হেলাল শেখঃ গাজীপুর সিটি নির্বাচনে সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মনোনয়ন বাতিল-নৌকা মার্কা’র প্রার্থী আলহাজ্ব এ্যাডঃ আজমত উল্লা খান জনমতে এগিয়ে আছেন, এখন নৌকার বিপক্ষে (স্বতন্ত্র) হিসেবে প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমের মা বেগম জায়েদা খাতুন। গাজীপুর সিটি নির্বাচনে ‘থলের বিড়াল বেড়িয়ে আসছে জাহাঙ্গীর আলমের মনোনয়ন বাতিল’ হওয়ায় নৌকা মার্কার প্রার্থী আজমত উল্লা’র অবস্থান আগের থেকে অনেক ভালো।
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে মেয়র পদে ১২জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিলেও (২৭ এপ্রিল ২০২৩ইং) এর পর জাহাঙ্গীর আলমের মনোনয়ন বাতিল হওয়ায় শক্তিশালী ভাবে আর কেউ নৌকা মার্কাকে হারাতে পারবে না বলে অনেকেই অভিমত প্রকাশ করেছেন। গাজীপুর সিটি নির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাহার ৮মে, প্রতীক বরাদ্দ ৯ মে, ভোট গ্রহণ (২৫ মে ২০২৩ইং) তারিখ। মোট ভোটার সংখ্যা-১১, ৮৫, ০৯৭ জন। ওয়ার্ড সংখ্যা-৫৭টি, সংরক্ষিতমহিলা ওয়ার্ড সংখ্যা-১৯টি, মোট ভোট কেন্দ্র-৪৭৫টি, মোট বুথ সংখ্যা-৩০০০টি। সূত্র জানায়, আগামী ২৫ মে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন (গাসিক) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে এইবার ভোট হওয়ার কথা রয়েছে বলে জানিয়েছেন ইসি সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম। আওয়ামী লীগর মনোনীত নৌকা মার্কার প্রার্থী হয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব এডঃ আজমত উল্লা খাঁন সাহেব । নৌকা মার্কার বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অবস্থান নিয়েছেন আওয়ামীলীগ থেকে বহিস্কার হওয়া সাবেক মেয়র এড. মোঃ জাহাঙ্গীর আলম। এদিকে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে দিন রাত চলছে নৌকা মার্কার ভোট চেয়ে প্রচারণা। সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, গাজীপুর সিটি নির্বাচনে জনমতে এগিয়ে আছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব এডঃ আজমত উল্লা খাঁন সাহেব নৌকা মার্কা প্রতীক। নেতা কর্মীরাও চাচ্ছেন আজমত উল্লা খান সাহেব যেন গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র হন।
জানা গছে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কার্যকরি কমিটির সদস্য ও গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সফল সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা, এডভোকেট, আলহাজ্ব আজমত উল্লা খাঁন সাহেবকে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকা মার্কার প্রার্থী করা হয়েছে। সেখানে মেয়র পদে সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমসহ ১২জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছন। সরেজমিনে গিয়ে গাজীপুর থেকে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছ, গাজীপুর সিটি নির্বাচনে জনমতে এগিয়ে আছেন আলহাজ্ব আজমত উল্লা খাঁন নৌকা মার্কা। শনিবার সকাল থেকে নির্বাচনী এলাকা কাশিমপুর ৬নং ওয়ার্ডসহ বিভিন্ন ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে কর্মী সভায় উপস্থিত হয়ে জোর প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন নৌকা মার্কার প্রার্থী জনাব আলহাজ্ব আজমত উল্লা খাঁন সাহেব, তিনি জনগণের কাছে গিয়ে সবার কাছে দোয়া চাচ্ছেন এবং তিনি শতভাগ আশাবাদী নৌকা মার্কা বিপুল ভোটে বিজয়ী হবে ইনশাআল্লাহ।
সূত্র জানায়, ১৯৫৫ সালের ১ জানুয়ারি গাজীপুর জেলা সদরের টঙ্গী খাঁন পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন আজমত উল্লা খাঁন। তাঁর পিতা মৃত ইউসুফ খাঁন ও মাতা ফাতেমা খানম। আজমত উল্লা খাঁন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী পরিবারের সন্তান হয়েও নিজের মেধা ও যোগ্যতা দিয়ে শিক্ষা এবং রাজনৈতিক পরিমন্ডলে গুরুত্বপূর্ণ স্থান অর্জন করেছেন। আইন পেশায় নিয়োজিত হয়েই এডভোকেট আজমত উল্লা খাঁন সমাজের গরীব-দুঃখী ও তার দলের রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের বিনা পারিশ্রমিকে আইনী সহায়তা দিয়ে আসছেন।
বিশেষ করে ১৯৬৯ সালে টঙ্গী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক থেকে আজমত উল্লা খাঁন তার রাজনৈতিক হাতেখড়ি। এরপর ১৯৭৫ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার ঘটনার পর সেই হত্যাকারী ষড়যন্ত্রের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে অংশগ্রহণ এবং স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনসহ রাজনৈতিক আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন তিনি। আজমত উল্লা খাঁন পৌর চেয়ারম্যান ও মেয়রের দায়িত্ব পালনকালীন সময়ে স্থানীয় সরকারে বিশেষ অবদান রাখায় তিনি বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন সংস্থার পক্ষ থেকে একাধিক বিশেষ পুরুস্কারে ভুষিত হন। এ ছাড়াও দেশ মাতৃকার সংকটময় কালে তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে বিশেষ অবদান রাখেন। শিক্ষাজীবনঃ আজমত উল্লা খাঁন আজিমপুর সরকারি প্রাইমারী স্কুল থেকে প ম শ্রেণি পাস করে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হন নবাব হাবিবুল্লাহ মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে। পরে সেখান থেকেই তিনি কৃতিত্বের সাথে এসএসসি পাস করেন। কলেজ জীবনে প্রতিবাদী ছিলেন আজমত উল্লা খাঁন। তিনি এইচএসসি ও ডিগ্রি পাস করেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মহাবিদ্যালয় থেকে। তিনি বাস্তব জীবনে সততার সাথে জীবন সংগ্রাম করেই আজ তিনি আজমত উল্লা খাঁন সফল নেতা হয়েছেন। দুঃখের বিষয় হলো তিনি দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় তার বাবা ইউসুফ খাঁন পরলোক গমণ করেন। পিতা মৃত্যুর পর তার পিতার অবর্তমানে বড় ভাই আব্দুর রহমান সাহেব তাকে আগলে রেখে লেখাপড়া করিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সর্বোচ্চ এলএলএম ডিগ্রি অর্জনের মাধ্যমে শিক্ষাজীবন শেষ করান। তিনি লেখাপড়া শেষ করে আইনজীবি হিসেবে কর্মজীবনে পা রাখেন, তখন থেকেই পেশাগত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি রাজনীতি ও বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ডে নিজেকে সক্রিয় রেখেছেন।
রাজনৈতিক জীবনঃ আজমত উল্লা খাঁন রাজনীতিতে আসার পর বিভিন্ন প্রতিকুলতার মধ্যদিয়ে রাজনীতি করতে হয়েছে তাকে রাজনীতিতে তার দলের মধ্যে প্রতিদ্ব›িদ্বতা ছিলো অনেক শক্ত। অন্য দলের প্রতিপক্ষ তো আছেই। আজমত উল্লা খাঁন ১৯৬৯ সালে তৎকালীন টঙ্গী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন থেকে যদিও তার রাজনৈতিক জীবন শুরু, কিন্তু ১৯৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধের পর, ১৯৭২ সালে ভাওয়াল গড় জেলা ছাত্রলীগের প্রকাশনা সম্পাদক ছিলেন। ১৯৭৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন পরিষদ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও “১৯৭৮ সালে শ্রমিকলীগ টঙ্গী আ লিক কমিটির আহŸায়ক এবং সাধারণ সম্পাদক ভাওয়াল গড় ছাত্রলীগ। ১৯৭৯ সাল থেকে ‘১৯৯০ সাল পর্যন্ত এক টানা টঙ্গী থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন”। ‘১৯৯১ সালে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ন-সাধারণ সম্পাদক, ১৯৯৬ ও ২০০৩ সালে পরপর দুইবার জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন। ২০০১ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী আইনজীবি পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ন-সাধারণ সম্পাদক, ২০১৫ সালে গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ২০১৮ সালে কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য পদ লাভ করেন। উক্ত আজমত উল্লা খাঁন বর্তমানে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আইন ও বিধি উপ-কমিটির সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করছেন। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে সততার সাথে কাজ করেন আজমত উল্লা খান। আরো অনেক পদে আছেন এবং মানবতার কল্যাণে কাজ করার কারণে গোয়েন্দা রিপোর্ট ও দলীয় নেতাকর্মীদের তথ্যমতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা’র দলীয় মনোনয়ন নৌকা মার্কা মনোনীত হয়েছেন আজমত উল্লা খাঁন। অনেকেই বলছেন যে, শুধু নৌকা মার্কা পেলেই হবে না, এটা ভোটের লড়াই হবে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে, কে হবেন গাজীপুর সিটি মেয়র? সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম ও আজমত উল্লা খানের ভোটের মূলত লড়াই হবে বলে অনেকেই অভিমত প্রকাশ করেন। গত শনিবার সকাল থেকে গাজীপুর সিটি নির্বাচনী এলাকা কাশিমপুর ৬নং ওয়ার্ডসহ প্রতিটি ওয়ার্ডে গিয়ে প্রচারণা চালাতে দেখা যায় জনাব আলহাজ্ব আজমত উল্লা খাঁনকে।
নৌকা মার্কার প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব এ্যাডঃ আজমত উল্লা খান সাহেব বলেন, আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে নৌকা মার্কা উপহার দিয়েছেন এতে আমি ধন্য, নৌকা মার্কার বিজয়ের লক্ষ্যে আমি সবার সহযোগীতা চাই। আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, কৃষকলীগ, জাতীয় শ্রমিক লীগসহ আওয়ামী সহযোগী সংগঠনের সকল নেতা কর্মীর কাছে একটাই দাবি-আপনাদের মার্কা-নৌকা মার্কা, তাই নৌকা মার্কার বিজয়ের লক্ষ্যে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহŸান জানাচ্ছি। বঙ্গবন্ধুর মার্কা-নৌকা মার্কা, আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র মার্কা-নৌকা মার্কা, তাই সবার কাছে নৌকা মার্কায় ভোট চেয়ে সকলের প্রতি দোয়া কামনা করছি। গাজীপুর সিটি’র সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে, আমি ৩ বছর মেয়রের দায়িত্ব পালন করে অনেক উন্নয়নমূলক কাজ করেছি। আমার সাথে যারা বেঈমানি করেছে আমি তাদের বিচার চাই।
