হেলাল শেখঃ সংবাদপত্র সমাজের দর্পণ— সাংবাদিক দেশ ও জাতির বিবেক। বর্তমানে কাগজপত্রসহ সকল জিনিসপত্রের দাম বাড়লেও সংবাদপত্রের দাম বাড়েনি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও অনলাইন পোর্টালে ২৪ ঘন্টা প্রচারণা চলমান থাকায় বর্তমানে প্রিন্ট পত্রিকা পড়তে আগ্রহী না বেশিরভাগ পাঠক। অনেকেই সময় বাঁচাতে অনলাইনে প্রয়োজনীয় কাজকর্ম করছেন। সংবাদপত্রের সাংবাদিক কতটুকুও ঝুঁকি নিয়ে সাংবাদিকতা করছেন তা লিখতে গেলে ইতিহাস হবে।
বিশেষ করে মহান পেশা সাংবাদিকতা, অথচ নিজেদের ভেতরে বাইরে শক্রতা সৃষ্টি করায় অন্যরা নিচ্ছে সুযোগ সুবিধা আর হয়রানির শিকার হচ্ছেন প্রকৃত সাংবাদিক। সাংবাদিক ও পুলিশ একে অপরের বন্ধু উল্লেখ করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার অতিরিক্ত আইজিপি জনাব হাবিবুর রহমান। তিনি বলেছেন, প্রকৃত সাংবাদিকদের দায়িত্ব পালনের সময় বাঁধা দেওয়া হলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় কোনো বাঁধা সৃষ্টিকারীদেরকে ছাড় দেয়া হবে না বলে জানিয়েছেন কিছু সাংবাদিক নেতারাও। সাংবাদিক নেতা অনেকেই বলেন, সাংবাদিকদের উপর হামলা মামলা বন্ধ করতে হবে।
দেশের যেসকল সম্পাদক ও সাংবাদিকদের উপর হামলা মামলা নির্যাতন করা হয়েছে, সেইসকল ঘটনা ও অপরাধের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন আশুলিয়া সাংবাদিক সমন্বয় ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সাংবাদিক সংস্থার ঢাকা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ সাইফুল ইসলাম জয় (হেলাল শেখ), তিনি বলেন, সাংবাদিকদেরকে ঘাঁয়েল করতে বিভিন্নভাবে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয় একটি মহল। সাংবাদিকদের মহান পেশাকে অসম্মান করার অধিকার কারো নেই। তবে কিছু সম্পাদক সাংবাদিকদের বেতন দেন না, উল্টো প্রতি মাসে প্রতিনিধিদের কাছ থেকে অর্থ নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে, এরকম সত্য কেউ প্রকাশ করতে চায় না কারণ, তাদের স্বার্থে আঘাত লাগবে তাই। এর কারণে অনেক সাংবাদিক এই মহান পেশা সাংবাদিকতা ছেড়ে দিচ্ছেন। বিশেষ করে প্রিন্ট প্রত্রিকা—সংবাদপত্র ছাপা ও সাংবাদিকতায় চরম বাধা সৃষ্টি করছে যারা তাদের অপকর্ম, অনিয়ম, দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশ করে জাতির সামনে তুলে ধরতে হবে। অনলাইন পোর্টাল, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ব্যবহার ও সাংবাদিকতায় এক পর্যায়ে কাজ করছে কিছু অসাধু লোকজন, তাদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা জরুরী, এতে প্রকৃত সাংবাদিক ও সম্পাদক মহোদয়ের সম্মান রক্ষা হবে। অন্যদিকে কাগজপত্র ও প্লেটের দাম বৃদ্ধি হওয়ার কারণে প্রিন্ট পত্রিকা ছাপানো অনেক কঠিন হয়ে পড়েছে। মাদক সন্ত্রাস, চোর বাটপার ও খারাপ প্রকৃতির ব্যক্তির কারণে প্রকৃত সাংবাদিকতায় চরম বাঁধা সৃষ্টি হচ্ছে, যা প্রকৃত সাংবাদিকদের জন্য লজ্জাজনক। কিছু অসাধু ব্যক্তির অত্যাচারের কারণে অনেকেই মহান পেশা সাংবাদিকতা ছেড়ে অন্য পেশায় যাচ্ছেন।
সাংবাদিক দাবিদার নিজেদের মধ্যে যারা শক্রতা সৃষ্টি করছেন তারা বেশিরভাগই সংবাদ লিখতে পারেন না, প্রকৃত সাংবাদিকরা কখনো কারো বদনাম করেন না, নিজেদের মধ্যে শক্রতা সৃষ্টি করেন না, জাতির বিবেক হওয়া এতো সহজ নয়। সাংবাদিকতা একটা মহান পেশা, এই পেশাকে যারা ছোট করে দেখেন, যারা প্রকৃত সাংবাদিকদেরকে অপমান করছে, হামলা, মামলা করছে, তাদেরকে শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হোক। প্রকৃত সাংবাদিক ও লেখক কখনো কোনো হামলা মামলার ভয় করে না। নেতা বা মেম্বার চেয়ারম্যান, এমপি মন্ত্রী আপনারা যে পেশা থেকেই আসেন না কেন, দয়া করে কেউ সাংবাদিকদের অপমান করবেন না, এমনকি যেকোনো পুলিশ অফিসার সাংবাদিকদের অপমান করার অধিকার রাখেন না। আপনাদের ইতিহাস প্রকৃত সাংবাদিকই প্রকাশ করতে পারে। দেশের গণমাধমের প্রকাশক ও সম্পাদকসহ প্রকৃত সাংবাদিকরা আপনাদের অনেকের প্রকৃত চরিত্র ও ইতিহাস জানেন। আপনারা কে কেমন প্রকৃতির মানুষ বা কেমন অপরাধ করেছেন? কে কেমন অপরাধী ? কে কেমন চরিত্রবান তা সাংবাদিকরা জানেন। রাজধানী ঢাকা, ধামরাই ও সাভার আশুলিয়াসহ সারাদেশেই একের পর এক প্রকৃত সাংবাদিকদের উপর নৃশংস হামলা—মামলা ও হত্যার ঘটনা ঘটছে। এসব ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন সাংবাদিক নেতাসহ সচেতন মহল। সাংবাদিক নেতারা বলেন, সাংবাদিকরা ঐক্যবদ্ধ না থাকার কারণেই বিভিন্ন হামলা মামলার শিকার হয়ে থাকেন। প্রকৃত সাংবাদিকদেরকে কেউ ভয় দেখাবেন না, কলমের শক্তি দিয়েই তার জবাব দেয়া হবে। আমরা সাংবাদিকরা কোনো কচু পাতার পানি নয় যে, বাতাসে পড়ে যাবো। অনেকেই ষড়যন্ত্রের কারণে হামলা—মামলায় শিকার হয়ে থাকেন। ভয় করবেন না “বৃহত্তর ঐক্যই আমাদের লক্ষ্য”। সাংবাদিককে অপমান করার অধিকার কারো নেই। সাংবাদিকদের উপর নৃশংস হামলা—মামলা, হত্যার হুমকি’র বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি আমরা। বিশেষ করে নিউজ লেখতে হবে সকল সাংবাদিকদেরকে সবার সংশ্লিষ্ট মিডিয়ায় তা নিয়মিত প্রকাশ করতে হবে। ভয় করলে সাংবাদিকতা করা যায় না। বিশেষ করে নতুন সাংবাদিকদের অবশ্যই সাংবাদিকতার আদর্শলিপি বইসহ বেশি বেশি বই পড়া জরুরি, প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সাংবাদিকতার মূলধারায় এগিয়ে যেতে হবে। নিজে সচেতন হতে হবে এবং অন্যদেরকেও সচেতন করতে প্রচারণা চালিয়ে যেতে হবে। কলম সৈনিক কখনো কারো মিথ্যা সংবাদ লিখে প্রকাশ করে না। যারা কলম হাতে নিয়ে মিথ্যা কোনকিছু লিখে তা প্রচার করে, এটাকে অপপ্রচার বলা হয়, অপপ্রচারকারীরা দেশ ও জাতির শক্র। দেশের ভেতরে যারা দেশ ও জাতিকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে তাদেরকে আটক করে আইনের আওতায় আনা হোক বলে দাবী জানান সাংবাদিক নেতারা।
সাংবাদিকরা না খেয়ে থাকলেও লজ্জায় কারো কাছে বলতে পারেন না, হাত পেতে সাহায্য নিতে পারেন না আর অভাবি ব্যক্তিরা সাংবাদিকতায় আসা ঠিক না। ৩৬৫ দিনে এক বছর, জীবনে কোনদিন ছুটি নেই সাংবাদিকদের। ৩৬৪ দিন ভালো কাজ করেন আর একদিন একজনের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করবেন এতে একটু ভুল হলেই সেই সাংবাদিক খারাপ হয়ে যাবে তাদের কাছে। অপরাধীরা অপরাধ করবে তাদের বিরুদ্ধে কোনকিছু লেখা যাবেনা, ১দিন যদি তাদের বিরুদ্ধে কোনো সংবাদ প্রকাশ করছেনতো সাংঘাতিক হবেন। সাংবাদিক জাতির বিবেক, সেই বিবেককে গালি দিয়ে বলা হয় সাংবাদিকরা খারাপ ও সাংঘাতিক, এটা কোন ধর্ম আর কোন বিচার ?। অনেকেই নিজেদেরকে বড় মনে করেন, নিজেদের স্বার্থের জন্য শক্রতা সৃষ্টি করেন আর একজন অন্যজনের ক্ষয়ক্ষতি করার চেষ্টায় ব্যস্ত থাকেন এটা আমাদের ভুল হচ্ছে। সবাই ঐক্যবদ্ধ ও সমন্বয় করে কাজ করার মধ্যে আনন্দ আছে, “বৃহত্তর ঐক্যই আমাদের লক্ষ্য”। আমাদের লেখার মধ্যেও অনেক ভুল হয়। এই জন্য সাংবাদিকদের সাংবাদিকতার আদর্শলিপি পড়া দরকার। বিশেষ করে “কলম সৈনিক অর্থাৎ সাংবাদিক দেশ ও জাতির বিবেক, ঝুঁকিপূর্ণ জেনেও সাংবাদিকরা পেশাগত দায়িত্ব পালন করেন, বিশেষ সম্মান অর্জন করার লক্ষ্যে কাজ করতে গিয়ে সম্মান অর্জন না হয়ে উল্টো বদনাম হচ্ছে প্রকৃত সাংবাদিকদের। সাংবাদিকতা করতে শুধুমাত্র মানুষের সুখ, দুঃখ, আনন্দ বেদনা, দুর্ঘটনাসহ সকল বিষয়ে জাতির কাছে তুলে ধরতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হয়। পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় সাংবাদিকদের অবশ্যই চোখ কান খোলা রেখে কাজ করতে হবে। সাংবাদিকরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পেশাগত দায়িত্ব পালন করেও কারো মনজয় করতে পারেন না কেন? ছোট একটি ভুল করলেই সাংবাদিকদের উপর হামলা, মামলা করা হয়, এমনকি হত্যার শিকার হতে হয়।
পুলিশকে বলা হয় সাংবাদিকদের সহযোগিতা করবেন কিন্তু তার উল্টো দেখা যায়, পুলিশ সাংবাদিক কি কখনো বন্ধু হতে পেরেছেন? কেউ কি খবর নিয়েছেন যে, সাংবাদিকরা কেমন আছেন? কোনো সহযোগিতা লাগবে কি না?। অনেক সাংবাদিক আজকাল মানবেতর জীবনযাপন করছেন। জনগণের কল্যাণে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পেশাগত দায়িত্ব পালন করে থাকেন সাংবাদিকরা, এর বিনিময়ে কি পাচ্ছেন তারা? নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন অনেক সাংবাদিক, হয়রানিমূলক মামলার শিকার হচ্ছেন অনেকেই তার কোনো হিসাব নেই। দেশে প্রায় ১৮ কোটি জনগণ, সেই তুলনায় আইনশৃঙ্খা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ও সাংবাদিকের সংখ্যা অনেক কম, তবুও আমরা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করছি। ধন্যবাদ জানাই তাদেরকে যারা মানুষের কল্যাণে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন। অনেকেই জানেন না যে, ১/ সাংবাদিক মানে জাতির বিবেক। ২/ সাংবাদিক মানে দেশ প্রেমিক। ৩/ সাংবাদিক মানে কলম সৈনিক। ৪/ সাংবাদিক মানে জাতির দর্পণ। ৫/সাংবাদিক মানে জাতির সেবক। ৬/সাংবাদিক মানে শিক্ষিত জাতি। ৭/সাংবাদিক মানে স্বাধীনভাবে কাজ করা। ৮/সাংবাদিক মানে সম্মানিত জাতি। ৯/ সাংবাদিক মানে তদন্তকারী। ১০/ সাংবাদিক মানে আইন বিষয়ে জানা। ১১/ সাংবাদিক মানে সিস্টেম পরিবর্তন করা। ১২/ সাংবাদিক মানে সকল তথ্য বিষয়ে জানা। স্বাধীনতা ও সম্মান অর্জন করা অনেক কঠিন—বাকিটা ইতিহাস।