1. admin@sokalerbangla.com : সকালের বাংলা :
বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:১২ অপরাহ্ন
শিরবাম:
রাণীশংকৈলে আমন ধানের বাম্পার ফলন ঘরে তুলতে ব্যাস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা লক্ষ্মীপুরে সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি কামাল গ্রেপ্তার সিরাজগঞ্জে মাশরুমের গুরুত্ব ও উৎপাদন কৌশল বিষয়ক কৃষক-কৃষাণী প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত  কোডেকের উ‌দ্যোগে কৃষি উপকরণ বিতরণ রতনকান্দি ও বাগবাটি ইউপিতে সঠিকভাবে খাদ্যবান্ধব চাল বিতরণ জন্য পরিদর্শন করেন,জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি নাজমুল হাসান তালুকদার রানা  রাণীশংকৈলে রাস্তা সংস্কার ও প্রশস্তকরণের দাবিতে এলাকাবাসীর মানববন্ধন  ২ নং গাজীপুর ইউনিয়ন বিএনপি ও অঙ্গসংগঠন কতৃক আলোচনা সভা। শ্রীপুরে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মিনারা বেগমের অপসারণের দাবিতে বিএনপি ও জনতার অবস্থান কর্মসূচি। কালীগঞ্জে ছেলের শোকে মায়ের মৃত্যু, বড়বোন হাসপাতালে রাজধানীর কদমতলীতে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধগতিতে বিপর্যস্ত মানুষ

টাঙ্গাইলের দেলদুয়ারে ব্রাশ শিল্পে বেকার যুবকদের স্বপ্ন পূরণ

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
  • ২৮২ Time View

দৈনিক সকালের বাংলা ডেস্কঃ  ব্রাশ শিল্পে টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার লাউহাটী ইউনিয়নের হেরেন্দ্র পাড়া গ্রামের অসংখ্য বেকার যুবকদের স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। প্রায় ২৫০ পরিবারের ভাগ্যে বদলেছে এ শিল্পে। বেকারতের¡ অভিশাপ নিয়ে যারা দিন কাটাচ্ছিলো সেই সব বেকাররাই এখন স্বাবলম্বী হওয়ার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। নুন আনতে যাদের পানতা ফুরতো আর অভাব অনটন ছিল যাদের নিত্যসঙ্গী সেই সব পরিবারের মুখে এখন হাসির ফোয়ারা। জীবন জীবিকার সন্ধানে দিশেহারা গ্রামের মানুষ। ঠিক এমনই সময় অন্ধকারে আলোর দিশা নিয়ে আসেন গ্রামের যুবক আব্দুল মান্নান। ঘরে ঘরে তৈরী হবে ব্রাশ, দূর হবে অভাব অনটন। এ আশার বাণীসহ নিজের অভিজ্ঞতা ও সামান্য পুঁজি নিয়ে বাড়ীর ছোট্ট ছাপড়া ঘরে শুরু করেন ব্রাশ তৈরীর কারখানা।
আব্দুল মান্নান জানায়, প্রায় ২০ বছর আগে কিশোর বয়সে অভাবের তারনায় যখন তার বাবা আর পরিবারের খরচ যোগাতে পারছিলেন না ঠিক তখনই জীবিকার সন্ধানে চলে যান ঢাকায়। চাকরী পান ব্রাশ তৈরীর কারখানায়। শুরু হয় পথচলা। দীর্ঘ ১৫ বছরের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে তিনি স্বপ্ন দেখেন নিজেই কারখানা তৈরী করার। কিন্তু শহরমূখী ব্যবসা তৈরী করতে অনেক অর্থের প্রয়োজন। যা তার ছিল না। তাই সিদ্ধান্ত বদলে গ্রামে ফিরে এসে শুরু করেন ব্রাশ তৈরীর কারখানা। তিনি এখন শুধু নিজেই স্বাবলম্বী নন বরং পাল্টে দিয়েছেন পুরো গ্রামের চিত্র। গ্রামের প্রায় ৪/৫শ’ পরিবার এখন এ ব্রাশ তৈরীর শিল্পের সাথে জড়িত। স্থানীয় কাঁচামাল কদম কাঠ ও ঢাকার বিভিন্ন ট্যানারী থেকে গরুর লেজের চুল সংগ্রহ করে নির্ধারিত প্যাটানে বার্ণিশিং ফিনিশিংসহ কয়েকটি ধাপে তৈরী করা হয় বিভিন্ন ডিজাইনের ব্রাশ। বর্তমানে আব্দুল মান্নানের তৈরী ব্রাশ শুধু বাংলাদেশেই নয় বরং দেশের গন্ডী পেরিয়ে যাচ্ছে চীনে।
আব্দুল মান্নান আরও জানান, অর্থের অভাবে সরাসরি বাজারজাত করতে পারছেন তিনি। তার তৈরী পণ্য  নামমাত্র মূল্যে গুলিস্থান, চকবাজারের বিভিন্ন ব্রাশ তৈরীর কারখানায় বিক্রি করেন। পরে তারা তাদের প্রতিষ্ঠানের লোগো লাগিয়ে সারা দেশে বাজারজাত করে। তুবুও আব্দুল মান্নান এ ভেবে খুশি যে, তিনি শুধু তার নিজের ভাগ্যেরই পরিবর্তন করেননি বরং স্বাবলম্বী করে তুলেছেন দেলদুয়ার লাউহাটী ইউনিয়নের হেরেন্দ্রপাড়া গ্রামের হাজারো মানুষের। তার দাবি সরকার বিভিন্ন কুটির শিল্প প্রস্তুতকারকদেরকে সহজশর্তে ঋণসহ নানা আর্থিক সুবিধা দিয়ে থাকেন। কিন্তু তাদের এ কুটির শিল্পের বিষয়ে সরকারী কোন পৃষ্ঠপোষকতাই নেই। তাই, সরকার যদি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয় তাহলে শুধু হেরেন্দ্রপাড়া নয় বরং দেলদুয়ার উপজেলায় লক্ষাধিক লোকের কর্মসংস্থান তৈরী করা সম্ভব হবে বলে তার দাবি।
হেরেন্দ্রপাড়া গ্রামের ভেতর প্রবেশ করলেই চোখে পড়বে ছোট-বড় বেশকয়েকটি ব্রাশ তৈরির কারখানা। যেখানে অসংখ্য বেকার যুবক গতর খাটানে উপার্জন দিয়ে তাদের পরিবারের মুখে অন্ন তুলে দিচ্ছেন। আর সেই সাথে বেকারত্বের অভিশাপ থেকেও মুক্তি পেয়েছেন তারা। কথা হয় কারখানার মালিক রোকন মোল্লার সাথে তিনি জানান, ১০ বছর আগে থেকে আমি এ পেশায় জড়িত। ঘরে-বাইরে মিলে প্রায় ৪০ জন শ্রমিক বেকারত্ব থেকে মুক্তি পেয়েছে আমার ক্ষুদ্র কারখানা থেকে। আমার উৎপাদিত পণ্য ঢাকার চক বাজারে বিক্রি করি। মাসে ৬০-৭০ ক্রোশ ব্রাশ আমি বিক্রি করতে করি। আমার এখানে প্রতিটি শ্রমিক দিনে ৫শ’ টাকা করে আয় করতে পারেন। এছাড়াও রমজান, ফালু ও ইব্রাহিম মিয়ারও বাঁশ তৈরির কারখানায় অসংখ্য শ্রমিক কাজ করছেন। ছোট বড় মিলে প্রায় ৫টি ব্রাশ তৈরির কারখানা রয়েছে এখানে। তিনি আরো জানান, সরকার নিন্মমুল্যে চায়নাদের কাছ থেকে পণ্য কিনছে। পুলিশ, র‌্যাব, সেনাবাহিনী ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের ব্রুট/জুতো পালিশ করার কাজে যে ব্রাশ ক্রয় করা হয় সরকার যদি সরাসরি এ অঞ্চলের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ক্রয় করেন তাহলে আমরা উপকৃত হবো।
ব্রাশ শিল্পের সংশি¬ষ্টদের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রতিটি ব্রাশে তাদের ১৮ টাকা লাভ হয়। এক ক্রোশ ব্রাশ তৈরিতে ১৪৪টি ব্রাশ লাগে। আর এক ক্রোশ বাশ্রের দাম ২৫শ’ থেকে ৩ হাজার টাকা। দিনে ৩শ’ টি ব্রাশ তৈরি করা যায়। আর ব্রাশ তৈরিতে উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয় চুল, গরুর বাইট,কাঠ, জিয়াই তার ও বার্নিশ। গ্রামের প্রায় ২৫০টি পরিবার এখন এ ব্রাশ তৈরীর শিল্পের সাথে জড়িত। স্থানীয় কাঁচামাল কদম কাঠ ও ঢাকার বিভিন্ন ট্যানারি থেকে গরু লেজের চুল সংগ্রহ করে নির্ধারিত প্যাটানে বার্নিশিং ফিনিশিংসহ কয়েকটি ধাপে তৈরি করা হয় বিভিন্ন ডিজাইনের ব্রাশ। অর্থের অভাবে সরাসরি বাজারজাত করতে পারছেন না তিনি। তার তৈরি পণ্যগুলো নামমাত্র মূল্যে গুলিস্থান, চকবাজারের বিভিন্ন ব্রাশ তৈরির কারখানায় বিক্রি করছেন। পরে তারা তাদের প্রতিষ্ঠানের লোগো লাগিয়ে সারা দেশে বাজারজাত করে।
তবুও তারা এ ভেবে খুশি যে, শুধু নিজের ভাগ্যেরই পরিবর্তন করেননি বরং স্বাবলম্বী করে তুলেছেন দেলদুয়ার লাউহাটী ইউনিয়নের হেরেন্দ্রপাড়া গ্রামের অংসখ্য মানুষের। ইব্রাহিম, সবুজ ও উজালা বেগম নামের তিন ব্রাশ শ্রমিক জানান, আগের চেয়ে ভালোই চলছে তাদের জীবন। ক্রোশ অনুপাতে টাকা পেয়ে থাকেন তারা। মনযোগ সহকারে কাজ করলে দিনে তারা ৫শ’ টাকা করে আয় করতে পারেন। সরকারকে ব্রাশ শিল্পের উন্নয়নে এগিয়ে আসার জন্যও আহ্বান তাদের। এ অঞ্চলের ব্রাশ শিল্পীদের দাবি, সরকার বিভিন্ন কুটির শিল্প প্রস্ততকারকদেরকে সহজশর্তে ঋণসহ নানা আর্থিক সুবিধা দিয়ে থাকেন। কিন্তু তাদের এ কুটির শিল্পের বিষয়ে সরকারি কোন পৃষ্ঠপোষকতাই নেই। তাই, সরকার যদি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয় তাহলে শুধু হেরেন্দ্রপাড়া নয় বরং দেলদুয়ার উপজেলায় কয়েক হাজার লোকের কর্মসংস্থান তৈরি করা সম্ভব হবে বলেও দাবি তাদের।
টাঙ্গাইল জেলা ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) সম্প্রসারণ কর্মকর্তা জামিল হুসাইন জানান, সরকারের পক্ষ থেকে আবেদনকারীদের সহজশর্তে ঋণসহ নানা আর্থিক সুবিধা দেয়া হচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় তাদেরকে সরকারিভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করা হচ্ছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved , sokalerbangla.com
Theme Customized BY LatestNews