মোজাম্মেল আলম ভুঁইয়া, সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলার সীমান্ত দিয়ে প্রতিদিন অবৈধ ভাবে ভারত থেকে পাচাঁর করছে গরু, চিনি, কাঠ, কয়লা, পাথর, সুপারী, কসমেটিস, নাসিরউদ্দিন বিড়ি, ইয়াবা ও মদসহ নানান পন্যসামগ্রী। এর ফলে একদিকে লাখলাখ টাকার রাজস্ব থেকে বি ত হচ্ছে সরকার। অন্যদিকে অবৈধ চোরাচালান বাণিজ্য করে চোরাকারবারী, তাদের গডফাদার ও সোর্স পরিচয়ধারীরা আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়েগেছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে— পুলিশ পৃথক অভিযান চালিয়ে গত ২দিনে জেলার দোয়ারাবাজার উপজেলার দোহালিয়া ইউনিয়নের পানাইল নতুনপাড়া গ্রামের চোরাকারবারী জামাল মিয়া জালাল(৫০), আলাউদ্দিন আলাল(৩০), বাবুল হোসেন(২৮), পাশের ভবানীপুর জাঙ্গালপাড়া গ্রামের আব্দুল বাছির মিয়া(৩৮)কে ১৪টি ভারতীয় গরুসহ গ্রেফতার করে। পরে তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী একই উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের খাসিয়ামারা নদীর টিলাগাঁও নৌকাঘাটে অভিযান চালিয়ে চোরাকারবারী রাদেন মিয়া(২২), আব্দুল কাদির(২৭), বাচ্চু খান(৪৫) ও আফসার উদ্দিন(৫০)কে ১টি স্টিলবডি ইঞ্জিনের নৌকা ও ২২টি ভারতীয় গরুসহ গ্রেফতার করা হয়। এছাড়াও জেলার ছাতক ও মধ্যনগর সীমান্ত এলাকায় পুলিশের এই অভিযান অব্যাহত রয়েছে। কিন্তু চোরাচালানের স্বর্গরাজ্য হিসেবে পরিচিত তাহিরপুর সীমান্তে কোন অভিযান না হওয়ার কারণে একাধিক চোরাচালান মামলার আসামী উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের কলাগাঁও গ্রামের রফ মিয়া, সাইফুল মিয়া, জঙ্গলবাড়ি গ্রামের লেংড়া জামাল, আইনাল মিয়া, হযরত আলী, চারাগাঁও গ্রামের আনোয়ার হোসেন বাবুল, লালঘাট গ্রামের খোকন মিয়া, রুবেল মিয়া, ইয়াবা কালাম মিয়া, লাকমা গ্রামের রতন মহলদা, কামরুল মিয়া, দুধেরআউটা গ্রামের জিয়াউর রহমান জিয়া, মনির মিয়া, কুড়েরপাড় গ্রামের নেকবর আলী ও বাদাঘাট ইউনিয়নের লাউড়গড় গ্রামের বায়েজিদ মিয়া, জসিম মিয়াগং তাদের গডফাদারকে নিয়ে দাপটের সাথে তাদের চোরাচালান বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে প্রায় ২বছর যাবত। তবে তাহিরপুর থানা থেকে ওসি সৈয়দ ইফতেখার হোসেন সম্প্রতি বদলি হয়ে যাওয়ার কারণে সীমান্ত চোরাকারবারীদের গডফাদার ও সোর্স বাহিনী থমকে গেলেও বন্ধ হয়নি তাদের অবৈধ বাণিজ্য। তাই লাউড়গড়, চাঁনপুর, টেকেরঘাট, বালিয়াঘাট, বীরেন্দ্রনগর ও চারাগাঁও সীমান্তসহ কামড়াবন্দ গ্রামে অভিযান পরিচালনা করলে চোরাকারবারীদের গর্ডফাদার ও সোর্স বাহিনীর মজুতকৃত কোটি টাকা মূল্যের অবৈধ কয়লা, পাথর, চিনি, সুপারী, কাঠ, বিড়ি, ইয়াবা ও মদসহ অবৈধ মোটর সাইকেল ও বিভিন্ন পন্যসামগ্রী উদ্ধার করা সম্ভব হবে জানা গেছে।
এব্যাপারে তাহিরপুর থানার নবাগত ওসি নাজিম উদ্দিন বলেন—আমি এই থানায় নতুন এসেছি, সকলের সহযোগীতা নিয়ে এব্যাপারে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। দোয়ারাবাজার থানার ওসি বদরুল হাসান সাংবাদিকদের জানান— গরু ও নৌকাসহ গ্রেফতার হওয়া ৮ চোরাকারবারীর বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দায়ের করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। শুল্ক ফাঁকি দিয়ে ভারত থেকে সীমান্ত পথে পাচাঁরকৃত মালামালসহ চোরাকারবারীদের গ্রেফতারের জন্য বিশেষ অভিযান অব্যাহত থাকবে।