বাবার বাড়ি থেকে টাকা এনে না দেয়ায় আপিয়া বেগম(২৫) নামে এক গৃহবধুকে শারীরিক নির্যাতনের পর কড়াই ভর্তি গরম সেমাই শরীরে ঢেলে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে জুয়া খেলায় আশক্ত স্বামী মাসুদের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার সকালে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার পশ্চিম সারডুবি গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটেছে।
নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধু বর্তমান হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য-কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আছে। এ ঘটনায় মামলা দায়ের প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছেন নির্যাতিতার পরিবার। অভিযুক্ত মাসুদ উপজেলার পশ্চিম সারডুবি গ্রামের আব্দুস সামাদের পুত্র আর নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধু একই গ্রামের আব্দুর রহমানের মেয়ে।

পরিবারের কাছে জানা গেছে, প্রায় ১৩ বছর আগে ৫০হাজার টাকা যৌতুক দিয়ে মাসুদের সাথে আপিয়ার বিয়ে দেয় তার পরিবার। বর্তমান তাদের তিনটি সন্তান রয়েছে। জুয়া খেলায় আশক্ত মাসুদ বিয়ের পর থেকেই প্রায় সময় তার স্ত্রীকে কারণে অকারণে বাবার বাড়ি থেকে টাকা আনার জন্য চাপপ্রদান করত। আর টাকা না আনলে আপিয়ার উপড় নেমে আসতো স্বামীর অমানবিক নির্যাতন। এ নিয়ে স্থানীয় পর্যায়ে গ্রাম্য শালিস হয়েছে কয়েকবার । এমতাবস্থায় গত সোমবার বাবার বাড়ি থেকে টাকা নিয়ে আসার জন্য আপিয়াকে চাপ সৃষ্টি করে স্বামী মাসুদ৷ আপিয়া টাকা আনতে রাজি না হওয়ায় তাকে মারধর করেন তার স্বামী। গতকাল সকালে পরিবারের জন্য সেমাই রান্না করছিলেন আপিয়া। এ সময় সন্তানেরা দুষ্টুমি করলে শাসন করেন আপিয়া। আর সেই অজুহাতে আপিয়াকে বেধরক মারপিট করে কড়াই ভর্তি গরম সেমাই তার শরীরে ঢেলে দেয় মাসুদ। পরে স্থানীয়রা আপিয়াকে উদ্ধার করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায় ৷
এ বিষয়ে হাতীবান্ধা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেলের আবাসিক অফিসার নাঈম হাসান নয়ন বলেন, ‘আপিয়া নামে এক নারীর শরীরের কিছু অংশ ঝলসে গেছে। বর্তমানে সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন’।
আপিয়ার মা মর্জিনা বেগম বলেন, ‘আমরা গরীব মানুষ তবুও যতটুকু পারি জামাই মাসুদকে টাকা দিয়ে সাহায্য করি। তবে জামাই খুবই খারাপ বিয়ের পর থেকে টাকার জন্য প্রায় সময় আমার মেয়েকে শুধু মারধর করে। আমি এর সঠিক বিচার চাই’।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মাসুদের মোবাইল ফোনে(০১৭৬৭৫৯৩৩২০) একাধিক বার কল করা হলেও কলটি গ্রহন করা হয়নি।
এ বিষয়ে বড়খাতা ইউপি চেয়ারম্যান আবু হেনা মোস্তফা কামাল সোহেল বলেন, ‘মাসুদ একজন খারাপ প্রকৃতির মানুষ। সে প্রায় সময় তার স্ত্রী কে মারধর করে। এ বিষয়ে স্থানীয়ভাবে অনেক বার বিচার করা হয়েছে। ভুক্তভোগীদের থানায় অভিযোগ করার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে’।

হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) ওমর ফারুক বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে’।