হেলাল শেখঃ বাংলাদেশের “সাংবাদিকদের অসম্মান করার অধিকার কারো নেই” আর ভয়ের কোনো কারণ নেই সবসময়ইঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করছেন বিভিন্ন মিডিয়ার সাংবাদিকগণ। কোনো সাংবাদিক কারো বিরুদ্ধে বদনাম বা অপপ্রচার করেন না।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সাংবাদিক সংস্থা’র ঢাকা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও আশুলিয়া সাংবাদিক সমন্বয় ক্লাবের সভাপতি সাইফুল ইসলাম জয় (হেলাল শেখ) বলেন, শুধু ক্যামেরা ও কলম প্রদর্শন করলেই কেউ লেখক বা সাংবাদিক হওয়া যায় না, বেশি বেশি বই পড়তে হয়, লেখা শিখতে হবে, সংবাদ কি তা জানতে হবে এবং নিজে সচেতন হতে হবে, তার সাথে অন্যদেরকেও সচেতন করতে প্রচারণা চালিয়ে যেতে হবে। তিনি আরও বলেন, সোর্স হয়ে কাজ করা আর সাংবাদিকতা এক রকম নয়। ঢাকার আশুলিয়ায় সাংবাদিকদেরকে গরমে বসিয়ে রেখে ওপেন স্থানে সংবাদ সম্মেলন করে নাম, পদবী, মিডিয়ার নাম, মোবাইল নাম্বার ও স্বাক্ষর রেখে ছেড়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে আশুলিয়ার ধামসোনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে। ঘটনার দিন শুক্রবার (১৫—০৯—২০২৩ইং) সকাল ১০ টা থেকে দুপুর পর্যন্ত ভিন্ন রকম সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি। এই সংবাদ সম্মেলনে আশুলিয়া প্রেসক্লাবের সামনে সাভার আশুলিয়ার প্রায় দুই শতাধিক সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন, তিনি ওইদিন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ঘোষণা দিয়ে দুপুরে চলে যান, তিনদিন পর অন্য সাংবাদিকদের মাধ্যমে সাংবাদিকদের বিকাশ নাম্বার চেয়ে সাংবাদিকদেরকে অসম্মান করেছেন, একজন রাজনৈতিক নেতা ও জনপ্রতিনিধি’র কাছে এমনটি আচরণ জাতি কখনো প্রত্যাশা করতে পারেন না। সেই সংবাদ সম্মেলনে সাইফুল ইসলামের সাথে ওপেন অর্ধ শতাধিক ব্যক্তি বসেন, আর ১০টি লাইনসহ দুই শতাধিক সাংবাদিক গরমের মধ্যে থেকে অসম্মানিত হয়ে বেশিরভাগ চলে যান। এই ভিন্ন সংবাদ সম্মেলনের ব্যক্তির নিয়ে একটি বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে আর সাংবাদিকদের ঐক্যবদ্ধতার স্মৃতির পাতার একটি চিত্র প্রকাশ করা হচ্ছে। আশুলিয়ার সাংবাদিকরা সবাই ঐক্যবদ্ধ আছেন এবং ঐক্যবদ্ধ থাকবেন বলে আমি আশাবাদী।
বিশেষ করে যারা মানুষের ভালো কিছু করা দেখতে পারে না, দেশ ও জাতির বিরুদ্ধে অপপ্রচার করে, মানুষের বদনাম ছড়ায়—আল্লাহ চাইলে সেই ষড়যন্ত্রকারীদের ধ্বংস নিশ্চিত। কলম সৈনিকরা কখনো কারো মিথ্যা সংবাদ লিখে প্রকাশ করেন না। যারা কলম হাতে নিয়ে মিথ্যা কোনকিছু লিখে তা অপপ্রচার করে তারা দেশ ও জাতির শক্র, এদেরকে আটক করে আইনের আওতায় আনা হোক বলে অভিমত প্রকাশ করেন অনেকেই। প্রকৃত সাংবাদিকদের নিয়ে একটি মহল গভীর ষড়যন্ত্র করছে। গণমাধ্যমে কাজ করতে হলে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাথে বন্ধুত্ব সম্পর্ক রাখতে হয়। নতুন সাংবাদিকদের সাংবাদিকতার আদর্শলিপি বই পড়া প্রয়োজন, প্রকৃত সাংবাদিকতা করলে তা দেশ ও জাতির জন্য মঙ্গল হয়। সাংবাদিকরা ঐক্যবদ্ধ না থাকার কারণে অনেকেই বিভিন্ন হামলা মামলার শিকার হচ্ছেন। সাংবাদিকতা একটি মহান পেশা, সাংবাদিক শব্দ সহজ হলেও এই পেশা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ, আবার এই পেশাকে সম্মানজনক বলা হয়। দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করলেও কেউ সাংবাদিকদের কল্যাণে কাজ করেন না, তা জাতির জন্য লজ্জাজনক।
সাংবাদিকরা ৩৬৪ দিন একজনের পক্ষে সংবাদ প্রকাশ করবে এতে তার লোক বলা হয়, আর ১দিন যদি ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোনো সংবাবাদ প্রকাশ হয় তখন সাংবাদিক জাতির বিবেককে গালি দিয়ে বলা হয় সাংবাদিকরা খারাপ। অনেকেই নিজেদের বড় মনে করেন, নিজেদের স্বার্থের জন্য শক্রতা সৃষ্টি করেন আর একজন অন্যজনের ক্ষয়ক্ষতি করার চেষ্টায় ব্যস্ততা থাকেন এটা আমাদের ভুল হচ্ছে। সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার মধ্যে আনন্দ আছে। আমাদের লেখার মধ্যেও অনেক ভুল হয়। এই জন্য সাংবাদিকদের সাংবাদিকতার আদর্শলিপি পড়া দরকার। বিশেষ করে “কলম সৈনিক অর্থাৎ সাংবাদিক দেশ ও জাতির বিবেক, ঝুঁকিপূর্ণ জেনেও সাংবাদিকরা পেশাগত দায়িত্ব পালন করেন,বিশেষ সম্মান অর্জন করার জন্য কিন্তু সম্মান অর্জন না হয়ে আরও বদনাম হচ্ছে। শুধুমাত্র মানুষের সুখ, দুঃখ, আনন্দ বেদনা, দুর্ঘটনাসহ সকল বিষয়ে জাতির কাছে তুলে ধরতে সাংবাদিকরা কাজ করেন। পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় সাংবাদিকদের অবশ্যই চোখ কান খোলা রেখে সচেতন ভাবে কাজ করতে হবে।
সাংবাদিকরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পেশাগত দায়িত্ব পালন করেও কারো মনজয় করতে পারেন না কেন? ছোট একটি ভুল করলেই সাংবাদিকদের উপর হামলা, মামলা করা হয়, এমনকি সাংবাদিককে হত্যার শিকার হতে হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সবাইকে বলা হয় সাংবাদিকদের সহযোগিতা করবেন, কিন্তু তার উল্টো দেখা যায়, পুলিশ সাংবাদিক কি কখনো বন্ধু হতে পেরেছেন? কেউ কি খবর নিয়েছেন যে, সাংবাদিকরা কেমন আছেন? কোনো সহযোগিতা লাগবে কি না?। সাংবাদিকরাই আজকাল মানবেতর জীবনযাপন করছেন। জনগণের কল্যাণে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পেশাগত দায়িত্ব পালন করে থাকেন সাংবাদিকরা, এর বিনিময়ে কি পাচ্ছেন তারা? নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন অনেক সাংবাদিক, হয়রানিমূলক মামলার শিকার হচ্ছেন অনেকেই, যার কোনো হিসাব নেই।
বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় ১৮কোটি জনগণ, সেই তুলনায় আইনশৃঙ্খা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ও সাংবাদিকের সংখ্যা অনেক কম। ধন্যবাদ জানাই তাদেরকে যারা মানুষের কল্যাণে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন। “পুলিশ, সাংবাদিক” আইনজীবি ও জনপ্রতিধিগণ, এই চারটি শব্দের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হলো “কলম সৈনিক অর্থাৎ সাংবাদিক”। বিশেষ করে সাংবাদিকতার আদর্শলিপি’র বেশিরভাগ শব্দ আছে যা সাংবাদিকদের জন্য জানা অতি জরুরি—যেমনঃ সংবাদের উৎসহের মত সংবাদের উপাদান কি? মানুষ এবং প্রকৃতি, মানুষের আশা—আকাঙ্খা, আনন্দ, বেদনা, সুখ—দুঃখ, সমস্যা ও সম্ভাবনাই সংবাদের মূল প্রতিপাদ্য। এর সাথে সম্পৃক্ত সকল বিষয়ই সংবাদের উপাদান। যেমনঃ কুকুর যদি মানুষকে কামড়ায় তা কোনো সংবাদ নয়, আর মানুষ যদি কুকুরকে কামড়ায় বা অপ্রত্যাশিত কিছু অপকর্ম করে তা সংবাদ হয়। নিয়মের ব্যতিক্রম ঘটনা, অন্যায় অবিচার, যা মানুষের অধিকারকে হরণ করে, এরকম অনেক বিষয়কে সংবাদ বলা যেতে পারে। সাংবাদিক সবাইকে তথ্য জানার অধিকার আছে, তবে কারো সাথে বিবাদ বা শক্রতা করে সাংবাদিকতায় সাফল্য আসতে পারে না। সাংবাদিকরা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে, এতে স্বাধীনভাবে সাংবাদিকতা করা সহজ হবে বলে অনেকেরই অভিমত।
সাংবাদিক নেতারা অনেকেই বলেন, সাংবাদিক শব্দ ছোট হলেও এটি মহান পেশা। সাংবাদিকতা অনেক সম্মানজনক, তবে প্রকৃত সাংবাদিক হতে হলে অবশ্যই সাংবাদিককে সাংবাদিকতার আদর্শলিপি পড়তে হবে, সেই সাথে সর্বশেষ সংশোধনীসহ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন ম্যানুয়েল বই এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বইসহ বেশি বেশি বই পড়তে হবে। অনেকেই জানেন না যে, ১/ সাংবাদিক মানে জাতির বিবেক। ২/ সাংবাদিক মানে দেশ প্রেমিক। ৩/ সাংবাদিক মানে কলম সৈনিক। ৪/ সাংবাদিক মানে জাতির দর্পণ। ৫/সাংবাদিক মানে জাতির সেবক। ৬/সাংবাদিক মানে শিক্ষিত জাতি। ৭/সাংবাদিক মানে স্বাধীনভাবে কাজ করা। ৮/সাংবাদিক মানে সম্মানিত জাতি। ৯/ সাংবাদিক মানে তদন্তকারী। ১০/ সাংবাদিক মানে আইন বিষয়ে জানা। ১১/ সাংবাদিক মানে সিস্টেম পরিবর্তন করা। ১২/ সাংবাদিক মানে সকল বিষয়ে জানা। তিনি আরও বলেন, ফেসবুকে আঙ্গল দিয়ে দুই লাইন লিখে পোস্ট করলেই সাংবাদিক হওয়া যায় না, বর্তমানে ফেসবুক লেখক ও সাংবাদিকরা কিছু নেতাদের ফেসবুক নেতায় পরিণত করেছে যা জাতির জন্য খুবই লজ্জাজনক। দেশের সকল শ্রেণী পেশার মানুষ সরকারি সাহায্য সহযোগিতা পেলেও সাংবাদিকরা তাদের মহান পেশায় কোনো সহযোগিতা পাচ্ছেন না, তবে কিছু কথিত সাংবাদিকদের কারণে জাতি লজ্জিত, তারা নিউজ লিখতে পারেন না, নিউজ লেখা শিখতেও চায় না, শুধু অর্থের পিছনে সময় দিচ্ছেন, এমন কথিত সাংবাদিকদেরকে গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যগণ খুঁজে বেড়াচ্ছেন। মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য, কিন্তু সাংবাদিকও মানুষ। কাকের মাংস কাকে খাওয়ার গল্পের মতো সাংবাদিকরা অনেকেই অন্যদের বদনাম করে থাকেন, এটা জাতির জন্য লজ্জাজনক। হিংসা বিবাদ ভুলে গিয়ে সকল সাংবাদিক ঐক্যবদ্ধ ও সমন্বয় করে কাজ করুন। আবারও বলা হচ্ছে সবকিছু মিলে সাংবাদিকদের অসম্মান করার অধিকার কারো নেই। পুলিশ ও সাংবাদিক ঐক্যবদ্ধ হাতের এপিট ওপিট।