, কলেজে আসা-যাওয়ার পথে সাত মাস ধরে তাকে রিয়ান উত্ত্যক্ত করে আসছে। প্রেমের প্রস্তাবও দেয়। বিষয়টি তার পরিবারকে জানানো হয়। তখন রিয়ানের মা জানান, আর কখনো রিজমিকে রিয়ান উত্ত্যক্ত করবে না। কিন্তু এরপরও উত্ত্যক্ত করত। প্রেমের প্রস্তাব গ্রহণের জন্য চাপ সৃষ্টি করত। রিজমির মামা রাসেল ভূঁইয়া জানান, কলেজে যাওয়ার পথে পেছন থেকে রিজমির মাথায় রিয়ান ইট মারে। এক পর্যায়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তার মাথার সামনের অংশে আঘাত করে। এ সময় রিয়ানের সঙ্গে ১০-১২ জন ছিল। রিজমির মা সুমি ভূঁইয়া জানান, তার মেয়েকে বখাটেরা মেরে ফেলতে চেয়েছিল। আমার মেয়েকে হাসপাতালের ইমার্জেন্সিতে কে বা কারা ফেলে রেখে গেছে। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সরকারি কলেজের দুই ছাত্রী জানায়, রিয়ান তাদের সঙ্গেই ক্লাস করত। দালাল বাজার কলেজ থেকে ট্রান্সফার হয়ে সরকারি কলেজে ভর্তি হয়েছে বলে রিয়ান সবাইকে জানায়। রিয়ান ও রিজমিকে একই সঙ্গে দেখা গেলেও তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল কি না তা তারা জানে না।
লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ মাহবুবুল করিম বলেন, ঘটনাটি কলেজ ক্যাম্পাসের বাইরে ঘটেছে। রিয়ান আমাদের কলেজের ছাত্র না। রিজমিকে দেখতে হাসপাতালে কয়েকজন শিক্ষককে পাঠিয়েছি। সবচেয়ে বড় কথা কখনো রিজমি আমাদের কে বলেনি রিয়ান যে, এখানে ক্লাস করে অথবা কোনো শিক্ষার্থীদের মাঝ থেকেও কেউ বলেনি। যদি আমাদের কে আগে বলতো তাহলে হয়তো এমনটি হতোনা। এক পর্যায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, রিজমি সে নিজেই চায়নি রিয়ানের বিষয়টি সামনে আসুক যদি চাইতো তাহলে আগেই বলিতো।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সোহেল রানা বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল ও হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় সে এ ঘটনাটি ঘটিয়েছে। এই হামলার সঙ্গে জড়িত রিয়ানসহ সবাইকে আইনের আওতায় আনার দাবি করেন আহত কলেজছাত্রীর মা। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চান তিনি।