মোঃ আক্তার হোসেন, ক্রাইম রিপোর্টার সিলেট
মধ্যপ্রাচ্যসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পাঠানোর নামে টাকা আত্মসাৎকারী প্রতারক চক্রের মূলহোতা সজিব কান্তি হালদারকে (৪২) সিলেট থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৯। মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) দুপুরে নগরীর কোতোয়ালি থানাধীন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) দুপুরে র্যাব-৯ এর মিডিয়া কর্মকর্তা মো. মশিহুর রহমান সোহেল স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সজিব কান্তি হালদার সিলেট জেলার ওসমানীনগর থানার টেকেরহাট এলাকার বাসিন্দা।
র্যাব-৯ জানায়, মধ্যপ্রাচ্যসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে উচ্চ বেতনে চাকুরী দেয়ার মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে বিদেশ গমনে ইচ্ছুক বেকার যুবক যুবতীদের নিকট হতে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়ে তাদেরকে সর্বশান্ত করছে একাধিক প্রতারক চক্র। এমন প্রতারণার শিকার ভিকটিম বাদী হয়ে গত ২২ নভেম্বর ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা থানায় একটি প্রতারণার মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং- ৪৪/৫০১, তারিখ- ২২ নভেম্বর ২০২৩ খ্রিঃ, ধারা- ৪০৬/৪২০ পেনাল কোড।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, আসামী সজিব কান্তি হালদার ওই সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের মূলহোতা। তিনি প্রতারক চক্রের অন্যান্য আসামীদের সহায়তায় বাংলাদেশ হতে রোমানিয়ায় উচ্চ বেতনে বিভিন্ন কোম্পানিতে চাকুরী দেয়ার নাম করে ভিকটিম এবং তাদের অভিভাবকদের প্রলুব্ধ করে প্রথমে পাসপোর্ট এবং প্রাথমিক খরচ বাবদ ভিকটিমসহ আরও ২ জনের নিকট থেকে ৫০ হাজার করে মোট ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা নেয়।
তারপর ওয়ার্ক পারমিট, পরিবহন খরচ, ভিসা প্রসেসিং, মেডিকেল খরচ, বিএমইটি ক্লিয়ারেন্স ইত্যাদি খরচের কথা বলে আসামীরা ধাপে ধাপে ভিকটিমদের নিকট হতে ব্যাংক হিসাব ও নগদে সর্বমোট ২১ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করে।
পরবর্তীতে, আসামীরা ভিকটিমদের যথাসময়ে বিদেশ নিতে না পারায় ভিসা যাচাইয়ের জন্য তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ই-মেইল করে জানতে পারে আসামীদের কর্তৃক প্রদত্ত সমস্ত কাগজপত্র ভুয়া। প্রতারণার এই ঘটনাটি সিলেটসহ দেশব্যাপী ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। এরই প্রেক্ষিতে আসামীদের আইনের আওতায় আনতে র্যাব-৯ চাঞ্চল্যকর এই ঘটনার ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং গোয়েন্দা তৎপরতা জোরদার করে।
র্যাব আরও জানায়, প্রাথমিকভাবে জানা যায়, ‘IMPACT GLOBAL’ নামক ট্রাভেল এজেন্সির সাথে সজীব কান্তির সম্পৃক্ততা রয়েছে। এই ট্রাভেল এজেন্সি বা রিক্রুটিং এজেন্সি পরিচালনার কোন লাইসেন্স পাওয়া যায় নি।
গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে জানিয়ে র্যাব জানায় প্রতারক চক্রের অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারে গোয়েন্দা তৎপরতা ও অভিযান অব্যাহত রয়েছে।