হেলাল শেখ ঃ ঢাকা জেলার আশুলিয়ার নরসিংহপুরের আব্দুল মান্নান ভুঁইয়া গং ও ফারুক খান গংদের সাথে জমি নিয়ে বিরোধে আদালতে মামলা চলমান থাকলেও দুই পক্ষ আদালতের আদেশ অমান্য করে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। আশুলিয়ার ইয়ারপুর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের পূর্ব নরসিংহপুরে দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন করেছেন। এ ঘটনায় যেকোনো সময় দুই পক্ষের মধ্যে বড় ধরণের সংঘর্ষ হতে পারে বলে এলাকাবাসী জানায়।
জানা গেছে, ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানাধীন ইয়ারপুর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের পূর্ব নরসিংহপুরের মৃত হাজী ফৈজদ্দিন ভুঁইয়া’র ছেলে আব্দুল মান্নান ভুঁইয়া গংদের জমি খতিয়ান নং ২২১৩, জোত নং ২২১২, দাগ নং ২৭/৩০, জমির পরিমাণ ১৬০০, ৫৩০০=৬৯০০। এই জমির ভেতর ৯৯ শতক (৩ বিঘা জমি) দখল করে স্থাপনা তৈরি করেছেন স্থানীয় ফারুক খান গংরা এমনটি অভিযোগ করেন তারা।
সরেজমিনে গিয়ে ঘটনাস্থলে দেখা যায়, ১। ইয়াকুব আলী খান গং, ২। মোহাম্মদ ফারুক খান গং, ৩। মোঃ সিদ্দিক খান গং একটি সাইনবোর্ড দিয়েছেন, তারা লিখেছেন যে, পৈত্রিক সুত্রে এই মার্কেট ও বাড়ির মালিক, অথচ বর্তমানে বি. এস দাগ নং ১৭০৫ এবং ১৭০৬। প্রকৃতপক্ষে এই জমির মালিক কে বা কারা জানতে চাইলে মোহাম্মদ ফারুক খান গং শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, এই মার্কেট ও বাড়ির দখলদার হিসেবে মালিক আমরা। আমাদের এই মার্কেট ও বাড়ি নিয়ে আদালতে মামলা রয়েছে। উক্ত মার্কেট ও বাড়ির জমির এস. এ,/আর. এস জোত এর কাগজপত্র দেখাতে বললে তিনি তা দেখাতে পারেননি। তবে তার মাথার উপর দেখা যায়, তিনি একজন এমপি প্রার্থী।
এ ব্যাপারে স্থানীয় লোকজন অনেকেই বলেন, ঢাকা—১৯ এর সাভার ও আশুলিয়া আসনে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ঢাকা জেলা সভাপতি, সম্ভাব্য এমপি প্রার্থী হাত পাখা মার্কার মোহাম্মদ ফারুক খান। জমি দখল ও আদালতে মামলার বিষয়ে এমপি প্রার্থী ফারুক খান শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে বলেন যে, আমি দখলদার এই জমির মালিক আর আমাদের এই জমি নিয়ে আদালতে মামলা চলছে। আমার বাড়িতে ইয়ারপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৬নং ওয়ার্ড মেম্বার মোঃ জলিল উদ্দিন (রাজন ) ভুঁইয়া তাদের লোকজন নিয়ে এসে বাড়ি ঘর দখল করার চেষ্টা করেন, এসময় আমাদের বাড়ির ১৫—২০ জন ভাড়াটিয়াকে ভয় দেখিয়ে তাড়িয়ে দিয়েছেন তারা। আমি আশুলিয়া থানায় এ বিষয়ে জিডি করেছি, পুলিশ এসে তদন্ত করেছে, আমি এখন নিরাপত্তাহিনতায় রয়েছি। যেকোনো সময় আবারও আমাদের উপর হামলা করতে পারে তারা।
আশুলিয়ার ইয়ারপুর ইউনিয়নের (জিরাবো) পূর্ব নরসিংহপুরের মৃত হাজী ফৈজদ্দিন ভুঁইয়ার ছেলে ১। ছায়েদ আলী ভুঁইয়া, ২। আব্দুল বারেক ভুঁইয়া, ৩। আব্দুল মান্নান ভুঁইয়া, ৪। আপেল মাহমুদ ভুঁইয়া, ৫। আব্দুল কুদ্দুস ভুঁইয়া, ৬। মোঃ জামাল ভুঁইয়া গত বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে গণমাধ্যমকে বলেন, ৯৯ শতক জমির উপর মার্কেট ও বাড়ি ঘর ও জমি আমাদের। আমরা কোনো সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ নয়, এই জমির সকল কাগজপত্র আছে আমাদের কাছে। ফারুক খান গংদের সাথে আমাদের মামলা চলছে প্রায় ১৯ বছর ধরে, সেই মামলার রায় পেয়েছি আমরা, সূত্র পিটিশন মামলা নং ১৬৯/২০০৬। এই মামলার ১ম পক্ষ হাজী আঃ মান্নান বনাম মোঃ সিদ্দিক খা গং। আব্দুল মান্নান ভুঁইয়া গং জানান, এই মার্কেট ও বাড়ির জমির মামলার রায় আমাদের পক্ষে আসছে ১৪/০৮/২০২৩ইং তারিখ। আমাদের সকল কাগজপত্র আছে তবুও ফারুক খান গং কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সহযোগিতায় আমাদের জমি জবরদখল করে রাখছে।
আশুলিয়ার ৪নং ইয়ারপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৬নং ওয়ার্ডের মেম্বার ও ইয়ারপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ জলিল উদ্দিন (রাজন) ভুঁইয়া গত বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আমি জনপ্রতিনিধি হয়েও ফারুক খান গংদের কাছ থেকে আমাদের মার্কেট ও বাড়ির জমি উদ্ধার করতে পারছি না, তাহলে সাধারণ মানুষের সাথে এমন কিছু করলে ফারুক খান গংদের সাথে পারবে কি করে। আমি যুবলীগ করি এবং ইউপি সদস্য হয়েছি, জনগণ আমাকে ভালোবাসে বলেই আমাকে তারা ভোট দিয়ে মেম্বার নির্বাচিত করেছেন। তাই অনেকেই আমাকে নিয়ে হিংসা করেন। তিনি আরও বলেন, আমার নাম জড়িয়ে যারা অপপ্রচার চালাচ্ছে, আমি এই অপপ্রচারের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ যানাচ্ছি, তিনি আরো বলেন, এরপর যদি আমার বিরুদ্ধে কেউ অপপ্রচার চালায়, আমি তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিবো।
এ ব্যাপারে পুলিশ ও র্যাব জানায়, আদালতের আদেশ অমান্যকারী অপরাধী আর অপরাধী সে যেইহোক না কেন, কোনো অপরাধীকে ছাড় দেয়া হবে না। উক্ত ব্যাপারে ধারাবাহিক সংবাদ প্রকাশ করা হবে।