মারুফ সরকার, স্টাফ রিপোর্টার: ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) আওতাধীন এলাকায় অন্তত ২০ ফিট চওড়া রাস্তা নির্মাণের জন্য জনগণকে জায়গা ছাড়ার আহবান জানিয়েছেন মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম।
বুধবার (০৪ অক্টোবর ২০২৩) সকালে ডিএনসিসি মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম ১৪নং ওয়ার্ডের আওতাধীন মিরপুর, শেওড়াপাড়া এলাকায় চলমান উন্নয়ন কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে এলাকাবাসীর সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন।
মতবিনিময় সভায় মেয়র নাগরবাসীর সুযোগ-সুবিধা ও সমস্যার কথা সরাসরি শোনেন এবং দ্রুত সমস্যা সমাধানে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘শুধু প্রধান সড়ক প্রশস্ত হলে হবে না। প্রধান সড়কের পাশাপাশি টারশিয়ারি রোড প্রশস্ত করা হলে যানজট কমে যাবে। তবে ন্যুনতম ২০ ফিট রাস্তা নির্মাণের জন্য জায়গা ছেড়ে দিতে হবে। জনগণ জায়গা ছাড়লে আমরা রাস্তা নির্মাণ করে দিব। রাস্তা চওড়া হলে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি, এম্বুলেন্স সহজে দ্রুত সময়ে যাওয়া আসা করতে পারবে।’
জনগণ সম্পৃক্ত হলে সব কাজ বাস্তবায়ন করা সহজ হয়ে যায় উল্লেখ করে মেয়র বলেন, ‘রাস্তা চওড়া করার জন্য আমি কাউন্সিলরদের সঙ্গে নিয়ে উচ্ছেদ করলে অনেকে অসন্তুষ্ট হোন। কিন্তু রাস্তা চওড়া হলে এই সুবিধা মেয়র ও কাউন্সিলররা পাবে না। বরং সর্বস্তরের জনগণ এই সুবিধা ভোগ করবে। অতএব জনগণের স্বার্থে আমরা আমাদের কাজ করে যাব।’
আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘নগরের উন্নয়নে জনগণের সহযোগিতার বিকল্প নেই। জনগণ ঠিকমতো নিয়মিত হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধ করলে উন্নয়ন কাজ করার জন্য সিটি কর্পোরেশনের সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। ট্যাক্স পরিশোধ করতে এখন আর সিটি কর্পোরেশনে যেতে হয় না। অনলাইনে ঘরে বসে ট্যাক্স দিন। জবাবদিহিতার মাধ্যমে আমরা নাগরিক সেবা পৌছে দিতে অনলাইনে কার্যক্রম পরিচালনা করছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে অনলাইনে ট্রেড লাইসেন্সও প্রদান করা হবে। পরীক্ষামূলকভাবে অনলাইনে ট্রেড লাইসেন্স প্রদানের কাজ চলছে।
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে জনগণকে সচেতন হওয়ার আহবান জানিয়ে বলেন, ‘ড্রেন বা নর্দমার পানিতে কিন্তু এডিস মশার জন্ম হয় না। জমে থাকা স্বচ্ছ পানিতেই এডিসের লার্ভা জন্মায়। নিজেদের বাসাবাড়িতে ফুলের টব, অব্যবহৃত টায়ার, ডাবের খোসা, চিপসের খোলা প্যাকেট, বিভিন্ন ধরনের খোলা পাত্র, ছাদ কিংবা অন্য কোথাও যেন পানি জমে না থাকে সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। জমে থাকা স্বচ্ছ পানি ফেলে দিন। জনগণের আন্তরিক সহযোগিতায় গত ঈদে মাত্র ১২ঘন্টায় কোরবানির বর্জ্য অপসারণ করতে সক্ষম হয়েছি। জনগণ সম্পৃক্ত হয়েছিল বলেই আমরা সফলভাবে করোনা মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়েছিলাম।অতএব জনগণ সহযোগিতা করলেই এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।’
আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘বাসা-বাড়ির পয়ঃবর্জ্যের সংযোগ ড্রেনে বা খালে দেয়া যাবে না। নিজেদের বাসা বাড়িতে নিজস্ব ব্যবস্থায় পয়ঃবর্জ্য ব্যবস্থাপনা করতে হবে। খালগুলোকে বাঁচাতে হবে। জলাশয়গুলোকে বাঁচাতে হবে। আমরা লাউতলা খাল উদ্ধার করে সেখানে পানির প্রবাহ নিশ্চিত করেছি। খালের পাড়ে গাছ লাগিয়ে দিয়েছি। এখন দেখলাম সেই খালে আবার মানুষ ময়লা আবর্জনা ফেলে খাল ভরাট করছে। সবাইকে অনুরোধ করছি দয়া করে কেউ খালে ময়লা ফেলবেন না।’
এসময় স্থানীয় জনগণ মেয়রের কাছে তাদের বিভিন্ন দাবিগুলো তুলে ধরেন। শিক্ষার্থীরা মাঠের দাবি জানালে মেয়র বলেন, ‘এই এলাকায় সিটি কর্পোরেশনের নিজস্ব জমি নেই খেলার মাঠ নির্মাণের জন্য। আমরা বিভিন্ন সংস্থার কাছে জমি চেয়েছি। তারা যদি হস্তান্তর করে তাহলে আমরা খেলার মাঠ নির্মাণ করে দিব। বিভিন্ন এলাকায় খাস জমি রয়েছে। অনেক খাস জমি বেদখল হয়ে গেছে। এগুলো খুঁজে বের করে খেলার মাঠ নির্মাণের ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
১৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হুমায়ুন রশিদ জনির সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির অঞ্চল-০৪ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আবেদ আলী, ০৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ জামাল মোস্তফা ও স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।