ধর্ষণ মামলার আসামিকে পিটিয়ে হত্যা

সারাদেশ সিলেট

সিলেট নগরের বনকলাপাড়া এলাকায় দুদু খান নামের এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। বুধবার রাত সাড়ে ১১ টার দিকে নগরের বন কলাপাড়া পয়েন্টে এমন একটি ঘটনা ঘটে।

নিহত দুদু খান স্বেচ্ছাসেবক লীগ কর্মী ছিলেন। তিনি এক সময় মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি, স্থানীয় কাউন্সিলর আফতাব হোসেন খানের কাছের লোক ছিলেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।

স্থানীয় জনগণের কাছে জানা যায়, বুধবার রাতে বন কলাপাড়া এলাকার শাহ রুমি মসজিদের মাইকে এলাকায় ডাকাত পড়েছে ঘোষণা দেয়া হয়। এ ঘোষণা শুনে এলাকাবাসী জড়ো হয়ে বন কলাপাগড়ার গোলাপ পয়েন্টে দুদুকে পিটিয়ে হত্যা করেন। দুদু এলাকায় ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন বলে অভিযোগ করা হয়।

ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে, এলাকার সড়কের মধ্যে দুদুর লাশ পড়ে আছে। তার মাথা, বুক ও চোখে আঘাত করা হয়েছে। লাশের হাতে একটি দা রয়েছে।

এলাকাবাসী জানান, নিহত দুদুর বিরুদ্ধে ধর্ষণসহ একাধিক মামলা রয়েছে। গত পহেলা বৈশাখের পরের দিন বন কলাপাড়ায় সংঘটিত একটি ধর্ষণ মামলার আসামি দুদু। তিনি নিজেকে স্বেচ্ছাসেবক লীগ কর্মী ও কাউন্সিলরের লোক হিসেবে এলাকায় পরিচয় দিতেন বলে ঘটনাস্থলে উপস্থিত একাধিক ব্যক্তি জানিয়েছেন।

এ ব্যাপারে সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও স্থানীয় কাউন্সিলর আফতাব হোসেন খাঁন জানান, মসজিদে মাইকিং করে গণপিটুনিতে একজনকে মারা হয়েছে। কী কারণে মারা হয়েছে, তা খোঁজ নিয়ে দেখছি। তবে দুদুর কোনো রাজনৈতিক পরিচয় নেই। সে আমার কখনও সঙ্গে ছিল না।

সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার জেদান আল মুসা সাংবাদিকদের বলেন, বন কলাপাড়া থেকে দুদু নামে একজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তার শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এলাকাবাসী জানিয়েছে, ডাকাতির প্রস্তুতিকালে গণপিটুনিতে দুদু মারা গেছেন। দুদুর বিরুদ্ধে ধর্ষণসহ বিভিন্ন অভিযোগে ৪-৫টি মামলা রয়েছে।

তবে দুদু খানের ভাই কলাপাড়া পয়েন্টে নিউ সাদিয়া টেলিকমের মালিক হাসেম খান দাবী , ‌‌’পরিকল্পিতভাবে আমার ভাইকে পিটিয়ে হত্যা করেছে জামায়াত কর্মী রিপন, ছাত্রদল ক্যাডার ও একাধিক মামলার আসামি শাহ আলম, কালা জামাল, বেলাল আহমদ ও আওয়ামী লীগ কর্মী মনু। তারা দুদু খানকে হত্যার আগে আমরা চার ভাইয়ের ও আমার এক খালার পীরমহল্লার বাসায় ও আমার নিউ সাদিয়া টেলিকম নামের দোকানে হামলা করে ভাঙচুর করে। পরে দুদু খানকে রাস্তায় পেয়ে পিটিয়ে হত্যা করার পর মাইকে ঘোষণা দিয়ে ডাকাত পড়েছে মিথ্যা বলে জনতাকে জড়ো করে।’

হাসেম খান আরও বলেন, ‘আমার ভাই এক সময় মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ছিল , স্থানীয় কাউন্সিলর আফতাব হোসেন খানের অনুসারী ছিল। তবে বছর খানেক আগে আফতাব হোসেনের সঙ্গে বিরোধ হলে তারা আমাদের বাসায় হামলা করে। ওই সময় হামলায় আমরা ৬ ভাইয়ের মধ্যে চারজন গুলিবিদ্ধ হই। এরপর থেকে আফতাবের সঙ্গে দুদুর সম্পর্ক ভালো ছিল না। আজ তারা ছাত্রদল, জামায়াত ও আওয়ামী লীগ সবাই মিলে ভাইটারে মেরে পেলল।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *