নুসরাতের মত ভাগ্য হলনা জান্নাতির পুড়িয়ে হত্যার দুইমাসেও এগোয়নি মামলার কাজ

ক্রাইম রিপোর্ট সারাদেশ

নুসরাতের মত ভাগ্য হলনা জান্নাতির ৷ নুসরাত হত্যা মামলা যত তারাতারি তদন্ত হল এবং সাজা প্রদান করা হয়েছে তার বৃৃন্দু মাত্র সুযোগ পেলনা জান্নাতির পরিবার ৷

নরসিংদী সদর উপজেলার হাজিপুরে দশম শ্রেণির ছাত্রীকে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনার পৌনে দুই মাস পার হলেও থানায় মামলা হয়নি।

পরে আদালতে মামলা করলেও তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়নি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। থানায় মামলা না হওয়ায় প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন স্কুলছাত্রীর হত্যাকারীরা। সেই সঙ্গে খুনিদের অব্যাহত হুমকির মুখে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন নিহত স্কুলছাত্রীর পরিবারের সদস্যরা। খুনিরা প্রভাবশালী হওয়ায় এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছেন।

এদিকে আদরের সন্তানকে হারিয়ে পাগলপ্রায় জান্নাতির পরিবার। খুনিদের গ্রেফতারে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলেছে নিহতের পরিবার।

মাদক ব্যবসায় সহযোগিতা না করায় ২১ এপ্রিল রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় নরসিংদীর হাজিপুরের দশম শ্রেণির ছাত্রী জান্নাতি আক্তারের (১৬) গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেন স্বামী শিপলু, শাশুড়ি ও ননদ। ৪০ দিন দগ্ধ অবস্থায় মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে না ফেরার দেশে চলে যান জান্নাতি।

পুলিশ ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, প্রায় এক বছর আগে নরসিংদী সদর উপজেলার হাজিপুর গ্রামের শরীফুল ইসলাম খানের মেয়ে জান্নাতি আক্তারের সঙ্গে খাচেরচর গ্রামের হুমায়ুন মিয়ার ছেলে শিপলু মিয়ার প্রেম হয়।

কিছুদিন পর পরিবারের অমতে পালিয়ে বিয়ে করেন তারা। বিয়ের কিছুদিন যেতে না যেতেই স্বামীর আসল রূপ বেরিয়ে আসে। গৃহবধূ জান্নাতিকে মাদক ব্যবসায় সম্পৃক্ত করতে শাশুড়ি শান্তি বেগম ও স্বামী শিপলু চাপ প্রয়োগ করেন।

এতে রাজি হননি জান্নাতি। তার ওপর নেমে আসে অমানুষিক নির্যাতন। এরপর শ্বশুরবাড়ির লোকজনের পক্ষ থেকে পাঁচ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করা হয়। জান্নাতির দরিদ্র পরিবার যৌতুকের দাবি পূরণ করতে পারেনি।

ফলে জান্নাতির ওপর নেমে আসে ভয়াবহ নির্যাতন। যৌতুকের টাকা না দেয়াসহ মাদক ব্যবসায় জড়িত না হওয়ায় ২১ এপ্রিল রাতে স্বামী শিপলু, শাশুড়ি শান্তি বেগম ও তার মেয়ে ফাল্গুনী বেগম ঘুমন্ত অবস্থায় জান্নাতির শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেন। দগ্ধ হয়ে ছটফট করলেও তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাননি তারা। পরে এলাকাবাসীর চাপে জান্নাতিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। দীর্ঘ ৪০ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে ৩০ মে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জান্নাতির মৃত্যু হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *