নাজমুল হোসেন, নিজস্ব প্রতিবেদক :
লক্ষ্মীপুর জেলায় ৩ দিনব্যাপী জাতীয় পিঠা উৎসব শুরু হয়েছে। লক্ষ্মীপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমীর আয়োজনে কালেক্টরেট ভবন প্রাঙ্গনে এ উৎসব আয়োজন করা হয়।
আজ বুধবার (৩১ জানুয়ারী) বিকেলে রঙিন বেলুন ও উৎসবের ফেস্টুন উড়িয়ে এর উদ্বোধন করেন লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক (ডিসি) সুরাইয়া জাহান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, শীত মৌসুমে হরেক স্বাদের পিঠা-ফুলির আয়োজন বাঙালী লোকজ সংস্কৃতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ। দেশীয় এ ঐতিহ্যকে লালন করার উদ্দেশ্যে সারাদেশের ন্যায় লক্ষ্মীপুর জেলায় সাংস্কৃতিক মন্ত্রনালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় আড়ম্বর পরিসরে পিঠা উৎসবের আয়োজন করা হয়। এ উৎসবে সবাইকে আসার আমন্ত্রন জানিয়ে দেশীয় ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে লালন সহ এর সমৃদ্ধিতে সকলের অংশগ্রহণ কামনা করেন লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক সুরাইয়া জাহান।
এর আগে লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক উৎসবস্থলে আয়োজিত মেলায় বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন করেন।
এসময় তার সাথে উপস্থিত ছিলেন লক্ষ্মীপুর জেলা পুলিশ সুপার তারেক বিন রশিদ, লক্ষ্মীপুর সিভিল সার্জন আহমেদ কবির, লক্ষ্মীপুর জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, লক্ষ্মীপুর কৃষি বিভাগের উপপরিচালক ড. জাকির হোসেন, অতিরিক্ত লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক সাজিয়া পারভিন প্রমুখ।
জাতীয় পিঠা উৎসব লক্ষ্মীপুর জেলায় এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক মেহের নিগার।
এসময় বিভিন্ন স্টলে নিজ হাতে বানানো শতাধিক পিঠার সাজানো পসরার সাথে পরিচিত হয়ে এর স্বাদ গ্রহণ করেন অতিথিবৃন্দ। এছাড়া বিভিন্ন স্থান থেকে ছুটে আসা মানুষজনও হৃদয় হরণ, মাছ পিঠা, ফুলি পিঠা, নারিকেল পিঠা ও পাটি সাপটাসহ নানান ধরণের পিঠার স্বাদ নেন।
এ আয়োজনকে ঘিরে স্থানীয়ভাবে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা পরিলক্ষিত হয়েছে।
জাতীয় পিঠা উৎসবে ডাল পাকন, শুকনা পিঠা, লতা পিঠা, শামুক পিঠা, সাকুর পিঠা, পদ্মার ইলিশ পিঠা, পাটি সাপটা, পান্তুয়া, জেলি কেক, বরফি, দুধ চিতল, ভাপা পিঠা, নকশি পিঠা, ঝুনঝুনি পিঠা, মুগ পাকন, ক্ষীর পাটি সাপটা, হৃদয় হরণ ও নারিকেল বেলি পিঠাসহ ২ শতাধিক পিঠা দেখা যায়। একেকটির স্বাদ একেক রকম। একেকটি দোকানে ৫০ ধরণের পিঠা থাকলেও সবগুলোর নামও অজানা অনেকের কাছেই।
পিঠা উৎসব দেখতে আসা কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাধারণত পৌষ মাসে পিঠা উৎসব হয়ে থাকে। তবে শীত মানেই বাড়িতে বাড়িতে পিঠা উৎসব। যদিও এখন আর গ্রাম ছাড়া শহরে পিঠা দেখা যায় না। খাওয়াতো অনেকে দূরে, অনেক পিঠার নামও এখন মনে পড়ে না। এখন শহরের মানুষের একমাত্র ভরসা রাস্তার পাশে বানানো চিতই আর ভাপা পিঠা। মফস্বল শহরেও একই অবস্থা। সরকারী পৃষ্ঠপোষকতায় আয়োজিত পিঠা উৎসব প্রশংসনীয়।
কুয়াশা ঘেরা বিকেলে পিঠা উৎসবটি আনন্দদায়ক ছিল বলে জানান স্থানীয়রা। শেষে উৎসবস্থলে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা অনুষ্ঠিত হয়।