হেলাল শেখঃ ঢাকার আশুলিয়ার থানাধীন আশুলিয়া ইঊনিয়নের খেজুরবাগান এলাকায় এক নারীর ত্রিমুখী (একাধিক) পুরুষের সাথে পরকীয়ার ঘটনায় একজনকে হত্যার অভিযোগে পরকীয়া প্রেমিকাকে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ।
বুধবার (১৩/০৯/ ২০২৩ইং) বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, আশুলিয়ার খেজুর বাগান এলাকার স্থানীয় মোঃ দয়াল মোল্লার বাড়ির ভাড়াটিয়া মোছাঃ রোকেয়া বেগম (৩০) এর সাথে স্থানীয় বাড়িওয়ালা মোঃ দয়াল মোল্লা (৫০) দিনমজুর আনিছুর রহমান আনিছ (৪০) এর পরকিয়ার ঘটনায়, কথা কাটাকাটি হয় এবং বাড়িওয়ালার রুমের দরজার সাথে এক পর্যায়ে আনিছ মিয়াকে হত্যা করা হয়, এরপর লোকজন জানাজানি হলে লোকজন দ্রুত ভিকটিমকে উদ্ধার করে স্থানীয় রাজু আহমেদের হসপিটালে নিয়ে যায়, সেখানে ডিউটিরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপর স্থানীয়রা আশুলিয়া থানা পুলিশকে খবর দেওয়ার পর পুলিশ এসে নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায় বলে পুলিশ জানায়। এ ঘটনায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে ওই পরকিয়া প্রেমিকা রোকেয়াকে গ্রেফতার করেছে।
ঘটনাস্থল আশুলিয়ায় নিজ বাড়িতে দয়াল মোল্লাকে পাওয়া যায়নি, এ ঘটনার পর থেকে দলাল পলাতক রয়েছে। ওই বাড়ির ভাড়াটিয়া কথিত ম্যানেজার আব্দুল গফুর বলেন, ঘটনার সময় আমি বাহিরে ছিলাম, বাড়িওয়ালা ও তার ভাড়াটিয়া রোকেয়া কি করেছে তা জানিনা। দেখা যায়, বাড়ির মালিকের রুম ও অভিযুক্ত রোকেয়া বেগমের রুম একসাথে পাশাপাশি। অনেকেই জানায়, রোকেয়ার সাথে আনিছ নামের এই লোকের দীর্ঘ ৫—৬ বছরের পরিচয়, এক সাথে চলাফেরা, খাওয়া ও মিলামেশা ছিলো, এক মাস আগে এই ঘটনাস্থলের বাসা ভাড়া নেওয়ার সময় এক ব্যক্তিকে স্বামী পরিচয় দিয়ে রোকেয়া ঘর ভাড়া নিয়েছে, তার সাথে কিছুদিন থাকার পর ওই কথিত স্বামীকে তারিয়ে দেয়া হয়, এরপর বাড়িওয়ালা দয়াল বাবার দয়া হলে তার সাথে পরকীয়া করে, এদিকে বাজার খরচ নিয়ে আসতেন আনিছ নামের কথিত ভাই পরকিয়া প্রেমিক, এর কারণে বাড়িওয়ালা তার পথের কাটা সরিয়ে দিতে আনিছকে কৌশলে তারিয়ে দিতে চেষ্টা করেন, এরপরই এই হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে। এদিকে গ্রেফতারকৃত রোকেয়া বেগমের (১২) বছরের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে, এর আগে আরো এক স্বামীর মৃত্যু হয়েছে তার, এ বিষটিও রহস্যজনক।
নিহত আনিছ মিয়ার বাড়িওয়ালা আলী হোসেন বলেন, আনিছ আমার বাড়িতে প্রায় ৭ বছর ভাড়া থাকছেন, তিনি ভালো মানুষ ছিলেন। আনিছ মিয়ার গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জ জেলার ধর্মপাশা এলাকায়। নিহতের বাড়িওয়ালার ভাগিনা হেলাল সরকার বলেন, আনিছ মিয়া সাদাসিধা মানুষ, দিনমজুরের কাজ করতো, রোকেয়া নামের এক নারীর সাথে তার পরকিয়া ছিলো এমনটিই বলছেন অনেকেই। তিনি আরও বলেন, বুধবার আমরা সবাই কিছু টাকা দিয়ে আনিছ মিয়ার লাশ তার গ্রামের বাড়িতে সুনামগঞ্জে পাঠিয়ে দিয়েছি।
বুধবার (১৩/০৯/২০২৩ইং) তারিখ আশুলিয়া থানার উপ—পরিদর্শক (এসআই) আরাফাত উদ্দিন গণমাধ্যমকে বলেন, এ ঘটনার তদন্তকারী অফিসার (এস আই) জোহাব আলী সাহেব। এ বিষয়ে আশুলিয়া থানার (এসআই) জোহাব আলীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে নিহত ভিকটিম আনিছ মিয়া (৪০) এর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়। ময়নাতদন্তের পর বুধবার নিহতের পরিবারের কাছে তার মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে, কিভাবে ভিকটিমের মৃত্যু হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে আসলে নিশ্চিত হওয়া যাবে তাকে কিভাবে মৃত্যু হয়েছে। তিনি আরো বলেন, এ ব্যাপারে থানায় মামলা হয়েছে, পরকীয়া প্রেমিকা রোকেয়াকে গ্রেফতার করা হয়েছে, এ বিষয়ে তদন্ত চলমান আছে, এ ঘটনার সাথে আরও কেউ জড়িত আছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দোষী ব্যক্তি যেইহোক না কেন তাদেরকে আটক করে আইনের আওতায় আনা হবে বলেও তিনি জানান।