হেলাল শেখঃ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা মোস্তাফিজুর রহমানসহ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
রোববার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলণের মাধ্যমে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঢাকা জেলার ক্রাইম অ্যান্ড অবস এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহিল কাফি। এর আগে, সকাল ৭ টার দিকে সাভারের বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে মোস্তাফিজকে আটক করা হয়। রাত আড়াইটার দিকে অভিযুক্তদের পালাতে সহযোগিতা করার অভিযোগে আটক করা হয় মীর মোশাররফ হোসেন হল ছাত্রলীগের সভাপতি প্রার্থী আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মোস্তফা মনোয়ার ওরফে সাগর সিদ্দিকী, ৪৫তম ব্যাচের হাসানুজ্জামান এবং উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের ৪৭তম ব্যাচের সাব্বির হোসেনকে। তারা সবাই শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আক্তারুজ্জামান সোহেলের অনুসারী কর্মী হিসেবে পরিচিত।
অন্যদিকে মূল অভিযুক্ত মোস্তাফিজ জাবির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক। তবে ঘটনার পর তাকে বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।
ঘটনায় জড়িত অন্যজন বহিরাগত মামুন (৪৫)। এছাড়া, ভুক্তভোগীর স্বামী রবিনকে বেঁধে রেখে মারধর করেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৬ ব্যাচের শিক্ষার্থী মুরাদ।
এদিকে ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসির দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে জাবির শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। সকাল সাড়ে ১১ টা থেকে এ কর্মসূচি শুরু হয়। পরে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন। সমাবেশে বক্তারা ধর্ষণের ঘটনায় জড়িততের সর্বোচ্চ শাস্তির পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ব্যর্থতার জন্য উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করেন।
ভুক্তভোগী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ওই দম্পতির বাড়িতে ভাড়া থাকতেন মামুন। শনিবার সন্ধ্যায় ভুক্তভোগীর স্বামীকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ডেকে এনে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মোশাররফ হোসেন হলের ‘এ’ ব্লকের ৩১৭ নম্বর কক্ষে আটকে রাখেন। এরপর তার স্ত্রীর মাধ্যমে নিজের রেখে আসা জিনিসপত্র আনতে বলেন মামুন। ওই নারী জিনিসপত্র নিয়ে ক্যাম্পাসে আসলে মামুন হলের ভেতরের ওই কক্ষে সেগুলো রেখে আসেন। পরে তার স্বামী অন্যদিক থেকে আসবেন বলে ভুক্তভোগী নারীকে হল সংলগ্ন জঙ্গলে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখানে তাকে ধর্ষণ করে ছাত্রলীগ নেতা মোস্তাফিজুর ও বহিরাগত মামুন।