কুড়িগ্রামের উলিপুরে মাটির তৈরি জিনিসপত্র ফেরিতে বিক্রি করে সংসার চালান শফিকুল ইসলাম (৪৫)। বিলুপ্তির পথে মাটির তৈরি জিনিসপত্র বিভিন্ন এলাকা থেকে পাইকারি ক্রয় করে নিয়ে এসে তা গ্রামে গ্রামে ফেরি করে বিক্রি করে সামান্য আয় দিয়ে চালান সংসার। ১৯ বছর থেকে এভাবেই তার চলে দিনের পর দিন। তবে বিলুপ্তি হওয়া মাটির তৈরি জিনিসপত্র গ্রামীণ সমাজে ধরে রাখার জন্যই তার জীবনযুদ্ধ। শফিকুল ইসলাম মাটির তৈরি জিনিসপত্র তিন উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে ফেরি করে গ্রামীণ মানুষের চাহিদা পূরণ করছেন। শফিকুল ইসলাম উপজেলার থেতরাই ইউনিয়নের ফাঁসিদাহ বাজার এলাকার মনির উদ্দিনের ছেলে। তার পরিবারে স্ত্রী দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শফিকুল ইসলামের বসত ভিটে তিস্তা নদীর গর্ভে বিলীন হয়েছে ১২ থেকে ১৫ বার। উপায়ন্তর না পেয়ে অনেক কষ্ট করে থেতরাই ইউনিয়নের ফাঁসিদাহ বাজার এলাকায় ৪ শতক জমি ক্রয় করেন শফিকুল ইসলাম। তিনি মাঝে মাঝে ঢাকায় বিভিন্ন জায়গায় কাজ করেও টাকা আয় করতেন। এভাবে কিছু টাকা সংগ্রহ করে মাটির তৈরি জিনিসপত্র বিভিন্ন এলাকা থেকে পাইকারি ক্রয় করে নিয়ে এসে তা গ্রামে গ্রামে ফেরি করে বিক্রি করেন। এভাবে ১৯ বছর থেকে মাটির তৈরি জিনিসপত্র ফেরি করে চলছে শফিকুল ইসলামের জীবন।
স্থানীয়দের মধ্যে নুর আলম (৩০), আব্দুল লতিফ (৬৫), আমিনুল ইসলাম (৪০) ও লাল মিয়া সহ আরও অনেকে বলেন, শফিকুল ইসলাম প্রায় ১৯ বছর থেকে মাটির তৈরি জিনিসপত্র ভ্যানে করে গ্রামে গ্রামে ফেরি করে বিক্রি করেন। শফিকুলের বসত ভিটে তিস্তা নদীর গর্ভে ১২ থেকে ১৫ বার বিলীন হয়েছিল। তারপর কোনরকম ভাবে টাকা জমিয়ে ফাঁসিদাহ বাজার এলাকায় ৪ শতক জমি ক্রয় করে কষ্ট করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। তাকে সরকারি ভাবে সহযোগিতা করলে তার জিনিসপত্রের ব্যাবসা ভালো ভাবে করতে পারত।
থেতরাই ইউনিয়নের প্রাক্তন চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী সরকার বলেন, শফিকুল ইসলামের বাসা থেতরাই ইউনিয়নের ফাঁসিদাহ বাজার এলাকায়। তিস্তা নদী তাকে নিঃস্ব করে দিয়েছে। সে এখন মাটির তৈরি জিনিসপত্র ফেরিতে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। বর্তমান মাটির জিনিসপত্রকে প্লাস্টিকের সামগ্রী বিলীন করে দিচ্ছে। মাটির তৈরি জিনিসপত্রকে টিকিয়ে রাখা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে অনেক মুনাফার প্রয়োজন। তাই সরকারিভাবে তাকে যদি সহযোগিতা করা হয়, তাহলে আমার মনে হয় আরও বড় পরিসরে কাজটি করতে পারতেন।