সকালের বাংলা: শুক্রবার সন্ধ্যারাতে রংপুরে বাড়ি ফেরার পথে হুসেন আহমেদ বড়লস্কর (৬০) নামে এক মৌলবীকে মারধরের ঘটনায় উত্তাল হয়ে ওঠে গোটা রংপুর। শুধু তাই নয়, সদরঘাটে হামলার শিকার হন এক ট্যাক্সিচালক ও অটোচালক। ফলে পরিস্থিতি আরও অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। বিক্ষিপ্ত এহেন ঘটনার প্রতিবাদে রাত সাড়ে ৭ টা নাগাদ রংপুর ফাঁড়ি ঘেরাও করেন শতাধিক লোক। পরিস্থিতি সামাল দিতে বিশাল পুলিশবাহিনী ও সিআরপিএফ ছুটে যায় ফাঁড়িতে। আসেন ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার প্রতাপ সিনহা, অ্যাডিশনাল এসপি (সদর) জগদীশ দাস,অ্যাডিশনাল এসপি (বর্ডার) গৌরব আগড়ওয়াল,ডিএসপি এ জে বড়ুয়া,সদর থানার এসি দিতুমণি গোস্বামী। এছাড়াও বিভিন্ন ফাঁড়ির ইনচার্জও আসেন।
মৌলবীকে মারধরের ঘটনায় অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবিতে রাত দশটা পর্যন্ত শত শত জনতার ভিড় জমেছিল রংপুর ফাঁড়িতে। সেখানে দফায় দফায় স্থানীয় প্রবীণদের সঙ্গে বৈঠক করেন পুলিশ কর্তারা। শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য অনুরোধ জানায় পুলিশ। যদিও শীঘ্রই অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে অনড় ছিল ক্ষুব্ধ জনতা। পরে পুলিশের কাছ থেকে আশ্বাস পেয়ে ঘেরাও প্রত্যাহার করে নেন এলাকাবাসী। রাত ন’টা নাগাদ এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে একটি এজাহার দায়ের করেন মৌলবীর ছেলে এবাদুর রহমান বড়লস্কর।

এজাহারে বলা হয়েছে, হোসেন আহমেদ বড়লস্কর সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ রংপুরে বাজারে স্কুটি দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে একদল যুবক অতর্কিত হামলা চালায়। মৌলবীকে জয় শ্রীরাম বলতে চাপ সৃষ্টি করে দুষ্কৃতীরা। তাদের দাবি প্রত্যাখ্যান করায় হোসেন আহমেদকে স্কুটি থেকে ফেলে কিল ঘুষি মারা হয় বলে অভিযোগ। গুরুতর আহত হন তিনি। সঙ্গে সঙ্গে তাকে শিলচর মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়েছে। আট জনকে অভিযুক্ত করে একটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, হামলাকারীদের সঙ্গে রড, লাঠি ও ধারালো অস্ত্র ছিল। অভিযুক্তরা হল-সঞ্জীব দাস, অভি দাস, অভিনাশ দাস, বাপন দাস, সুভেন্দু ঘোষ,শিব দাস,সুধাংশু রায়।
অপরদিকে শিলচর সদরঘাটে মতিবুর লস্কর নামে এক ট্যাক্সি চালক হামলার শিকার হয়েছেন। তার মাথায় গুরুতর আঘাত করা হয়েছে বলে অভিযোগ। শুধু তাই নয়, অপর এক অটো চালককেও মারধর করা হয়েছে। এই ঘটনার পরই সদরঘাট এলাকায় পুলিশ ও সিআরপিএফ মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি রংপুর এলাকায়ও পুলিশি প্রহরা জোরদার করা হয়েছে।
উল্লেখ্য কিছুদিন আগে রংপুর নরসিংহ আখড়ার সামনে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বিবাদের জেরে শুক্রবার সকাল থেকে রংপুর ও সদরঘাট এলাকায উত্তাল হয়ে ওঠে। অভিযুক্তকে গ্রেফতারের দাবিতে এদিন সকালে রংপুরে সড়ক অবরোধ করে উত্তেজিত জনতা। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই ওই ঘটনায় অভিযুক্ত যুবক নাসিমুল হক লস্করকে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে সমঝে দেওয়া হয় পুলিশের কাছে। এরপর ওই যুবককে সদর পুলিশ হেফাজতে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু এতেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত রংপুর সদরঘাট এলাকায় বিক্ষিপ্ত ঘটনা ঘটেছে। পাশাপাশি গোটা রংপুর জুড়ে জনমনে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে। (সূত্র:an.c)
