সাকালের বাংলা: পরিবারের অস্বচ্ছলতার কারণে মাত্র ১৪ বছর বয়সেই ব্যাটারি চালিত একটি ভ্যানগাড়ি চালিয়ে টাকা উপার্জন করতেন শিশু আবু শাহিন। তার বাবাও ওই ভ্যানটিই চালাতো। অভাব ঘুচাতেই বাবা-ছেলে সংগ্রাম করেছিলেন। এবার সেই উপার্জনের হাতিয়ারটিই কেড়ে নিল দুর্বৃত্তরা। কুপিয়ে জখম করেছে আবু শাহিনকে। ঘটনাটি যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলার।

আবু শাহিনের চাচা মুনসুর সাংবাদিকদের জানান, শুক্রবার সকালে তার মোবাইলে ফোন আসে ভ্যানগাড়িতে ভাড়ায় যাওয়ার জন্য। ভাত না খেয়েই সকাল সকাল বেরিয়ে পড়ে অজ্ঞাত যাত্রীর ফোন পেয়ে। দুপুরের দিকে কয়েকজন ভদ্রবেশধারী দুর্বৃত্ত শাহীনের ভ্যানটি ভাড়া নেয়। শাহীন তাদের নিয়ে সাতক্ষীরা জেলার পাটকেলঘাটা থানার ধানদিয়ার দিকে রওনা হয়। ধানদিয়া গ্রামের মাঠে ঢুকে একটি পাটক্ষেতের পাশে ওই দুর্বৃত্তরা শাহীনের মাথা ফাটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে ভ্যান ও তার ব্যবহৃত মোবাইল নিয়ে পালিয়ে যায়।

ঘটনাস্থলে অজ্ঞান হয়ে পড়েছিল সে। পরে জ্ঞান ফিরে কান্না শুরু করলে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা থানায় খবর দেয়।
পাটকেলঘাটা থানার ওসি রেজাউল হোসেন বলেন, এলাকাবাসীর কাছ থেকে খবর পেয়ে শাহীনকে উদ্ধার করে খুলনার আড়াইশ’ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনার সাথে জড়িতদের ধরতে পুলিশ কাজ করছে বলেও তিনি।

তার চাচা মুনসুর আরও জানান,শাহীন যশোরের কেশবপুর উপজেলার মঙ্গলকোট গ্রামের হায়দার আলীর ছেলে। বসতভিটে ছাড়া তাদের কোন জমিজমা নেই। সম্প্রতি একটি এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে তিনি একটি ব্যাটারিচালিত ভ্যানগাড়ি কেনেন। পিতা-পুত্র দুই শিফটে ওই ভ্যানটি চালিয়ে সংসারের হাল ধরে রেখেছিলেন। জীবিকার সেই শেষ সম্বলটিও নিয়ে গেল দুর্বৃত্তরা। এখন ছেলের বেঁচে থাকা নিয়ে তৈরি হয়েছে শঙ্কা। এর সাথে আছে এনজিওর ঋণের কিস্তি, মেয়ের পড়াশোনার খরচ চালানো, আর খাওয়া-পরার টেনশন।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আশঙ্খাজনক অবস্থায় শাহীনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা থেকে ঢাকায় নেওয়া হচ্ছিল।


আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সাংবাদিক সংস্থা খুলনা ৷ পুলিশের প্রতি বিশেষ ভাবে অনুরোধ জানানো হচ্ছে বিষয়টিকে দেখার জন্য ৷ অপরাধীদের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হোক৷