আজিজুর রহমান মুন্না, সিরাজগঞ্জঃ
সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার ভদ্রঘাটে পলাশডাঙ্গা যুব শিবিরের নবনির্মিত ভবনে হলরুমে বীরমুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয় এতে প্রধান অতিথিকে ফুলেল শুভেচ্ছা প্রদান করা হয় ।
সিরাজগঞ্জ সদর ও কামারখন্দ উপজেলা বীরমুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সিরাজগঞ্জ -২ সদর-কামারখন্দ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য ড. জান্নাত আরা তালুকদার হেনরী।
এর আগে তিনি পলাশ ডাঙা যুব শিবিরের স্মৃতি সৌধ পরিদর্শন করেন। এসময়ে তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় ৪ নেতাসহ সকল শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
পলাশ ডাঙা যুব শিবিরের আয়োজনে, শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারী ) বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে উক্ত মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, এমপি ড. জান্নাত আরা তালুকদার হেনরী এসময়ে তিনি তার বক্তব্যে বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনারক্ষায় ‘পলাশ ডাঙ্গা স্মৃতিসৌধ এর জন্য আরো সুন্দর পরিবেশ তৈরি করলে এবং আরো অবকাঠামোর উন্নয়ন করা হলে জাতীয় মানের পর্যটন কেন্দ্র গড়ে উঠতে পারে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ও মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের এবং অন্যান্যদেরন আরো সুদৃষ্টি ও সহযোগিতা কামনা করছি। আগামীতে সিরাজগঞ্জের সকল মুক্তিযোদ্ধাদের নামফলক সম্বলিত ফলক নির্মাণ করা হবে।
এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন, পলাশ ডাঙ্গা যুবশিবিরের সহকারী পরিচালক বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট বিমল কুমার দাস।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, পলাশ ডাঙ্গা যুব শিবিরের কমান্ডার ইন-চীফ (সিএনসি) গাজী সোহরাব আলী সরকার, বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট বিমল কুমার দাস, বীবমুক্তিযোদ্ধা ফিরোজ তালুকদার, বীর মুক্তিযোদ্ধা মিজানুর রহমান দুদু,বীর মুক্তিযোদ্ধা আলী আহমেদ টুংকু
সাবেক সদর কমান্ড বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমান ফজলু, কামারখন্দ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ সেলিম রেজা, সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন শেখ, কামারখন্দ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল্লাহ সবুজ, ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ সেলিম সেখ, কামারখন্দ উপজেলার ইউএনও শাহীন সুলতানা, এসিল্যান্ড সুমা খাতুন, ভদ্রঘাট ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুল মালেক খান , সাধারন সম্পাদক গোলাম মোস্তফা জয় সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দরা।
মতবিনিময় সভাশেষে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট সিরাজগঞ্জপর সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইমরান মুরাদের ব্যবস্থাপনায় মনোমুগ্ধকর সংগীত পরিবেশন করা হয় এবং সঞ্চালনা করেন, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান মোঃ মঞ্জুরুল আলম রুবেল।
উক্ত মতবিনিময় সভায় মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের স্মৃতি চারণ করে বীরমুক্তিযোদ্ধারা বলেন, একাত্তরের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উদাত্ত আহবানে এদেশের দামাল ছেলেরা ঝাঁপিয়ে পড়েন। দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধ শেষে ফিরে আনেন প্রিয় মাতৃভূমির স্বাধীনতা। যুদ্ধ শুরুর প্রারম্ভেই প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল লতিফ মির্জ্জার নেতৃত্বে সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার কালিবাড়ি ভদ্রঘাট, জাঙ্গাইলা গাতী এলাকায় গড়ে ওঠে মুক্তিযোদ্ধা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ‘পলাশ ডাঙ্গা যুব শিবির’। এখানে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধারা সিরাজগঞ্জ পাবনা নাটোর জেলার বিভিন্ন স্থানে ও চলনবিল এলাকায় পাকহানাদার বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধে অবতীর্ণ হন। ১৭ জুন সিরাজগঞ্জের ভদ্রঘাটে পাক হানাদার বাহিনী আক্রমণ করলে বীর মুক্তিযোদ্ধারা তাদের এই আক্রমণ প্রতিহত করে। দীর্ঘ যুদ্ধ শেষে হানাদাররা পিছু হটতে বাধ্য হয়। কিন্তু এই ভয়াবহ যুদ্ধে কোনো বীর মুক্তিযোদ্ধা হতাহত হননি। আলোচনা সভায় মুক্তিযোদ্ধারা সেই যুদ্ধদিনের স্মৃতিচারণ করেন।