ঈদের আগেই শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধের সিদ্ধান্ত

জাতীয়

আসন্ন ঈদুল আযহার আগে গার্মেন্টসহ সব শ্রমিকের বেতন, ভাতা পরিশোধ নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট কোর কমিটি। একই সঙ্গে ঈদের আগে শিল্প এলাকায় চলমান পরিস্থিতি নজরদারিতে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর এবং শ্রম অধিদপ্তরের যৌথ উদ্যোগে মনিটরিং সেল গঠন করবে মন্ত্রণালয়।

সোমবার (০৮ জুলাই) সচিবালয়ে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ঈদুল আযহার আগে শিল্প প্রতিষ্ঠানের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা ও শ্রম পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ক্রাইসিস ম্যানজমেন্ট বিষয়ক কোর কমিটির ৪৩তম সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। 

শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ানের সভাপতিত্বে বৈঠকে মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব কে এম আলী আজম, বিজিএমইএ’র পরিচালক মুনসুর খালিদ, বিটিএমইএ’র পরিচালক জামাল উদ্দিন, শিল্প পুলিশের মহাপরিচালক আবদুস সালাম, জাতীয় শ্রমীক লীগের সভাপতি শুক্কুর মাহমুদ প্রমুখ। 

বৈঠক শেষে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব কে এম আলী আজম বলেন, বৈঠকে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। শিল্প কারখানার মালিকদের বলা হয়েছে আসন্ন ঈদুল আযহার আগে সব বেতন ভাতা পরিশোধ করতে হবে। এতে তারা রাজি হয়েছে। আমি আশা করি স্টেকহোল্ডাররা আগের মতো এবারও আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করবে। 

ঈদের সময় যাত্রীদের অতিরিক্ত চাপ কমাতে ধাপে ধাপে ছুটির বিষয়ে কি আলোচনা হয়েছে? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঈদে রাস্তায় অতিরিক্ত যাত্রী ও যানবাহনের চাপ কমাতে পর্যায়ক্রমে ছুটি ও সংশ্লিষ্ট এলাকায় ব্যাংক খোলা রাখার বিষয়ে আগামী বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এছাড়া ঈদের আগে শিল্প এলাকায় চলমান পরিস্থিতি নজরদারিতে শ্রম অধিদপ্তরের উদ্যোগে মনিটরিং সেল গঠন করা হবে।

তিনি বলেন, বৈঠকে বিজিএমইএ, বিকেএমইএ ও বিটিএমইএ নেতারাসহ গার্মেন্ট ও শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিকরা এবিষয়ে ঐক্যমত পোষণ করেন। তারা বৈঠকে বলেছেন, কোরবানির ঈদের ছুটির আগেই শ্রমিকদের বেতন-বোনাস এবং বকেয়া (যাদের আছে) পরিশোধ করবেন। বিষয়টি নিয়ে শিল্পাঞ্চল এলাকার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি যাতে স্বাভাবিক থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখার জন্য শিল্প পুলিশের মহাপরিচালককে নির্দেশ দেওয়া হয়।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, বৈঠকে শ্রম প্রতিমন্ত্রী ঈদ উপলক্ষে সব গার্মেন্টস শ্রমিকদের এলাকাভিত্তিক পর্যায়ক্রমে ছুটি দেওয়ার পাশাপাশি শিল্পাঞ্চলে যেন শ্রমিক ছাঁটাই ও হয়রানিসহ অপ্রীতিকর কোনো ঘটনা যে না ঘটে সে বিষয়ে দিক নির্দেশনা দেন। 

এছাড়া তৈরি পোশাক শিল্পখাতে প্রায় প্রতিমাসে কিছু কিছু গার্মেন্ট মালিক শ্রমিকের বেতন-ভাতা যথাসময়ে পরিশোধ করতে না পারার কারণে সংশ্লিষ্ট কারখানায় অনেক সময় শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দেয়। আর এ অবস্থা থেকে উত্তোরণে কারখানা কর্তৃপক্ষ কখনো কখনো কোনো ধরনের পূর্ব নোটিশ ছাড়াই আকস্মিক কারখানা বন্ধ করে দেন। এর ফলে শ্রমিকরা তাদের বেতন-ভাতার দাবিতে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। এছাড়া সুনির্দিষ্ট নিয়ম না মেনে বিভিন্ন সময়ে শ্রমিক ছাঁটাই, ওভারটাইম ভাতা এবং বার্ষিক ছুটির টাকা না দেওয়া, কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তার অভাবসহ বিভিন্ন ইস্যুতে মাঝে মধ্যে কোনো কোনো গার্মেন্টে শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দেয়। 

সভায় মহাপরিদর্শক, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর,  শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *