সরদার কালাম কলারোয়া সাতক্ষীরা :
কেরামবোর্ড খেলা অবশ্যই ইতিবাচক।কিন্তু সেটা যদি হয় বাজি ধরা কিংবা অনৈতিক টাকার হার-জিতের বিনিময়ে,তবে সেটা আর আনন্দের খেলা-প্রতিযোগিতার মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে জুয়ায় পরিণত হয়!বিভিন্ন বাজার,মোড় এলাকার চায়ের দোকান’র কেরামবোর্ড বিনোদন স্থানগুলো হয়ে উঠেছে জুয়ার আসরে,নষ্ট হচ্ছে তরুণ প্রজন্ম-কিশোররা।।এমনই খেলা চলছে কলারোয়া দেয়াড়ায় চায়ের দোকানের আড়ালে রমরমা ভাবে কেরামবোর্ড’র বিনোদন নামে জুয়ার আসর।বিশেষ করে উপজেলার দেয়াড়ার খোরদো বাজারসহ আশপাশের কয়েকটি বাজার ও মোড়ের অনেক চায়ের দোকানে এই জুয়া ব্যবসাটি বেশ বেড়ে গেছে।সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কেরামবোর্ডে’র দোকানগুলোতে ভিড় জমাচ্ছে স্কুল,কলেজ পড়ুয়া ছাত্ররা,এমনকি দিন মজুরসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষজন।বইয়ের পাতা থেকে মুখ ফিরিয়ে এ কেরামবোর্ড খেলার নেশায় আসক্ত হয়ে নষ্ট হচ্ছে তরুণ প্রজন্ম’-কিশোর-যুব সমাজ।হয়ে উঠছে বখাটে অনেক ছেলেরা।
অনুসন্ধান বলছে,বয়োজষ্ট ও অন্যান্য বয়সী কেরামবোর্ড খেলোয়াড়রা চায়ের দোকানীকে ১০ টাকা হারে গেম খেলার মাধ্যমে ওই খেলোয়াড়রা নিজেদের মধ্যে গোপন চুক্তি ভিত্তিতে মোটা অঙ্কের টাকা বিনিময় করে থাকে।
সচেতনজনেরা বলছে,আংশিক কিছু কেরামবোর্ডে অবসর সময়ের বিনোদন হিসেবে নিয়ে থাকেন কিছু মধ্য বয়সী লোকজন।আর তারই সুযোগ ধরে তরুণ প্রজন্মের অধিকাংশ স্কুল পড়ুয়া ও অন্যান্য বয়সী বাজি ধরা জোয়াড়ীরা বেশিরভাগ কেরামবোর্ডে এ খেলায় মেতে উঠেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়,উপজেলা দেয়াড়ার খোরদো ও অন্যান্য বাজার এবং বিভিন্ন মোড়ের চায়ের দোকানে এটি চলছে হরহামেশা।সেখানে দেখা যায় ছোট থেকে বিভিন্ন বয়সী মানুষ কেরামবোর্ডে মেতে থাকে অনৈতিক অর্থ ব্যয়ের খেলার নেশায়।
এ কেরামবোর্ড খেলার আসর পাওয়া গেছে ছোট বড় বাজার থেকে গ্রামাঞ্চলের বিভিন্ন মোড়ের টল দোকানগুলোতে।অনেক সময় নানা বাকবিতন্ডা ও মারমুখী হাতাহাতির ঘটনা ঘটে উপস্থিত খেলোয়াড় ছেলেদের মধ্যে।সেখানে সাধারণ গেমের পাশাপাশি টাকার বাজি ধরে,কিংবা অন্যকোন পণ্যের বাজি ধরে জুয়া খেলার নেশায় যুব সমাজ নষ্ট হচ্ছে বলে-এ খেলায় আপত্তি তুলেছে সুশীল-সচেতন ব্যক্তিবর্গরা।অনুসন্ধানুযায়ী_এ খেলায় গেম প্রতি ১০টাকা পান কেরামবোর্ড মালিকরা বলে জানা গেছে।কিন্তু খেলোয়াররা বা তাদের পাশে উপস্থিত অন্যরা বিপুল পরিমাণ গোপন নগদ টাকা,বিভিন্ন পণ্য ইত্যাদি বাজিতে এবং গোপন চুক্তি ভিত্তিতে পরাজিত ব্যক্তি বা ব্যক্তিদ্বয় বিজয়ীদের টাকা প্রদান করে থাকেন বলে জানান কয়েকজন সচেতন অন্যান্য পেশার ব্যবসায়ীরা।এভাবেই চলছে গোপনে জুয়ার আসর।সেখানে উঠতি বয়সের স্কুল কলেজ ও অন্যান্য পেশার লোকজন এই খেলায় মেতে উঠেছে!প্রতিনিয়ত চলছে অশ্লীল ভাষার কথাবার্তাও সেসব খেলার আসরে বলে জানান তারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক বলেন,,উঠতি বয়স ও স্কুলের ছেলেরা দিনে দিনে এ খেলায় আসক্ত হয়ে নষ্টের দিকে চলে যাচ্ছে এমনকি বিভিন্ন অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করে থাকে তারা সে সময়।এবং বখাটেদের উৎপাত বেড়েছে বিভিন্ন বাজার এলাকা ও রাস্তায়।তাছাড়া ছেলেদের নিষেধ করেও বন্ধ হচ্ছে না বলে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে বহু অভিভাবকরা।
অতিষ্ঠ অভিভাবকদের দাবি,বাড়ি থেকে বেরিয়ে চোখের আড়াল হওয়া স্কুল পড়ুয়া ছেলেদের এ কেরামবোর্ড খেলায় যেন সুযোগ না দেয় দোকানীরা।এ নিয়ে,গ্রামাঞ্চলের মোড় এলাকার চায়ের দোকানগুলোতে নিষেধও করা হয়েছে বলে জানান একাধিক আভিভাবকরা।
কিন্তু,কে শোনে কার কথা,টাকার লোভে এ সুযোগ হাত ছাড়া করছেন না দোকানীরা।এজন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণে দ্রুত আইন প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেন সকল অভিভাবকরা।উপজেলার দেয়াড়া’র খোরদো বাজারসহ বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলের মোড় ও ছোট বড় বাজারে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চায়ের দোকানে এ কেরামবোর্ড খেলায় স্কুল-কলেজে পড়ুয়া ছাত্ররা ক্লাস ফাঁকি দিয়ে অমনোযোগী হয়ে আড্ডা জমাচ্ছে বলে মৌখিক অভিযোগের সুরে ব্যক্ত করেন অধিকাংশ সচেতনজন ও অভিভাবকরা।এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট দোকান মালিকরা জানিয়েছেন-তারা গেম প্রতি ১০ টাকা করে নেন।
সাধারণ ক্রেতাদের কাছে চা-বিস্কুট বিক্রয়ের পাশাপাশি খেলা চললে গেম প্রতি ১০ টাকার পাশাপাশি তাদের কাছেও চা-বিস্কুট-ঠান্ডা বিক্রয় হয়ে থাকে।কিন্তু,খেলোয়াররা গেমের আড়ালে বাজি ধরে টাকা বিনিময় করেন কিনা তা তারা জানেন না।এবং জুয়ার ব্যাপারে তারা কোনভাবেই অবগত নন বলে অধিকাংশ দোকানিরা জানান।
